Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

‘আমি এখনও মধ্যবিত্ত’

সামনে মুক্তি অনিল কপূরের নতুন ছবির। তার আগে আনন্দ প্লাসের মুখোমুখি তিনি।পড়াশোনায় ভালই ছিলাম। তবু অভিনয় বেছে নিয়েছিলাম। কারণ সেটে আসার পরে বুঝতে পেরেছিলাম, আনন্দে থাকা কাকে বলে। এমন একটা দিনও হয়নি, যখন সেটে এসেছি, অথচ আমি ডিপ্রেসড।

অনিল কপূর।

অনিল কপূর।

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

বয়স বাড়লেও অনিল কপূরের এনার্জিতে বিন্দুমাত্র ভাটা পড়েনি। মেয়ের বিয়েতে যেমন প্রাণ খুলে নাচেন, তেমনই অভিনয় করে যাচ্ছেন একের পর এক ছবিতেও।

প্র: ৩৫ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছেন। ক্লান্ত লাগে না?

উ: না। যখন শুরু করেছিলাম, ভাবিনি যে কাজ করে এত মজা পাব। পড়াশোনায় ভালই ছিলাম। তবু অভিনয় বেছে নিয়েছিলাম। কারণ সেটে আসার পরে বুঝতে পেরেছিলাম, আনন্দে থাকা কাকে বলে। এমন একটা দিনও হয়নি, যখন সেটে এসেছি, অথচ আমি ডিপ্রেসড।

প্র: সোশ্যাল মিডিয়া এখনকার অভিনেতাদের জীবনে প্রভাব ফেলে। এ ব্যাপারে আপনার কী মত?

উ: ছবির প্রচারের জন্য আমাকেও সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় দিতে হয়। কিন্তু অভিনেতার প্রাথমিক দায়িত্বই হল, নিজের চরিত্র ভাল ভাবে ফুটিয়ে তোলা। তার জন্য দরকার মনোযোগ আর ডেডিকেশন। কাজের পরে বাকি সময়টা পুরোটাই পরিবারের জন্য। এ ছাড়া আমি তো প্রযোজকও। তাই সময়ের ব্যাপারে খুবই সিরিয়াস। সোশ্যাল মিডিয়ায় কাটানোর মতো সময় কোথায়?

প্র: ছেলে হর্ষবর্ধনের ছবি বক্স অফিসে বারবার ব্যর্থ হচ্ছে। বাবা হিসেবে আপনি চিন্তিত?

উ: আমার কেরিয়ারের শুরুতেও অন্য ধরনের ছবি করেছি। তামিল ‘ভামসা ভ্রুক্ষম’-এ শুরু। এর পরে এম এস সত্তুর ‘কহাঁ কহাঁ সে গুজ়র গয়া’। মণি রত্নমের প্রথম ছবি ‘পল্লবী অনু পল্লবী’তেও কাজ করেছি। অভিনেতাদের যে কাজ করতে ভাল লাগে, প্রথম দিকে তাঁরা তা-ই করেন। হর্ষও সে ভাবেই কেরিয়ার শুরু করতে চেয়েছে। আমি নিশ্চিত যে, পরে নিশ্চয়ই ও মসালা ফিল্মে কাজ করবে। আর মনে রাখবেন, ম্যাজিক হলে ভাগ্যও সঙ্গ দেবে।

প্র: সোনমের বিয়েতে তো চাঁদের হাট বসেছিল...

উ: আমার বাবা সুরিন্দর কপূরের খুব সুনাম ছিল ইন্ডাস্ট্রিতে। সকলেই ওঁকে শ্রদ্ধা করতেন, ভালবাসতেন। আমিও তার ছিটেফোঁটা পেয়েছি। সোনমও অল্প সময়ের মধ্যে নিজের নাম তৈরি করেছে। আমার স্ত্রী সুনীতা মিডিয়ার সামনে আসে না। ও সব সময়ে বলত, দু’জনে মিলে ছবি তুললে বাড়ি কে সামলাবে। বাড়ির যাবতীয় কাজ সুনীতাই করে। বাড়ির ট্যাক্স দেওয়া থেকে কোর্ট কেস অবধি। সুনীতাকেও সকলে খুব ভালবাসেন। তাই হয়তো...

প্র: ‘ফ্যানি খান’-এ তো বডিশেমিং নিয়ে বার্তা রয়েছে...

উ: বডিশেমিং নিয়ে আমাদের দেশে ছবি তৈরি হয়নি। ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’ হোক বা ‘এক লড়কি কো দেখা তো অ্যায়সা লগা’... সব সময়ে চেষ্টা করেছি যে আমার ছবিতে যেন বিনোদনের সঙ্গে বার্তা থাকে। রাজ কপূর সাব এই কথাটাই বলেছিলেন। আমরা বোঝাতে চেয়েছিলাম যে, সকলের মধ্যেই এক জন করে ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’ থাকেন। এখন যদিও মেয়েরা অনেক বেশি সাহসী। ‘বীরে দি ওয়েডিং’-এর সেটে গিয়ে দেখি চারপাশে শুধুই মেয়ে! আমাকে রীতিমতো খুঁজতে হয়েছিল, সেটে ছেলে আছে কি না (হেসে)!

প্র: সম্প্রতি সলমন খান মিডিয়ায় বলেছেন, অনিল কপূর নাকি এক দিন অমিতাভ বচ্চনের জায়গাটা নিতে পারেন!

উ: এই তুলনা অনেকটা অবাস্তব স্বপ্নের মতো। ১৯৮১-’৮২ সাল নাগাদ আমার হাতে কোনও কাজ ছিল না। তখন ‘শক্তি’ নামের একটা ছবিতে মাত্র কয়েকটা দৃশ্যে কাজ করেছিলাম। কারণ মনে হয়েছিল, দিলীপকুমার, অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে কাজ করার সুযোগটাই আসল। এই ছবিতে কেউ আমাকে খেয়ালও করেননি। তবে যবে থেকে মসালা ফিল্মে কাজ শুরু করলাম, তখন থেকেই অমিতজির সঙ্গে আমার তুলনা করা হয়েছে। ভাল লাগত, কিন্তু ব্যাপারটা সিরিয়াসলি নিইনি। ওঁকে ছোঁয়া অসম্ভব।

প্র: স্বপ্ন দেখেন?

উ: স্বপ্ন আমাদের সকলের দেখা উচিত। সেখানে তো আর ট্যাক্স নেই। তবে আমি বাস্তববাদী। যে মধ্যবিত্ত মানসিকতা নিয়ে আমি বড় হয়েছি, ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ শুরু করেছি, সেটা এখনও আমার মনের মধ্যে রয়ে গিয়েছে। তাই অবাস্তব স্বপ্ন দেখে সেটা পূরণ না হলে, কষ্ট পাওয়ার মতো মানুষ আমি নই।

শ্রাবন্তী চক্রবর্তী, মুম্বই

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Movie Industry Anil Kapoor Middle Class
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE