ব্রেট লি।
টেস্ট ক্রিকেটে তাঁর উইকেট সংখ্যা ৩১০। ওয়ানডে-তে ৩৮০। তবু ইন্টারভিউ-য়ের শুরুতেই ব্রেট লি বলে দিলেন যে ক্রিকেট নিয়ে বেশি কথা বলবেন না। কিন্তু বিরাট কোহালি-র নাম উঠতেই আলোচনা ঘুরে গেল অন্য দিকে...
অ্যান্টিগায় বিরাট কোহালির ডাবল সে়ঞ্চুরিটা দেখলেন!
এই ব্যস্ততার মধ্যে টিভি দেখা হয়নি। কিন্তু খোঁজ রাখছিলাম। শুনলাম নিজের কেরিয়ারের আরেকটা অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলেছে বিরাট।
স্যর ভিভিয়ান রিচার্ডস তো বিরাটে মুগ্ধ...
(মাঝপথে থামিয়ে) বিরাটের প্রত্যেকটা ইনিংস দেখা নতুন অভিজ্ঞতা। স্বীকার করতে দ্বিধা নেই, নিজের প্রতিটা শটে প্রতিপক্ষ বোলারকেও মুগ্ধ করে বিরাট। ওকে ক্রিজে দেখা একটা অন্য রকমের অনুভূতি।
ভারতীয় সমর্থকদের একটা বড় অংশ তো মনে করে, সচিনকেও ছাপিয়ে যাবেন বিরাট...
দেখুন, সচিনের সঙ্গে ওর তুলনা করাটা কঠিন। এবং বোধ হয় উচিতও নয়। ওরা দু’জনে দু’টো আলাদা প্রজন্মের ক্রিকেটার।
সচিন এমন এক সময়ে খেলেছে যখন পরিস্থিতি অন্য রকম ছিল। বিরাটের সময়ের পরিস্থিতিও আলাদা। কিন্তু যে লোকটা ২০০ টেস্ট খেলেছে তার সঙ্গে এক্ষুনি এক আসনে বিরাটকে বসানোটা একটু কঠিন। আমি এখনই কোনও তুলনায় যাব না। আগে তো ২০০ টেস্ট খেলুক।
ধরা যাক, এই মুহূর্তে ক্রিজে রয়েছেন সচিন এবং বিরাট। আর বোলিং এন্ডে আপনি। কাকে বল করাটা বেশি কঠিন?
দু’জনকেই বল করাটা কঠিন। ওদের বল করাটা একটা আলাদা চ্যা়লেঞ্জ।
আপনার সিনেমার কথায় আসি। অস্ট্রেলিয়ার স্পিডস্টার থেকে ‘আনইন্ডিয়ান’য়ের হিরো — করলেন কী করে?
(হাসি) রিটায়ারমেন্টের পর আমি এমন একটা কিছু করতে চাইছিলাম যাতে ক্রিকেটের মতোই অ্যাড্রিনালিন রাশ অনুভব করতে পারি। জীবন থেকে অ্যাড্রিনালিন কিংবা নার্ভাসনেস কমে গেলে খুব মুশকিল।
কী করব ভাবছি যখন, তখন অনুপম শর্মা ছবির প্রস্তাব নিয়ে এল। আমি এমনিতেও এ সব ব্যাপারে খুব উৎসাহী। এত তাড়াতাড়ি দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করার সুযোগ কে ছাড়ে?
কিন্তু এই রিটেকের দুনিয়ায় লড়াইটা কতটা কঠিন?
ক্যামেরার সামনে আসাটা আমার কাছে নতুন কিছু ব্যাপার নয়। কিন্তু মুশকিলটা হল অন্য জায়গায়। ক্রিকেট খেলার সময় তুমি তোমার কাজটা করে চলে এলে, বাকিটা নিয়ে ভাবার দরকার ছিল না। কিন্তু এখানে এত বার রিটেক! প্রথম দিন শ্যুটিং করার পরই বুঝে গেছিলাম যে, ভাই, ক্রিকেট আর সিনেমা কোনও দিন এক হতে পারে না। (একটু হেসে) তবে সব ঠিকঠাক সামলে তো দিলাম! আর একটা কথা বলি?
বলুন...
আমার বরাবরই অভিনয় করার খুব শখ ছিল, এবং প্রথম ছবি যখন রিলিজ করছে, আমি এখানেও একটা লম্বা স্পেল করতে চাই।
আচ্ছা, তা হলে এর পর হলিউড না বলিউড?
হ্যাঁ, এর পর লক্ষ্য বলিউড। দর্শকদের যদি ‘আনইন্ডিয়ান’য়ে আমার অভিনয় পছন্দ হয়, তা হলে বলিউডে ঢোকাটা আরও সহজ হবে। বলিউডে কাজ করাটা একটা বড় স্বপ্ন। আরও একটা কথা আছে...
‘আনইন্ডিয়ান’ ছবির এক দৃশ্যে তন্নিষ্ঠা চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ব্রেট লি
কী?
শাহরুখ খান আর প্রীতি জিন্টা-র সঙ্গে কাজ করতে চাই। বলিউডে ওরা আমার প্রিয় অভিনেতা-অভিনেত্রী। এবং অসম্ভব ভাল বন্ধু।
প্রীতি শুধুই ভাল বন্ধু? লোকে তো বলে আপনার নাকি ওঁর ওপর ক্রাশ...
আমার কোনও ক্রাশ ছিল না, নেই। এর চেয়ে বেশি মন্তব্য করব না।
আচ্ছা, তবে ছবির প্রিমিয়ারে তো ওঁরা থাকছেন...
হ্যাঁ, আমি ইতিমধ্যেই শাহরুখ আর প্রীতিকে প্রিমিয়ারের ইনভিটেশন পাঠিয়েছি। ওরা আমার দীর্ঘদিনের বন্ধু। শুধু ওরা নয়, কলকাতা নাইট রাইডার্সের সতীর্থদেরও ইনভাইট করছি উনিশে অগস্ট প্রিমিয়ারে আসার জন্য। এই তো সে দিন শাহরুখের সঙ্গে কথা হল।
কী বললেন শাহরুখ?
সেটা না হয় এখন নাই বললাম। পুরনো বন্ধুদের সব কথা প্রকাশ্যে বলতে হয় নাকি!
ইউনিটের লোকজন তো বলছে, তন্নিষ্ঠা চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে আপনার কেমিস্ট্রিটা নাকি দারুণ জমেছে...
তন্নিষ্ঠা দারুণ অভিনেত্রী, এবং খুবই ট্যালেন্টেড। ওর মতো ডাউন টু আর্থ অভিনেত্রী আমি খুব বেশি দেখিনি। প্রথম দিন থেকে আমরা ভাল বন্ধু হয়ে গেছিলাম।
কিন্তু ছবির চুম্বন দৃশ্য নিয়ে তো ইতিমধ্যেই সেন্সর বোর্ড আপত্তি তুলেছে...
এ ব্যাপারে আমি নাই বা কিছু বললাম। ছবির পরিচালক অনুপম ভারতীয়, তন্নিষ্ঠা ভারতীয়, তা সত্ত্বেও তাদের তো চুম্বন দৃশ্য নিয়ে আপত্তি হয়নি।
নতুন ইনিংসে নতুন কী শিখলেন?
ধৈর্য রাখাটা জরুরি। এ ক’দিনে প্রচুর শহরে ঘুরেছি। প্রচুর লোকের সঙ্গে কথা হয়েছে। কেউ ঘণ্টার পর ঘণ্টা গল্প করেছে, তো কেউ সেলফি তুলতে চেয়েছে। এগুলো সামলাতে পারাটা খুব জরুরি।
আর ক্যামেরার মুখোমুখি হওয়ার সময়, নিজের বুদ্ধিটায় শান দেওয়া দরকার। আমার মাঝে মাঝে মনে হচ্ছিল গ্যাবা কিংবা ওয়াকাতে লাল কুকাবুরা বলটা হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি, আর ভাবছি কী ভাবে আরও একটা উইকেট নেওয়া যায়। এত দিন ক্রিকেট মাঠে যা শিখেছি সেগুলো এখানে কাজে লাগালাম।
আপনি তো আজকাল ঝরঝরে হিন্দি বলছেন...
তাই! মুম্বইয়ের মতো জায়গা খুব কম আছে। ভারতের সব জায়গার আলাদা আলাদা চার্ম, সেটা আমাকে খুব টানে।
শাহরুখ আপনার বন্ধু। সিনেমায় নামার আগে বন্ধুর কাছ থেকে কোনও টিপস নিয়েছিলেন?
আমার অ্যাক্টিং কোচ আমাকে একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছিলেন—কোনও দিন কাউকে নকল করতে যেও না। দেখবে এক দিন তোমার অ্যাক্টিং স্টাইলটাই লোকে অনুকরণ করবে।
কে বলতে পারে, হয়তো বলিউডের লোকজন কোনও দিন আমার স্টাইল নকল করবে (হাসি)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy