মিমির ছবি: সুপ্রতিম চট্টোপাধ্যায়
প্র: আপনাকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না, সহ-অভিনেতারা বলছেন ‘একটু দেখবেন দিদি’, সর্বোপরি আপনি আর শুধুই নায়িকা নন...
উ: (হেসে) মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে সব কিছুই একটু ঘেঁটে গিয়েছে। ফোনে সাড়ে তিনশো-চারশো মিসড কল! আর আবীরদা তো সব সময়েই মজা করে।
প্র: নির্বাচনে দাঁড়াতে হবে শোনার পরে প্রথম প্রতিক্রিয়া কী ছিল?
উ: হাত পা ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল! ঘোষণার পরে যে ভাবে ফোন আসছিল, তাতে আমি এবং আমার ফোন দুই-ই নার্ভাস (হাসি)!
প্র: নাম ঘোষণার পর থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় আর সক্রিয় নন। মানসিক ভাবে কি প্রস্তুত?
উ: ইনস্টাগ্রাম সত্যিই মিস করছি। গত দু’দিন সময় পাইনি। বাড়ি গিয়ে শাওয়ার নিয়ে নিশ্চিন্তে বসে একটা ছবি পোস্ট করে বলতে চাই, অ্যাই অ্যাম ব্যাক... (হাসি)। আসলে এখনও ঠিকমতো মানিয়ে নিতে পারিনি। তবে এটুকু জানি লোকের জন্য কাজ করতে হবে। তার জন্য আমি তৈরি।
প্র: প্রথম দিনই তো প্রচারে বেরিয়ে পড়েছিলেন।
উ: ওই দিন কিছু না ভেবেই নেমে পড়েছিলাম। অরূপদা (বিশ্বাস) পাশে ছিলেন। এ বার প্রস্তুতি নিয়ে নামব। ‘মন জানে না’র রিলিজ়, ভোটের প্রচার সব মিলিয়ে অনেক জিনিস ব্যালান্স করতে হচ্ছে।
প্র: বিরসা দাশগুপ্তর ছবির শুটিং সামনে। আপনার সময় নিয়ে সমস্যা হচ্ছে?
উ: একটু ডেট অ্যাডজাস্ট করতে হবে। ওটা হয়ে যাবে।
প্র: কেরিয়ারের এই পর্যায়ে রাজনীতিতে নামার ঝুঁকি কেন নিলেন?
উ: আমি সব কাজই মন-প্রাণ দিয়ে করি। জীবনের নতুন একটা অধ্যায় লিখতে চলেছি। সেখানে কোনও খামতি রাখব না। নায়িকা হলে কি মানুষের জন্য কাজ করা যায় না? দুটো সত্তার মধ্যে বিরোধ নেই তো।
প্র: মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে নুসরতের সঙ্গে কী নিয়ে কথা বলছিলেন?
উ: ওখানে তো বেশি লোককে চিনতাম না। নুসরতের সঙ্গেই কথা বলছিলাম। ও বোধহয় আমার চেয়ে বেশি মানসিক ভাবে তৈরি ছিল। আমার তো একেবারে হঠাৎ করে...
প্র: এটা হয়, কিচ্ছু জানতেন না?
উ: আমি জানি, এখন যাই বলি কেউ বিশ্বাস করবে না! আপনারা যখন জেনেছেন, তার সামান্য আগেই আমি জেনেছি।
প্র: নুসরতের সঙ্গে আপনার প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে তো আবার চর্চা শুরু হবে।
উ: ও গড! এই দিকটা আগে মাথায় আসেনি! মাঝে মধ্যেই দেখি লেখা হয়, ভিতরের সূত্রের খবর, মিমি আর নুসরতের মধ্যে ঝামেলা। আজ পর্যন্ত এটা বুঝতে পারলাম না, আমার আর নুসরতের মধ্যে ভিতরের সূত্রটা কোথা থেকে এল! যাক গে, এ নিয়ে আর মাথা ঘামাই না।
প্র: মাঝের যে সময়টায় আপনি কাজ করেননি, তার কারণ হিসেবেও কিন্তু নুসরতের নামই উঠে আসে।
উ: এটাও অদ্ভুত লাগে! ইচ্ছে করেই একটা বছর ব্রেক নিয়েছিলাম। এতটাই শরীর খারাপ হয়েছিল যে, ‘পরি’ ছেড়ে দিয়েছিলাম। তখন নুসরত নিয়মিত আমার খোঁজ রেখেছিল। এসভিএফ-এর সঙ্গে আমার সম্পর্ক এতটাই সহজ যে, কোনও কাজ করতে চাইলে সেটা সরাসরি বলতে পারি।
প্র: সেই সময়েই কি বৌদ্ধধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হন?
উ: আরও আগে থেকেই। তখন আমি মানসিক ভাবেও বিপর্যস্ত। প্রথম দিকে বিশ্বাস করিনি। কিন্তু শুরু করার পরে ধীরে ধীরে ফল পেতে শুরু করলাম। কোনও রকম নেগেটিভিটি এখন আমাকে স্পর্শ করতে পারে না।
প্র: ‘মন জানে না’ করার কথা ছিল নুসরতের। সেখানে আপনি এলেন।
উ: আমাকে অফার করা হয়েছিল। শগুফতার চিত্রনাট্য ভাল লেগেছিল।
প্র: আসল প্রশ্নটা তো এড়িয়ে গেলেন। রাজনীতিতে এসে সাবধানী হয়ে গিয়েছেন?
উ: আর সাবধানী... চার দিকে যা ট্রোলিং হচ্ছে। আমি নিজে কিছু না দেখলেও শুনছি। সব ক্রিয়ারই বিপরীত প্রতিক্রিয়া থাকে।
প্র: এখন মা-বাবার কী প্রতিক্রিয়া?
উ: মা আপাতত জলপাইগুড়ি সামলাচ্ছে। সারা দিন ফোনে আমাদের যত আত্মীয় রয়েছে সকলের সঙ্গে কথা বলে যাচ্ছে।
প্র: বলা হচ্ছে, যাদবপুর শক্ত ঘাঁটি। সেখানে রাজনীতিতে অনভিজ্ঞ কারও পক্ষে জেতা মুশকিল...
উ: এটা যিনি ঠিক করেছেন, তাঁর রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা নিয়ে কারও সন্দেহ নেই। আর রাজনীতি না জানলেও মানুষের জন্য কাজ করা যায়। আমার মামারা সক্রিয় রাজনীতিতে রয়েছেন। সকলেই তৃণমূল কংগ্রেস। তাই আমি জানি, মানুষের জন্য কাজ করাটাই আসল।
প্র: দেবের কাছ থেকে টিপস নেবেন?
উ: নিতে হবে। সিনিয়র বলে কথা! কী করে সব সামলাচ্ছে, তার একটা ক্লাস নিতে হবে।
প্র: শ্রীকান্ত মোহতার না থাকা প্রভাব ফেলেছে?
উ: ইমোশনালি তো ফেলেছে। অনেক বিষয়েই তো নির্ভর করতাম।
প্র: নিজের ইচ্ছেগুলো লিখে রাখার অভ্যেস রয়েছে আপনার। রাজনীতিতে আসার কথাও কি সেখানে ছিল?
উ: (হেসে) না ছিল না।
প্র: আপনার ইচ্ছেপূরণের ডায়েরি প্রকাশ্যে এলে কী হবে বলুন তো?
উ: (জোরে হাসতে শুরু করে দিলেন) ওটা আপনি পাবেন না। (একটু থেমে) এই লিখে রাখার অভ্যেস আমার অনেক পুরনো। বার বার লিখতাম, রেখে দিতাম। আবার লিখতে শুরু করব...
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy