Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

এক বার খেয়ে দেখুন সুখের বড়ি

সিদ্ধার্থ (ঋত্বিক) মেডিক্যালের ব্রিলিয়ান্ট ছাত্র। কিন্তু আর্থিক টানাটানিতে ঝকঝকে কেরিয়ার মুখ থুবড়ে পড়ে। তার মিষ্টির দোকানে ক্রেতার চেয়ে মাছির ভিড় বেশি।

অন্বেষা দত্ত
শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

সুখের অসুখ আজ মহামারী। সেই কবে যেন নচিকেতা গেয়েছিলেন! আসল সুখ কোথায়? আনন্দে থাকতে চাইলেও আর থাকা হচ্ছে কোথায়। দুঃখ তাড়ানোর ওষুধ বাতলেছেন মৈনাক ভৌমিক। বলেছেন, তাঁর ছবি সুখে থাকার সহজ পাঠ। সহজই বটে। অনলাইনে খোঁজ করুন। সত্যি কৌটো কৌটো ‘হ্যাপিপিল’ দেখতে পাবেন। ভারতে বিক্রি হয় কি না জানা নেই, বিদেশে রাস্তা খোলা। যে ওষুধের প্যাকেটে লেখা সেটি ওজন কমাতে পারে, উৎসাহ বাড়াতে পারে। মস্তিষ্কের নানাবিধ ছক উল্টেপাল্টে সুখ এনে দেবে বড়ি! মৈনাকের গপ্পেও তাই। এই অসুখের সময়ে আপনাকে কেউ এই বিশ্বাস দেবে যে, আপনি ভাল আছেন।

সিদ্ধার্থ (ঋত্বিক) মেডিক্যালের ব্রিলিয়ান্ট ছাত্র। কিন্তু আর্থিক টানাটানিতে ঝকঝকে কেরিয়ার মুখ থুবড়ে পড়ে। তার মিষ্টির দোকানে ক্রেতার চেয়ে মাছির ভিড় বেশি। বাড়িতে ডিপ্রেশনে ভোগা মা আর কালো বোন রিনি (পার্নো) যার জীবনে দু’টিই লক্ষ্য, ফর্সা হওয়া আর বিয়ে করা। সিদ্ধার্থের সঙ্গী বলতে শুধু পচাদা (মীর)। জীবনের সঙ্কট কাটাতে সুখের খোঁজে নামে সিদ্ধার্থ। তবে নিজের নয়, আশপাশের মানুষগুলোর জন্য আনন্দ খোঁজে সে। ছোটখাটো ল্যাবে পিলও তৈরি করে ফেলে মেডিক্যাল ছাত্র, যার ফর্মুলা কারও জানা নেই।

যাত্রা শুরু হয় সুখের বড়ির। নানা সমস্যায় জেরবার সাংবাদিক ইন্দ্রাণীও (সোহিনী) এই বড়িতে উপকার পেয়ে তা নিয়ে কাগজে লেখা শুরু করে। হ্যাপিপিলের চড়চড় করে জনপ্রিয়তা বাড়ে। শেষের দিকে ‘এমন যদি হতো’ গল্পের ছবিতে একটু থ্রিলারও ছুঁয়ে যায়! ফাঁক গলে নোটবন্দিও।

হ্যাপিপিল

পরিচালনা: মৈনাক ভৌমিক

অভিনয়: ঋত্বিক, পার্নো, সোহিনী, মীর

৬/১০

ভাবনা ভাল। তবু মাল্টিপ্লেক্সে হাতে গোনা দর্শক। মৈনাকের গল্প দর্শককুলকে কতটা ‘হ্যাপি’ করবে জানা নেই। তবে মন খারাপের সময়ে তিনি যে বিশ্বাসের গল্প বলেছেন, সেটা মন ছুঁতে পারে। হ্যাপিপিলের কারসাজি সেটাই। সেই মোহিত চট্টোপাধ্যায়ের ‘সুন্দর’ নাটকের মতো যেন। যেখানে সবাই সবাইকে বলছে, সুন্দর। ‘সুন্দর’-এর ধরা বাঁধা ধারণায় যে ফিট করে না, তাকে এই বিশ্বাস-ভরসা দিয়ে বলা হচ্ছে, তোমার হাসি, কথা বলা, মন সুন্দর। বাহ্যিক সৌন্দর্যটা যে সব নয়, সেটা বোঝাতে খুব সহজ বার্তা ছিল নাটকে। ‘হ্যাপিপিল’ও তাই। হতাশায় ডুবে থাকা প্রত্যেকে যখন প্রশ্ন তোলে, ‘আমার সঙ্গেই কেন এমন হল’, তাদের একটু আরামের পথ বাতলানো। ব়ড়িটা একটা মাধ্যম মাত্র। বাকিটা বিশ্বাস।

ঋত্বিক খুবই বিশ্বাসযোগ্য। ডিগ্ল্যাম চরিত্রে পার্নোও ভাল। চেনা কমেডিতে পুরোপুরি না থেকেও স্বতঃস্ফূর্ত মীর। যতটা সুযোগ পেয়েছেন কাজে
লাগিয়েছেন সোহিনী।

মৈনাকের ছবিতে সাধারণত গানগুলোও মনে লেগে থাকে। এ ছবিও তাই। সবচেয়ে বড় কথা, গল্পের গরু গাছে চড়েনি। তবে সাদামাঠা রিনির শেষের দিকে বদলে যাওয়া চশমার ফ্রেম ও চুলের স্টাইল চোখে লাগে।

তবে ‘হ্যাপি ফিল’-এর জন্য একটা বার ছবিটা দেখতেই পারেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mainak Bhaumik Happy Pill
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE