Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

নোটেশন

আনন্দplus দফতরে ‘নোটেশন’ বিভাগে অজস্র ইমেল আর কিছু গানের ভিডিয়ো এসেছে। আজ উত্তর দিয়েছেন শ্রাবণী সেন ও রূপঙ্করআমি অপেশাদার ক্ল্যাসিকাল গাইয়ে। গান গাইবার সময় দশ সেকেন্ডের বেশি দম রাখতে পারি না। কী করে দম রাখা যায়, যদি বলেন।

শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৬ ০০:০০
Share: Save:

আমি অপেশাদার ক্ল্যাসিকাল গাইয়ে। গান গাইবার সময় দশ সেকেন্ডের বেশি দম রাখতে পারি না। কী করে দম রাখা যায়, যদি বলেন।

ভাস্বতী ভট্টাচার্য, সল্ট লেক

রূপঙ্কর: দম বাড়ানোর জন্য স্ট্যান্ডিং নোট প্র্যাকটিস করতে হবে। ধরুন ‘সা’—রেওয়াজ করার সময় প্রথমে পাঁচ সেকেন্ড, তার পর এক মিনিট থাকো এ ভাবে একই নোটে একটু একটু করে সময় বাড়াতে হবে।

কুড়ি বছর ধরে গান করছি। বাংলা ছবিতে আধুনিক বাংলা গান বা রবীন্দ্রসঙ্গীত গাওয়ার সময় গায়কগায়িকারা গানের ধরনটা বদলে নেন কেন? এই বদলে নেওয়াটাকে কি কমার্শিয়াল গান বলে? নয়তো ‘শ্বেত পাথরের থালা’য় ‘আমার প্রাণের পরে চলে গেল কে’ গানটা কেন অন্য রকম শুনতে লাগে।

সায়নী গুপ্ত, বেহালা

রূপঙ্কর: কমার্শিয়াল গান বলে কিছু হয় না। তবে সিনেমায় গানের ক্ষেত্রে সব সময় সিচুয়েশন বুঝে গান গাইতে হয়। যেমন ধরুন সত্যজিৎ রায়ের ‘চারুলতায়’ কিশোরকুমারের উদাত্ত কণ্ঠে ‘আমি চিনি গো চিনি’ গানে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় মজা করে মাধবী মুখোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে সুর দিয়ে বলেছিলেন ‘ও বউ ঠাকুরানি’। এই অংশটা অমলের উচ্ছ্বাস বোঝাবার জন্যই পরিচালক ব্যবহার করেছিলেন। রবীন্দ্রসঙ্গীতের মধ্যে এই ছোট্ট ইনোভেশনটা অসাধারণ। আমিও ‘দত্ত ভার্সেস দত্ত’ ছবিতে ‘ভালবেসে সখি’ গানটা সোমলতার সঙ্গে ডুয়েট গেয়েছিলাম। সত্তর দশকে যে ভাবে ছাদে নায়ক নায়িকা প্রেম করতে করতে ন্যাকামি করে গান গাইত আমরা সে ভাবেই ছবির জন্য গেয়েছি। এই গান কখনও সুচিত্রা মিত্র বা কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো তো হবে না।

মঞ্চে প্রচুর অনুষ্ঠান করি। বয়স ৪০। সম্প্রতি আমার গলায় ট্রেমেলো আসছে, মানে গানের শেষ লাইনে গলাটা কেঁপে যাচ্ছে। এই গলা কাঁপা কি ভাল?

সৌমিত্র বসাক, আগরতলা

রূপঙ্কর: বাংলা গানে বুঝে শুনে ট্রেমেলো ব্যবহার করতে হবে। তবে পাশ্চাত্য সঙ্গীতে ট্রেমেলোর কদর আছে। প্যাট বুন বা এলভিস প্রেসলি-র কণ্ঠ ট্রেমেলোর জন্যই বিখ্যাত। তালাত মামুদের ‘জ্বলতে হ্যায় জিসকে লিয়ে’’ ট্রেমেলোর মাধুর্য ছাড়া কি কেউ ভাবতে পারে? আমার গলাতেও ট্রেমেলো আছে। কিন্তু আমি এখন অনেক অভ্যেস করে সেটা প্রয়োজন মতো ব্যবহার করতে পারি। যেমন সুফি গানে ট্রেমেলো একেবারেই চলে না। স্ট্যান্ডিং নোট অভ্যেস করলে ট্রেমেলোকে নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। মনে রাখবেন বাংলা গানে ট্রেমেলো-র তেমন গুরুত্ব নেই।

গান গাইতে খুব ভালবাসি। কিন্তু গানের শিক্ষক পাচ্ছি না। বন্ধুরা বলেছে আপনার গানের গলা খুব ভাল। আমি শুধু হিন্দি গানই গাই। গানের লয় কেমন হবে তা শিখতে চাই। আপনাকে আমার দুটো ভয়েস রেকর্ড পাঠালাম। আমাকে যদি কিছু পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করেন তো ভাল হয়।

সাবির হুসেন

শ্রাবণী: তোমার গলা শুনলাম। আমার তো বেশ ভালই লাগল। অনেকে না শিখেই অনেক সময় ভাল গান করেন। এক্ষুনি একটা উদাহরণ দিতে পারি। কিশোরকুমার। তবে জানতে চাই তুমি কোথায় থাকো যে গান শেখার শিক্ষক পাচ্ছ না। একটু খোঁজ করো, নিশ্চয়ই পাবে। আমার মনে হয় তুমি যদি কোনও গুরুর কাছে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের তালিম নাও, যে কোনও গান অনায়াসে গাইতে পারবে।

আমি হিউস্টনে থাকি। আমার বয়স ১০। ভায়োলিন আর পিয়ানো দুটোই বাজাই। এই দুই বাদ্যযন্ত্রে আমি রবীন্দ্র সঙ্গীত ও অন্যান্য বাংলা গান বাজাতে চাই। কিন্তু এই সব গানের স্টাফ নোটেশন আমার কাছে নেই। কিছু কিছু গান আমি শুনে শুনে বাজাতে শিখেছি। কিন্তু কোনও গায়কের সঙ্গে ভায়োলিন বা পিয়ানো বাজালে স্কেলে মেলে না। কী করে স্কেল মিলবে যদি বলেন। তা ছাড়া ভায়োলিনে ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ’ স্টাফ নোট যদি পাঠান ভাল হয়।

অরিভ। হিউস্টন

শ্রাবণী: প্রথমেই বলি অরিভ কথাটা রবীন্দ্রসঙ্গীত, রবীন্দ্র সঙ্গীত নয়। তুমি দুটো যন্ত্র বাজাতে পারো, সেটা খুবই আনন্দের। হ্যাঁ স্টাফ নোটেশনে রবীন্দ্রসঙ্গীতের সুর পাওয়া যায়। তবে খুবই কম। ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ’ গানটা নিশ্চয়ই শুনেছ। আর একটু ধরিয়ে দিই। অমিতাভ বচ্চনও গানটা গেয়েছেন। এই গানের স্টাফ নোটেশন যদি পাই তোমায় পাঠাব। কোনও গায়কের গানের সঙ্গে তুমি ভায়োলিন বাজিয়ে পাঠাও। আমরা দেখতে পারি তুমি ঠিক স্কেলটা বুঝতে পারছ কি না।

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় মজা করে মাধবী মুখোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে সুর দিয়ে বলেছিলেন ‘ও বউ ঠাকুরানি’। রবীন্দ্রসঙ্গীতের মধ্যে এই ছোট্ট ইনোভেশনটা অসাধারণ

একটা রেকর্ডিং পাঠালাম। গানটার স্কেলটা কি ঠিক আছে? কী কী নেগেটিভ সাইড আছে রেকর্ডিংটায়? আমার গানের সমালোচনা কী ভাবে সামাল দেব? এই রেকর্ডিংয়ের মাধ্যমে কি রিয়্যালিটি শো-য়ে অডিশন দেওয়া সম্ভব?

সংযুক্তা রায়, কোচবিহার

শ্রাবণী: সংযুক্তা, তোমার গান শুনলাম। গলায় সুন্দর সুর আছে। তবে গান গাইবার সময় একটা সাপোর্ট, যেমন হারমোনিয়ামের সা পা ধরে গাইতে চেষ্টা করো। গানটার মধ্যে অন্তরাতে যাবার সময় তোমার স্কেলটা বদলে গিয়েছে। কোনও গুরুর কাছে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের তালিম নাও। এই সমস্যার সমাধান হবে। রিয়্যালিটি শো–তে গাইবার জন্য তোমাকে আরও অনেক তৈরি হতে হবে। সমালোচনাকে সহজ ভাবে নেওয়ার চেষ্টা করো তাতে তোমার অনেক ভাল হবে।

বয়স বারো বছর দশ মাস। বীরভূমের কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে ক্লাস এইটে পড়ি। ঠিক করেছি ভবিষ্যতে গানই হবে আমার পেশা। বর্তমানে গান শিখছি। আমি জানতে চাই নোটেশন বিভাগের চার শিল্পীর কারও কাছে কি আমি গান শিখতে পারি? ওঁদের আয়োজিত কোনও ওয়ার্কশপে কি যোগ দিতে পারি? আমার গানের দুটো ক্লিপিং পাঠালাম।

সোহম ভট্টাচার্য, সিউড়ি

শ্রাবণী: কনগ্র্যাচুলেশনস। যে কোনও সঙ্গীত অ্যাকাডেমিতে ভর্তি হয়ে যাও। তুমি একটু লক্ষ রাখলেই খবর পাবে। তোমার গান শুনে বুঝলাম তোমাকে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের তালিম নিতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rupankar Srabani Sen
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE