Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

দর্শককে মজিয়ে রাখার ধুন

বলিউড আর যাই পারুক, থ্রিলার বানাতে পারে না। ব্যতিক্রম একটি মাত্র লোক। শ্রীরাম রাঘবন। ‘এক হাসিনা থি’ বা ‘জনি গদ্দার’-এর যোগ্য উত্তরসূরি ‘অন্ধাধুন’। হয়তো কোনও কোনও জায়গায় আগের ছবিগুলোর চেয়েও ভাল।

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ
শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

বলিউড আর যাই পারুক, থ্রিলার বানাতে পারে না। ব্যতিক্রম একটি মাত্র লোক। শ্রীরাম রাঘবন। ‘এক হাসিনা থি’ বা ‘জনি গদ্দার’-এর যোগ্য উত্তরসূরি ‘অন্ধাধুন’। হয়তো কোনও কোনও জায়গায় আগের ছবিগুলোর চেয়েও ভাল।

কারণ শুধু মাত্র থ্রিলার নয় ‘অন্ধাধুন’। থ্রিলার মনেই গা ছমছমে পরিবেশ, সাইকোলজিক্যাল ব্যাপার-স্যাপার হতে হবে এমন তো নয়। রাঘবনের ছবিতে রহস্যের জালের ফাঁক ফোকরে হাসির খোরাক লুকিয়ে। থ্রিলার এবং ডার্ক কমেডি একসঙ্গে মেশানো খুব সহজ নয়, অথচ সেই কাজটা অনায়াসে করে ফেলেছেন পরিচালক।

এ ছবির গল্প বলতে বসা বৃথা। পাহাড়ে গাড়ি চালাতে গেলে আচমকা যেমন সূক্ষ্ম বাঁক আসে, এ কাহিনিতেও তেমনই... কোনও বাঁকে রহস্য, কোনও বাঁকে মজা।

আকাশ (আয়ুষ্মান খুরানা) পিয়ানো বাদক। চোখে দেখতে পায়, কী পায় না, তা নিয়ে ছবি জুড়ে নানা রকম ধন্দ! রাধিকা আপ্টের (সোফি) সঙ্গে তার আলাপ ও পরিচয় একটা মিষ্টি সম্ভাবনার দিকে যেতে পারত। তবে ওই পর্যন্তই, রোম্যান্টিক দিকে ঘেঁষেননি রাঘবন। প্রথমার্ধেই প্রমোদ সিংহ (অনিল ধওয়ন) নামে এক প্রবীণ অভিনেতা খুন হয়। যার স্ত্রী সিমি (তব্বু)। ঘটনাচক্রে সেই অকুস্থলে হাজির হয় আকাশ। তার পর থেকে গল্প ভুলভুলাইয়ায় ঢুকে পড়ে। কিন্তু তাতে দর্শক দিগ্‌ভ্রান্ত হন না। উল্টে মজা পেতে থাকেন।

অন্ধাধুন পরিচালনা: শ্রীরাম রাঘবন অভিনয়: আয়ুষ্মান খুরানা, তব্বু, রাধিকা আপ্টে ৭/১০

ছোট ছোট অনেক চরিত্রই আছে। গল্পে তারা সকলেই মূল্যবান। কিন্তু ছবির দুই স্তম্ভ আয়ুষ্মান এবং তব্বু। গল্পের শেষে তব্বুকে ‘লেডি ম্যাকবেথ’ বলে উল্লেখ করা হয়। যদিও তার চরিত্রের সঙ্গে গার্ট্রুডের মিল অনেক বেশি। কী অনায়াসে সাংঘাতিক সব কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলে সে! অথচ বিন্দুমাত্র অনুতাপ নেই।

ছবির দ্বিতীয়ার্ধে অনেক কিছু পরপর ঘটতে থাকে, কিছু জিনিস অসংলগ্ন লাগতে পারে। আর অঙ্গ পাচারকারীরা এত অ্যামেচার হয় কি? এগুলোয় অবশ্য কিছু আসে যায় না। দর্শককে মজিয়ে রাখার অস্ত্র ভাল মতোই জানেন রাঘবন। কোনও জায়গা অতিরিক্ত মনে হবে না। আয়ুষ্মান দিনে দিনে অবাক করছেন। অভিনয়হীন অভিনয়টা তিনি বেশ ভাল পারেন। ভাগ্যিস, এ ছবিতে তাঁর আগের কয়েকটা ছবির মতো বড় কোনও তারকা নেওয়ার ভুলটা রাঘবন করেননি। তব্বু হিরোইন থাকার সময়ে যে সব চরিত্র পেয়েছেন, এখন তার চেয়ে অনেক ভাল প্রস্তাব পাচ্ছেন। আয়ুষ্মান যেহেতু পিয়ানো বাদক, তাই ছবিতে সঙ্গীতের একটা গুরত্ব আছে। অমিত ত্রিবেদীর সুর আর জয়দীপ সাহানির কলম সেই কাজটা যথাযথ করেছে। সত্তরের দশকের মিউজ়িকের একটা রেফারেন্সও আছে।

কে খুন হল, কারা কী ভাবে খুন করল সবটা দেখিয়ে দেওয়া হল। কিছু জায়গা হয়তো আগাম আঁচ করাও যাচ্ছে। কিন্তু তা-ও দর্শক চোখের পলক ফেলতে পারলেন না। এখানেই ভাল গল্প এবং পরিচালকের মুনশিয়ানা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tabu andhadhun Ayushman Khurrana
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE