Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বাজারে লাভ কম, ক্ষতির অঙ্কই বেশি

রাধিকা আপ্টে অভিনয়ের দিক দিয়ে যতটাই নিখুঁত, নাচের দৃশ্যে চিত্রাঙ্গদা সিংহের পাশে ঠিক ততটাই বেমানান। নিদেনপক্ষে টিকে থাকতে গেলে কিছু অন্তত দরকার— অভিনয়, চেহারা, নাচ।

বা‌জ়ার-এর একটি দৃশ্যে সেফ আলি খান।

বা‌জ়ার-এর একটি দৃশ্যে সেফ আলি খান।

রূম্পা দাস
শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৮ ০০:০৩
Share: Save:

বাজ়ার

পরিচালনা: গৌরব কে চাওলা

অভিনয়: সেফ, রোহন,
রাধিকা, চিত্রাঙ্গদা

৩.৫/১০

দামি হাতঘড়ি, সুন্দরী নায়িকার কোমরে হাত, ইয়টে বিলাসযাপন, অঙ্কের ওঠানামা আর শেয়ার বাজারের গল্প... এ সবই চেনা ছক। তা হলে নতুন কী? কিছুই না। আর তাই বাজারের লাভের ওঠা-নামার গল্পে ডাহা মুখ থুবড়ে পড়ল ‘বাজ়ার’।

আসলে মার্টিন স্করসেসির ওয়াল স্ট্রিট আমাদের এতটাই বুঁদ করে রেখেছে, সেখান থেকে বেরোতে গেলে দরকার ছিল কিছু নতুনত্বের। সুরাত থেকে মুম্বই এসেছিল শকুন কোঠারি (সেফ আলি খান)। রোজকার অভাবের জীবন আর ষাট টাকার থালি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য ব্যবসায় নেমেছিল। এই টাকা শুধু অঙ্কে আর খতিয়ানে চলে, চোখে দেখা যায় না। অন্য দিকে ইলাহাবাদ থেকে আসা রেজ়ওয়ান আহমেদের গল্পটাও একই রকম। পার্থক্য শুধু দৃষ্টিভঙ্গিতে। শকুন লাভের অঙ্ক দেখলে, রেজ়ওয়ান দেখে অনুভূতি। শেষ অবধি এই লাভ বনাম অনুভূতির দ্বন্দ্ব দেখাতে গিয়ে পরিচালক গৌরব কে চাওলা খেলেছেন দর্শকের অনুভূতি নিয়ে। না হলে দালাল স্ট্রিটে একাধিপত্য জাহির করা নেকড়ে শকুনের দম্ভ-চাল, লাভ-ক্ষতির হিসেবে উত্তেজনার মুহূর্ত তৈরি হতে গিয়েও তাল পাকিয়ে যায় কেন?

রাধিকা আপ্টে অভিনয়ের দিক দিয়ে যতটাই নিখুঁত, নাচের দৃশ্যে চিত্রাঙ্গদা সিংহের পাশে ঠিক ততটাই বেমানান। নিদেনপক্ষে টিকে থাকতে গেলে কিছু অন্তত দরকার— অভিনয়, চেহারা, নাচ। কিন্তু রাগ, হতাশা, ঘৃণা, ভালবাসা কিংবা আস্ফালন... কোনও দৃশ্যেই রোহন মেহরার মুখের মানচিত্র বিন্দুমাত্র বদলায় না। দু’ঘণ্টার বেশি দীর্ঘ এই ছবি দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে পড়লে আপনাকে একমাত্র জাগিয়ে দিতে পারেন সেফ। অবলীলায় গুজরাতি বলে যাওয়া চরিত্রটা লোভ আর ব্যবসা ছাড়া কিছুই জানে না। তবে জানে কিছু তিরছোড়া সংলাপ। তাই ছবির উসেইন বোল্ট কিন্তু বলিউডের ম্যারাথনে ছোটা এই অভিনেতাই। কিন্তু তা বলে কি একটা গোটা ছবির দায় একা সেফের ঘাড়ে রেখে চালানো যায়?

১৩৭ মিনিটের এই দীর্ঘ ছবিতে চার-পাঁচখানা গান ঠেলে ঢুকিয়ে দীর্ঘতর করে তোলার মানে ছিল কি? যে সমস্ত ছোটখাটো দৃশ্য সহজেই অনুমেয়, সেগুলোকে বারবার ফ্ল্যাশব্যাকে মনে করিয়ে দেওয়ার কারণই বা কী? যে ছবিতে পরিচালক দর্শকের স্মৃতিশক্তি নিয়েই সন্দিহান, সেই ছবিকেই দর্শক আদৌ কতটা মনে রাখবে, সেটাও সহজেই আন্দাজ করে নিতে পারেন!

ছবির শেষভাগে রাধিকার মুখে একটা সংলাপ ছিল— ‘‘আমি চাই মানুষজন আত্মহত্যার জন্য নয়, উঁচু ছাদের উপরে দাঁড়াক স্বপ্ন দেখার জন্য, ওড়়ার জন্য।’’ এই ছবির শেষে দর্শক আত্মহত্যা না করুন, স্টক মার্কেটের উপরে তৈরি হওয়া পরবর্তী হিন্দি ছবি দেখার আগে অন্তত তিন বার ভাববেন!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE