শিলাজিৎ। ছবি: সুদীপ্ত চন্দ
প্র: অনেক দিন পর নতুন অ্যালবাম করছেন শোনা যাচ্ছে...
উ: হ্যাঁ। ‘এক্স= ম্যাজিক’ তার নাম। প্রথমে ভেবেছিলাম, ‘এক্স= প্রেম’-এর পর এক্স নিয়ে একটা সিরিজ় বানাব। তার পর বয়স বেড়ে গেল বলে সেগুলো আর করা হল না। কিন্তু ‘এক্স= প্রেম’-এর পর নতুন অ্যালবামের সঙ্গে রিলেট করাটা সহজ হবে মনে হয়। তার পর আমার নিজের জীবনে কয়েক দিন আগে যে একটা ম্যাজিক হয়ে গেল... সেটাও এই নামকরণের কারণ!
প্র: কোন ম্যাজিক?
উ: হঠাৎ দেখলাম, কতকগুলো মানুষ আমাকে বোকা ভেবে আমার অনেকটা সময় নিয়ে নিল। আমার চুলগুলো সব সাদা হয়ে গেল! তার জন্য যে সময় এবং এনার্জি আমি ব্যয় করলাম, সেটার কোনও মূল্যও থাকল না।
প্র: একটু খুলে বলবেন?
উ: কলকাতারই এক প্রযোজক এক দিন আমার কাছে এসে বলল, একটা ওয়েব সিরিজ়ের জন্য এক ম্যাজিশিয়ানের রোল করতে হবে, তার জন্য চুলটা সাদা করতে হবে। শুটিং করবে বলে আমাকে বেশ কিছু দিনের জন্য বুক করতে চেয়েছিল ওরা। আমি চুলটা রং করেও ফেলেছিলাম। তার পর এক দিন খুব ক্যাজ়ুয়ালি ওরা বলল, সিরিজ়টা এখন আর হবে না। অথচ এতটা অসভ্য যে, ওই সময়টায় আমি যাতে অন্যান্য প্রজেক্ট থেকে সরে আসি, তার জন্য চেষ্টা করেছিল। তখন আমি ‘চতুর্থ রিপু’ বলে একটা ছবি করছিলাম। ওরা আমাকে বলেছিল, না করতে। অথচ নিজেরা কোনও অ্যাডভান্স দেয়নি। ‘মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি’তেও ব্যাগড়া দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। শিলাজিতের মতো পরিচিত মানুষের সময়কে যদি এরা খুন করতে পারে, তা হলে অপরিচিত মানুষদের কী হবে!
প্র: অ্যালবাম করতে দশ বছর লেগে গেল কেন?
উ: তাতে তো কিচ্ছু এসে গেল না! অনেক তো করেছি। লোকে চেনে হয়তো ১০টা গান! আরও ৮০টা গান শুনুক না বসে। আমি এখন সিনেমার গান করব। তাতে লোকে আমাকে দেখতে পাবে, আর একটু প্রচার হবে! এখন আমি নিজেকে ফোকাসড করেছি। তাই ‘ম্যাজিক’ নিয়ে অ্যালবামটা করছি। একটা মিউজ়িক ভিডিয়ো-ও করব। ‘বসুন্ধরা’কে ফিরিয়ে আনছি। ধী-ও কাজ করছে ওতে।
প্র: আপনি নাকি স্ক্রিপ্টও লিখছেন?
উ: হ্যাঁ, ওটাই গোছাচ্ছি এখন। ওটা একটা শর্টফিল্মের।
প্র: ‘মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি’তে ডাকাতের রোল করার সঙ্গে ছবির সঙ্গীতও করছেন...
উ: হ্যাঁ, সে ভাবে দেখতে হলে একটা বড় ব্যানারে, নামী ছবিতে এই প্রথম সঙ্গীত করছি। অনিন্দ্য (চট্টোপাধ্যায়) আমাকে সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে একটা স্বীকৃতি দিল। চাইলে ওর নিজের ব্যান্ড ‘চন্দ্রবিন্দু’কে দিয়েই কাজটা করাতে পারত। ‘মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি’তে যে মজাটা আছে, সেটা ‘চন্দ্রবিন্দু’ অনায়াসে করে দিতে পারত। কিন্তু ও সেটা করল না। আর সেটা আমার কাছে অ্যাওয়ার্ড পাওয়ার মতো।
প্র: সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে আরও আগে কাজ করতে পারতেন, মনে হয়?
উ: সেটা হলে আমার নামডাকটা হয়তো আর একটু বাড়ত। তবে অসুবিধা কিছু হয়নি। এখন অনেকেই আমার বেসিক গানগুলো কাজে লাগাতে চাইছে। আমার মনে হয়, এই সময়টা লাগতই। বেসিক গানে কত আগে আমি প্রেমিকাকে ‘তুই’ বলে ফেলেছি, এখন দেখি সেটা সিনেমার জন্যও গাইছি!
প্র: নামডাকের কথা বলছেন, আপনি তো সেলফি তুলতে টাকা চেয়ে অবাক করেছিলেন ভক্তদের?
উ: তার জন্য তো এখনও ফেসবুকে লোকে ট্রোল করে আমাকে! কিন্তু টাকাগুলো তো আমি নিজের কাজে লাগাচ্ছি না। ওটা যাচ্ছে ‘নৌকা’য়। যে সংস্থা দুঃস্থ ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার ভার নেয়। ধীকে বেঙ্গালুরুতে পাঠানোর আগে আমাকে একটা কঠিন লড়াই করতে হয়েছিল। স্টাডি লোন পাইনি। আমি চাই, এই ছেলেগুলো যেন দাঁড়াতে পারে। কিন্তু আমাকে লোকে বলছে, শিলাজিৎ তো নিজের পকেট থেকেই টাকাটা দিতে পারে। লোকে বোধহয় ভাবে, আমার প্রচুর টাকা (হাসি)!
প্র: ধীয়ের সঙ্গে আপনার কি দূরত্ব তৈরি হয়েছে?
উ: ও বেঙ্গালুরুতে যাওয়ার পর থেকে এক রকম দূরত্ব এসেছে। ফোন-টোন করে না, খবর নেয় না। এই ব্যাপারটা যে এত আগে চলে আসবে, ভাবিনি। মাঝে মাঝে মনে হয়, মেয়ে হলে বোধহয় এ রকম হতো না!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy