Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

আমি মানুষকে সম্মান দিতে জানি: শুভশ্রী

গত ক’দিনে তাঁর দিকে ধেয়ে এসেছে কিছু প্রশ্ন, গুজব, কুৎসা। তাই শুভশ্রী মুখ খুললেন আনন্দ প্লাসের সামনে। জানালেন সত্যিটা কী গত ক’দিনে তাঁর দিকে ধেয়ে এসেছে কিছু প্রশ্ন, গুজব, কুৎসা। তাই শুভশ্রী মুখ খুললেন আনন্দ প্লাসের সামনে। জানালেন সত্যিটা কী 

শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়।—নিজস্ব চিত্র।

শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়।—নিজস্ব চিত্র।

পারমিতা সাহা   
শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৭ ২৩:৫৩
Share: Save:

সাক্ষাৎকারের শুরুতেই শুভশ্রী বললেন, ‘‘আমি ইন্টারভিউ দিতে বসেছি কয়েকটা বিষয় ক্ল্যারিফাই করার জন্য।’’

প্র: অবশ্যই। আপনি বলুন কী বলতে চান?

উ: অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী কোথায় গিয়েছে, কী করেছে, এ বিষয়ে আমি কোনও সংবাদ মাধ্যমে কোনও কথা বলিনি।

প্র: হঠাৎ এ কথা কেন উঠছে কেন?

উ: সম্প্রতি মিমি দাবি করেছে, কোনও সাংবাদিককে আমি জানিয়েছি যে, ও গোয়া গিয়েছে এবং সে কথার রেকর্ডিংও আছে। আচ্ছা, আপনি বলুন, যা আমি বলিনি, তার রেকর্ডিং কী ভাবে থাকতে পারে?

প্র: মিমি তো আপনার উপর এতটাই রেগে গিয়েছেন যে...

উ: হ্যাঁ আমাকে অশিক্ষিত, ক্লাসলেস অনেক কিছুই বলেছে।

আরও পড়ুন: সংযত ভাষায় হৃতিকের পাল্টা

প্র: এ সব শুনে আপনিও নিশ্চয়ই প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ?

উ: আপনার কী মনে হচ্ছে?

প্র: সেটাই তো অবাক লাগছে। আপনি দিব্যি হাসছেন!

উ: কারণ আমার হাসি পাচ্ছে। আই অ্যাম ফিলিং ভেরি সরি ফর হার। মনে হয়, শি ইজ ভেরি ফ্রাসট্রেটেড। সে জন্যই আর একজন মানুষ সম্পর্কে এ ধরনের কথা বলতে পারে। ওর শিক্ষা কেমন, তা ওর কথা থেকেই বোঝা যাচ্ছে। আমি ওকে কখনওই কোনও খারাপ কথা বলতে পারি না, কারণ এই শিক্ষাটা আবার আমার নেই। আমি কনভেন্ট এডুকেটে়়ড নই। খুব বেশি পড়াশোনাও করিনি। বর্ধমানের সাধারণ পরিবারের মেয়ে। কিন্তু সেখানে আমাকে মানুষকে সম্মান দিতে শেখানো হয়েছে। বিশেষ করে যাকে চিনি না, জানি না, রেগে গিয়ে তার সম্পর্কে কখনওই ভুলভাল কথা বলে দিতে পারব না। সবাইকে সম্মান করি বলেই ইন্ডাস্ট্রিতে ছোট থেকে বড় সবাই আমাকে ভালবাসে।

প্র: সেটা আপনার ডিগনিটি। কিন্তু তাই বলে আবেগকে তো জীবন থেকে বাদ দেওয়া যায় না।

উ: হ্যাঁ, আমি মিমিকে ফলো করি, লুজার এই সব কথা যখন শুনেছি, খারাপ অবশ্যই লেগেছে। আমার এতগুলো হিট ছবি রয়েছে এবং আমি তো বেসিক্যালি ওর চেয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে সিনিয়র। এ সবই ভাবছিলাম... ও যখন সিরিয়াল করা শুরু করে, তখন আমার ‘খোকাবাবু’ সুপারহিট। আমি সিরিয়াল তখন দেখতাম না। সরি মিমি, তখন তোমাকে ‘ফলো’ করা হয়নি। এমনি-এমনি ছবিটা হিট হয়ে গিয়েছে। তার পর ‘খোকা ৪২০’ সুপারহিট হয়। তখনও ‘বাপি বাড়ি যা’ ছবিটা আমার দেখা হয়নি। ইয়েস আই কোয়াইট লাইক হার। তার জন্য টুইটারে ফলো করি ওকে।

প্র: এ বার কি আনফলো করবেন?

উ: (একপ্রস্ত হেসে) এটা খুবই কিডিশ। হয়তো মিমিকে ফলো করেই মার্সিডিজটা কিনেছি এবং তিনটে বাড়ি এবং বাকি যা-যা প্রপার্টি আছে, ওকে ফলো করেই! আর আমার মনে হয়, আমি যথেষ্ট পরিণত এই ধরনের কোনও কিছু হ্যান্ডল করার জন্য। আজ মিমি কেন, অনেকেই আমার সম্পর্কে অনেক খারাপ কথা বলে। তাতে আমার কিছু যায় আসে না। কারণ আমি নিজেকে জানি। আর ভক্তরা যতক্ষণ আমার সঙ্গে আছে, ততক্ষণ আমার কিছুতে ভয় নেই। ওদের ভালবাসাটাই আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আর আমার সম্পর্কে যাঁরা এই ধরনের কথা রটান, যেমন আমি গায়ে আগুন দিয়েছি, তাঁরা সত্যিই আমার বিরাট বড় ফ্যান। আমি কী করছি, কোথায় যাচ্ছি, সব সময় সে দিকে লক্ষ রাখেন।

প্র: এ বার আসি আপনার গোয়া যাওয়া প্রসঙ্গে, যেখান থেকে পুরো ঘটনার সূত্রপাত।

উ: দেখুন, আমি গোয়া গিয়েছি কি না, এর উত্তর কাউকে দিতে বাধ্য নই। আমি বাবা-মাকে বলে যাব কার সঙ্গে যাচ্ছি এবং কোথায় যাচ্ছি, নিশ্চয়ই মিডিয়াকে নয়। তা নিয়ে এত জলঘোলা! এত কিছু। এবং এটা নিয়ে লোকেরাই হাসাহাসি করছে।

প্র: রাজের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক যে জোড়া লেগেছে, সেটা কি অস্বীকার করতে পারেন?

উ: দেখুন, যখন আমি মনে করব যে, আমার ব্যক্তিগত জীবন সকলের সঙ্গে শেয়ার করার সময় এসেছে, তখন নিশ্চয়ই জানাব।

প্র: আপনাদের সম্পর্ক ঘিরে এই যে এত প্রশ্ন উঠছে, সত্যিটা বলে দিলেই তো সব মিটে যায়!

উ: লোকে প্রশ্ন করবে সারাজীবন, সে আমি যাই বলি না কেন! আমি আমার পার্সোনাল লাইফ সব সময় ফ্লন্ট করেছি।

প্র: কিন্তু এই মুহূর্তে আপনি সেটা করছেন না।

উ: কারণ আমার সত্যিই কিছু বলার নেই। বলার সময় এলে নিশ্চয়ই বলব।

প্র: তার মানে আপনাদের সম্পর্ক এমন স্টেবল জায়গায় যায়নি, যেখান থেকে আপনি তা স্বীকার করতে পারেন!

উ: না, এটা কিন্তু আমার বক্তব্য নয়।

প্র: তার মানে রাজ চক্রবর্তীর সঙ্গে আপনার সম্পর্ক নেই। তাই তো?

উ: না নেই।

প্র: আচ্ছা, ব্যক্তিগত জীবন, তিক্ততা, ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব... এ সব কিছুর ফলে মনে হয় না আপনার কেরিয়ার এফেক্টেড হচ্ছে?

উ: আমার ভাগ্য কেড়ে নেওয়ার ক্ষমতা কারও নেই। সে যে যতই কনস্পিরেসি করুক, ব্যাক বাইটিং করুক। আর সত্যি কথা বলতে কী, কেরিয়ারের ব্যাপারে আমার আদৌ কোনও ইনসিকিয়োরিটি নেই।

প্র: এটা তো অদ্ভুত কথা বললেন! ইন্ডাস্ট্রিতে তো স্পটবয় থেকে প্রযোজক, সকলেরই বোধ হয় একটা ইনসিকিয়োরিটি কাজ করে। জায়গা হারানোর ভয়!

উ: আমার সেটাই করে না। কারণ বলতে পারব না। আগামী এক বছরও যদি আমি কোনও কাজ না করি, একটুও ফ্রাসট্রেশন হবে না। তখনও আমি কাউকে নিয়ে চারটে বাজে কথা বলতে বসে যাব না।

প্র: এই জোর কোথা থেকে পান?

উ: ওই শিক্ষা। সামান্য যেটুকু পেয়েছি, আমার বাবা-মায়ের কাছ থেকে। ওটাই পারমানেন্ট। বাকি সব সাময়িক। আমি এটাও ভাল ভাবে জানি, এখন আমি দর্শকদের কাছ থেকে ভালবাসা পাচ্ছি, তার মানে এটা নয়, সারা জীবন তা পেয়ে যাব। (হাসতে-হাসতে) আমি তো সব সময় বলি, এর পর আমি বিয়ে করতে চাই এবং মা হতে চাই। তখন কেরিয়ার থেকে সরে যাব। এটাই আমার আলটিমেট গোল। তবে ভবিষ্যতে কী হবে ইউ নেভার নো!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE