Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

উরি উরি বাবা...

একটা ঘটনা, যা গোটা দেশবাসীর মনোবল বাড়িয়ে দিয়েছিল।  মনে হয়েছিল, আমরাও পারি। বসে বসে মার না খেয়ে পাল্টা দিতে। আদিত্য ধরের ‘উরি’ সেই গল্পটাই বলতে চাইছিল। কিন্তু মাঝখান থেকে খানিক ক্ষণ অন্তর প্রধানমন্ত্রীকে দেখাতে গিয়ে চোনা পড়ল!

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ
শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:০০
Share: Save:

একটা ঘটনা, যা গোটা দেশবাসীর মনোবল বাড়িয়ে দিয়েছিল। মনে হয়েছিল, আমরাও পারি। বসে বসে মার না খেয়ে পাল্টা দিতে। আদিত্য ধরের ‘উরি’ সেই গল্পটাই বলতে চাইছিল। কিন্তু মাঝখান থেকে খানিক ক্ষণ অন্তর প্রধানমন্ত্রীকে দেখাতে গিয়ে চোনা পড়ল!

এত দিন পর্যন্ত বলিউডে যতগুলো যুদ্ধের ছবি হয়েছে, তার মধ্যে ‘উরি’ নিঃসন্দেহে উচ্চমানের। অন্তত স্টাইল এবং টেকনিক্যাল দিক থেকে। ‘বর্ডার’ বা ‘এলওসি কার্গিল’-এর সময়ে এতটা স্টাইলাইজ়ড উপস্থাপনা ছিল না। ওই ছবিগুলোয় আবেগের মাত্রাও অনেক চড়া ছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সিনেমার পরিভাষা বদলেছে। ‘উরি’ অনেকটাই হলিউডি স্টাইলে তৈরি।

ছবি শুরু হয় মণিপুরে টেররিস্ট হামলা এবং ভারতীয় সেনার প্রতিঘাত দিয়ে। যার পুরোভাগে ছিল বিহান সিংহ শেরগিল (ভিকি কৌশল)। এই চরিত্রটি পরিচালক খুব সুন্দর করে গড়েছেন। বিহানের পারিবারিক ক্রাইসিসও সঠিক পরিমাপে দেখিয়েছেন। অ্যালজ়াইমার্সে আক্রান্ত মায়ের জন্য বিহানকে ফিল্ড ছেড়ে ডেস্ক জব করতে হয়। কিন্তু উরির সন্ত্রাসবাদী হামলায় বিহানের বোনের স্বামী (মোহিত রায়না) মারা যাওয়ার পরে বিহান নিজে থেকে সার্জিকাল স্ট্রাইকে যেতে চায়। পরিচালক ছবিটিকে কিছু পর্বে ভাগ করেছেন। একদম শেষে সার্জিকাল স্ট্রাইকের সিকোয়েন্স। ছবির সবক’টা অ্যাকশন সিকোয়েন্সই খুব নিপুণতার সঙ্গে শুট করা। সাউন্ড ডিজ়াইনিং থেকে সম্পাদনা কোথাও বাড়তি কিছু নেই।

উরি পরিচালনা: আদিত্য ধর অভিনয়: ভিকি, পরেশ, ইয়ামি, রজিত, মোহিত ৫.৫/১০

এই ছবি ভিকি কৌশলের। ‘মাসান’, ‘মনমর্জ়িয়া’, ‘উরি’ প্রতিটিতে তিনি নিজেকে আলাদা ভাবে তুলে ধরেছেন। মোহিত রায়না, ইয়ামি গৌতম ছোট পরিসরে যথাযথ। পরেশ রাওয়াল গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে। শুধু তাঁর মোবাইল ভাঙার দৃশ্যটি অত বার না দেখালেও চলত।

আদিত্য ধরের ছবির মেকিংয়ের সঙ্গে ‘জ়িরো ডার্ক থার্টি’র কিছু মিল রয়েছে। কিন্তু তার জন্য নয়, ছবির নম্বর কাটা যাবে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কৃতিত্বকে একটি সরকারি প্রোপাগান্ডা হিসেবে ব্যবহারের জন্য। ২০১৬ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ভারতীয় সেনা পাক অধিকৃত কাশ্মীরে যে অভিযান চালিয়েছিল, তা অবশ্যই সরকার নির্দেশিত। কিন্তু গোটা ছবিতে সেটা বার বার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন ছিল না। যেমন প্রয়োজন ছিল না রজিত কপূর অভিনীত নরেন্দ্র মোদীর চরিত্রটিকে অতিরিক্ত স্ত্রিনটাইম দেওয়ার। সম্প্রতি বলিউডের বেশ কিছু ছবির উদ্দেশ্য এবং ইন্ডাস্ট্রির লোকজনের ঘনঘন দিল্লি সফর বলে দিচ্ছে, হাওয়া কোন দিকে। কিন্তু সিনেমার জন্য তা কতটা ভাল, সেই প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE