মালয়েশিয়া বেড়াতে গিয়েছিলেন তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী সৌমেন পাত্র। বন্ধুদের উপদেশ শোনেননি। তাই দামি কোনও রোমিং সিমও কেনেননি। তবুও বাড়ি-অফিস-বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রতিদিন। তাও বিনা পয়সায়। সৌজন্যে হোয়াটসঅ্যাপ কল।
ম্যানেজমেন্ট পড়ুয়া রোশনি সেন। সিসিডি আর ওয়েস্টসাইডে একবার ঢুকলেই পকেট গড়ের মাঠ। পকেট মানি পকেটে থাকার সময় পায় না। তবু ফোনে কথা, গল্প করা থামেনি। বাবা-মাও চিন্তিত এত টাকা পাচ্ছে কোথায়? সিক্রেটটা একমাত্র রোশনিই জানেন। আইএমও।
হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম, আইএমও, হ্যাংআউট, উইচ্যাটের দৌলতে ফোন করতে আজকাল আর পয়সা লাগে না যে।
কী ভাবে
এই মুহূর্তে অ্যাপল অ্যাপস্টোর বা অ্যানড্রয়েড প্লে স্টোরে হাজারখানেক এমন অ্যাপস আছে, যাতে টেক্সট করা, কথা বলা, এমনকী ভিডিয়ো চ্যাট পর্যন্ত করা যায় বিনা পয়সায়। ফেসটাইম আর স্কাইপ তো এত দিন ছিলই। কিন্তু ফেসটাইমের সমস্যা হল সেটা শুধু অ্যাপল ডিভাইসেই সম্ভব। আর স্কাইপের ভিডিয়ো কলে ছবির মান নিয়ে সমস্যা অনেক দিনের। তবে আইএমও-দের দৌলতে আর সে সমস্যা নেই।
যে অ্যাপসের মাধ্যমে কথাবার্তা চালাতে চান, সেই রকম অ্যাপস ইন্সটল করতে হবে উল্টো দিকের স্মার্টফোনেও। তবে শুধু দু’জনই নয়, অনেকের সঙ্গে একসঙ্গে কথা বলা যায়। এ বার দরকার ডেটা কানেকশন। নিজের ফোনের ডেটা প্যাক ব্যবহার করতেই পারেন, কিন্তু বুঝতেই পারছেন সেটা বিনা পয়সায় হবে না।
মুশকিল আসান ওয়াইফাই। ইন্টারনেটের সেই জোকসটা আছে না, কারও বাড়ি এসে ‘কেমন আছেন’য়ের বদলে একজন জিজ্ঞেস করছেন ‘দাদা, আপনার ওয়াইফাই পাসওয়ার্ডটা কী’। ‘‘আমি তো কলেজে ঢুকেই কলেজের ওয়াইফাইয়ে কানেক্ট করে নিই। আর বাড়িতে বাড়ির ওয়াইফাই। আমি তো গত দু’মাসে কোনও রিচার্জই করিনি,’’ হাসতে হাসতে বলছিলেন রোশনি।
কফি শপ থেকে কলেজ ক্যাম্পাস — সব জায়গাতেই এখন ওয়াইফাই ফ্রি। ওয়াইফাইতে কানেক্ট করলেই হবে। উল্টো দিকের ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলতে চাইলে কনট্যাক্ট লিস্ট থেকে ‘তার’ নামের উপর আলতো হাতের চাপই যথেষ্ট। আর মুখোমুখি বসতে চাইলে? ভিডিয়ো চ্যাটে দুধের স্বাদ ঘোলে মিটতে পারে।
গোপনীয়তা বজায় থাকুক
বিনা পয়সায় কথা বলতে পারা যদি হোয়াটসঅ্যাপ কলিংয়ের দিকে ঝোঁকার একটা কারণ হয়, অন্য কারণটা কিন্তু নিঃসন্দেহে এনক্রিপশন। সোজা ভাষায় বলতে গেলে, যে মেসেজ পাঠাচ্ছেন বা ফোন কল করছেন — সেটা আপনি, আর যাকে পাঠাচ্ছেন সে ছাড়া আর কেউ দেখতে পাবে না। পুলিশও চাইলে আড়ি পাততে পারবে না। আর সে কারণে অনেক সেলিব্রিটিও ভরসা করছেন হোয়াটসঅ্যাপ কলে।
তবে স্বাভাবিক ভাবে তাতে খুশি নয় পুলিশ।
পশ্চিমবঙ্গের সাইবার অপরাধ বিষয়ের সরকারি আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় যেমন বলছিলেন, ‘‘পুলিশের ক্ষেত্রে খুবই সমস্যার। কারণ মনে রাখবেন আপনার-আমার প্রাইভেসিটা যেমন থাকছে, তেমনই কিন্তু এটা ব্যবহার করে অপরাধী বা সন্ত্রাসবাদীরাও পার পেয়ে যাচ্ছে। আইপিসি ১১৮ আর ১১৯-য়ে বলা আছে অপরাধের ব্যাপারে এনক্রিপশন পদ্ধতি ব্যবহার করে কোনও কিছু গোপন করাটা বেআইনি।’’
যদিও জেন ওয়াই অত-শত ভাবতে নারাজ। তারা বলছে, এনক্রিপশন ভাল না খারাপ — সে তর্কের দায়িত্ব নিক আইন।
আরে বাবা, বিনা পয়সায় মুখোমুখি বসানোর ব্যবস্থাটা তো আর হাতছাড়া করা যায় না!
আনাচে কানাচে
সেলফি টাইম: ‘ডান্স বাংলা ডান্স’য়ের গ্র্যান্ড ফিনালে-তে যোগ দিতে শহরে গোবিন্দা, সঙ্গে যিশু, শ্রাবন্তী, অঙ্কুশ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy