Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Presents

সুদ ছাপিয়ে রিটার্ন

সঞ্চয়ের বাগানে মেয়াদি আমানত আপনার প্রিয় ফুল হতেই পারে। কিন্তু শুধু তা দিয়ে জমি ভরালে, রিটার্ন নজরকাড়া হবে কী করে? তাই সুদ ছাপানো রিটার্ন পেতে বরং একটু ছড়িয়ে-ছিটিয়ে টাকা রাখুন। লগ্নিকে ভাগ করে দিন বিভিন্ন প্রকল্পে। দেখবেন, সেই বাগান চোখ টানবেই।টাকা কেমন জমছে, তা দেখতে বাঙালি প্রথমেই ব্যাঙ্কে উঁকি মারে। উল্টে দেখে পাসবই। হিসেব কষে, মেয়াদি আমানতে জমা হল কত টাকা। খেয়াল করে দেখবেন, মাছ, পুরী আর জীবনবিমার মতোই এই মেয়াদি আমানত বা ফিক্সড ডিপোজিটের (এফডি) উপর আমাদের বড্ড টান। তাই অনেক সময়ই আগুপিছু না-ভেবে ভবিষ্যতের জন্য টাকা রাখতে ব্যাঙ্কের কাউন্টারে লাইন দিই আমরা। কষ্টের টাকা জমা করি মেয়াদি আমানতে।

শৈবাল বিশ্বাস
শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৫ ০০:৪৮
Share: Save:

টাকা কেমন জমছে, তা দেখতে বাঙালি প্রথমেই ব্যাঙ্কে উঁকি মারে। উল্টে দেখে পাসবই। হিসেব কষে, মেয়াদি আমানতে জমা হল কত টাকা। খেয়াল করে দেখবেন, মাছ, পুরী আর জীবনবিমার মতোই এই মেয়াদি আমানত বা ফিক্সড ডিপোজিটের (এফডি) উপর আমাদের বড্ড টান। তাই অনেক সময়ই আগুপিছু না-ভেবে ভবিষ্যতের জন্য টাকা রাখতে ব্যাঙ্কের কাউন্টারে লাইন দিই আমরা। কষ্টের টাকা জমা করি মেয়াদি আমানতে।

এফডি-র যে বেশ কিছু সুবিধা আছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। যেমন, ভাল ব্যাঙ্কে টাকা রাখলে, তার সুরক্ষা যথেষ্ট বেশি। সুদের হার নির্দিষ্ট। এবং সবচেয়ে বড় কথা, টাকা একবার জমা করে দেওয়ার পরে মেয়াদ চলাকালীন তা নিয়ে আর তেমন মাথা না-ঘামালেও চলে। কিন্তু তা বলে সঞ্চয়ের জন্য তুলে রাখা টাকার সিংহভাগ ব্যাঙ্কের ঘরে জমা দিয়ে আসাই কি বুদ্ধিমানের কাজ? না কি মাত্রাতিরিক্ত ঝুঁকির সঙ্গে সমঝোতা না-করেও তার তুলনায় কিছুটা বেশি রিটার্ন ঘরে তোলা সম্ভব? আমি মনে করি, দ্বিতীয়টা। সব টাকা ব্যাঙ্কে না ঢেলে তা যদি একটু বুদ্ধি করে বিভিন্ন খাতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা যায়, তবে ব্যাঙ্কের সুদকে হেলায় টেক্কা দেওয়া সম্ভব। সে ক্ষেত্রে ঝুঁকি হয়তো কিছুটা নিতে হবে। কিন্তু তা বেশ কম। কখনওই মাত্রাছাড়া নয়।

সুখে থাকতে ভুতের কিল!

অনেকেই প্রশ্ন করবেন, আমানত যদি বেশি সুরক্ষিত হয়, তবে বেশি রিটার্নের লোভে বাড়তি ঝুঁকি নিতে যাব কেন? এর উত্তরে আমি দু’টি কথা ভেবে দেখতে বলব—

(১) ব্যাঙ্কে মেয়াদি আমানতে টাকা ঢালার সময়ে তার রিটার্ন হিসেবে শুধু প্রাপ্য সুদের হারটুকুই মনে রাখি আমরা। কিন্তু মুশকিল হল, ওই সুদের পুরোটা তো আমার-আপনার প্রাপ্য নয়। কারণ, তা করযোগ্য। ফলে আদতে কোনও আমানত থেকে কত টাকা পাচ্ছেন, তা হিসেব করতে গেলে, করের অঙ্ক বাদ দিয়েই দেখতে হবে। তখন দেখবেন, নিট সুদে মন আর তেমন ভিজছে না।

মনে করুন, ব্যাঙ্কে ১,০০,০০০ টাকা পাঁচ বা দশ বছরের মেয়াদি আমানতে লগ্নি করলেন। এবং সেখানে সুদের হার ৯ শতাংশ। তার মানে ফি বছর ওই লগ্নি থেকে ৯,০০০ টাকা সুদ পাওয়ার কথা। কিন্তু ধরা যাক, আপনার যা রোজগার, তাতে ৩০ শতাংশ হারে আয়কর দিতে হয়। সে ক্ষেত্রে এফডি-তে প্রাপ্য সুদের উপরও তা দিতে হবে। ফলে ৯,০০০ টাকার মধ্যে কর হিসেবে বাদ যাবে ২,৭০০ টাকা। সুতরাং নিট রিটার্ন হিসেবে ৬,৩০০ টাকা পাবেন আপনি। তা হলে আসলে সুদ কত দাঁড়াল? ৬.৩ শতাংশ: তা-ই না?

এই হারে সম্পদ বাড়লে, মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে লড়াইয়ে জিতবেন কী ভাবে? মূল্যবৃদ্ধি ৬ শতাংশ মানে, এ বছর যে জিনিসের দাম ১০০ টাকা, পরের বছর তা-ই আপনাকে কিনতে হবে ১০৬ টাকা দিয়ে। সুতরাং এই অবস্থায় আপনার টাকা যদি ৬.৩ শতাংশের শামুক গতিতে বাড়ে, তবে ছেলে-মেয়ের পড়াশোনা, বিয়ে ইত্যাদির মোটা খরচ সামাল দেবেন কী ভাবে? আর মূল্যবৃদ্ধি ৭-৮ শতাংশ হলে তো কথাই নেই। সে ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কে আপনার টাকা দেখতেই বাড়ছে, আসলে কমছে তার ক্রয়ক্ষমতা।

(২) অনেকের ধারণা, সরকারি বা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে আমানত হিসেবে যে টাকা রাখা হয়, তা পুরোপুরি সুরক্ষিত। অর্থাৎ, ব্যাঙ্ক লালবাতি জ্বাললেও তা মার যাওয়ার ভয় নেই। তা ফেরত পাওয়া যাবে সরকারের ভাঁড়ার থেকে। আসলে কিন্তু তা নয়। প্রত্যেক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে আপনার রাখা এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত আমানতের দায়িত্ব সরকারের। বাকি টাকার নয়।

আর দ্বিতীয়ত, যদি সুরক্ষার কথাই বলেন, তাতেও যে বিকল্প আপনার সামনে খোলা নেই, সে কথা কে বলল? কোন প্রকল্পে টাকা ঢালা কতটা সুরক্ষিত, তার মূল্যায়ন করে রেটিং সংস্থাগুলি। সাধারণত সব থেকে সুরক্ষিতর তকমা পায় সরকারি বন্ড। তার পরেই থাকে বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা, বড় এবং নামী বেসরকারি সংস্থার ইস্যু করা ঋণপত্র ইত্যাদি। ওই মাপকাঠিতে মেলাতে গেলে দেখবেন, সুরক্ষার নিরিখে প্রায় একই জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে মেয়াদি আমানত এবং বিভিন্ন ডেট ফান্ড (যে সব মিউচুয়াল ফান্ড বিভিন্ন ধরনের ঋণপত্রে বিনিয়োগ করে)। সুতরাং তাদেরও সুরক্ষা একেবারে ফেলনা নয়।

চিন্তা নেই, রাস্তা খোলা

সুতরাং বুঝতেই পারছেন, জিনিসপত্রের দাম যে ভাবে হুড়মুড়িয়ে বাড়ছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রিটার্ন পেতে হলে, বিনিয়োগ ছড়িয়ে দেওয়া ছাড়া পথ নেই। উপায় নেই সামান্য ঝুঁকি না-নিয়ে। কিন্তু তেমনই সুখবর হল, সেই রাস্তা আপনার সামনে খোলা। কারণ, হাতের সামনেই বেশ কয়েকটি জায়গা রয়েছে, যেখানে মিলিয়ে-মিশিয়ে টাকা ঢাললে, ঝুঁকি মাত্রাছাড়া হবে না। আবার মন্দ হবে না রিটার্নও। অন্তত আমানতকে তা টেক্কা দেওয়ার ক্ষমতা রাখবে। আসুন, আজ আমানতের পাশে রেখে সেই সমস্ত বিকল্পের একটা তুল্যমূল্য বিচার করি।

টক্করে ডেট ফান্ড

আগেই বলেছি, ডেট ফান্ড হল সেই সমস্ত মিউচুয়াল ফান্ড, যা বিভিন্ন সরকারি বন্ড, কোম্পানি ডিবেঞ্চার ইত্যাদিতে টাকা ঢালে। আমানতের মতো একেবারে বাঁধাধরা সুদ পাওয়ার গল্প এখানে নেই। কিন্তু তেমনই রিটার্ন কেমন হতে পারে, তার মোটামুটি একটা আঁচ করা সম্ভব। এখন এক ঝলকে দেখে নেওয়া যেতে পারে যে, মেয়াদি আমানতের তুলনায় এই ধরনের ফান্ডে টাকা রাখার সুবিধা-অসুবিধাগুলি কী কী—

আমানতে টাকা রাখার আগেই আপনি যেমন জানতে পারেন যে সুদের হার কী হবে (এখন ৮-৯ শতাংশ), ডেট ফান্ডে তেমনটা সম্ভব নয়। কিন্তু আগের রেকর্ড একটু ঘাঁটলেই বুঝতে পারবেন যে, সেখানেও রিটার্ন মোটামুটি একই। ৮ থেকে ৯ শতাংশ। সুদের ওঠা-নামার সঙ্গে সঙ্গে ফান্ডের রিটার্নে বাড়া-কমা হতে পারে। কিন্তু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে ফান্ড বাছলে, সেখানে ওঠা-পড়া তুলনায় কম হওয়ার সম্ভাবনা।

আমানত থেকে আপনি সুদ পান। আর ফান্ড থেকে পান ডিভিডেন্ড। আপনি আয়করের যে বন্ধনীতে পড়েন, সেই হারে কর ধার্য হবে সুদের উপরেও। কিন্তু ফান্ডের ডিভিডেন্ড না-তুলে যদি আপনি তা তহবিল বাড়ানোর কাজে ব্যবহার করেন, তাহলে শুধু দীর্ঘ মেয়াদি মূলধনী লাভ কর (ক্যাপিটাল গেইনস ট্যাক্স) গুনতে হবে ২০ শতাংশ। তা-ও আবার তিন বছর পেরিয়ে গেলে রিটার্ন থেকে প্রথমে মূল্যবৃদ্ধির হার সটান বাদ যাবে। যাকে বলে ইনডেক্সেশন। কর গুনতে হবে শুধু বাকি নিট রিটার্নটুকুর উপর।


সবিস্তার জানতে ক্লিক করুন।

সুতরাং বুঝতেই পারছেন, কর দেওয়ার পরে নিট রিটার্নের হিসেবে কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকতে পারে ডেট ফান্ডই।

শুধু তা-ই নয়। আমানতে পাওয়া সুদের হিসেব কষে প্রতি বছর তা দেখাতে হয় আয়করের রিটার্নে। ফলে তার জন্য কাগজপত্তর রাখার ঝক্কি বেশি। এই সমস্যা আরও ঘোরালো হয় মেয়াদ শেষের আগেই টাকা তুলে নিলে। সেখানে ডেট ফান্ডে এই ঝামেলা অনেকটাই কম। কারণ, শুধুমাত্র টাকা তোলার সময় মূলধনী লাভ কর দিতে হবে আপনাকে।

এখানে আর একটি কথা মনে রাখা দরকার। তা হল, আমানতে টাকা ঢেলে প্রতি বছর যে সুদ পান, তা অনেক সময়ে আপনার হাতে আসে না। অথচ তার উপরেও প্রতি বছর কর গুনতে হয় আপনাকে। ফলে কিছুটা ধাক্কা খায় বছর-বছর সেই টাকা ফুলেফেঁপে ওঠার গতি।

এমনটা তো হতেই পারে যে, আমানতে টাকা একবার ঢেলে ফেলার কিছু দিন পরে আপনি দেখলেন, কোনও জরুরি প্রয়োজনে তা তুলতে হবে। মেয়াদ ফুরনোর আগে আমানত থেকে এ ভাবে টাকা তোলাও কিন্তু বেশ ঝক্কির। কারণ—

(ক) তাতে সুদ কম পাবেন। সাধারণত মেয়াদের আগে টাকা তুললে, এক শতাংশ সুদ কম মেলে।

(খ) হয়তো দেখা গেল, এক লক্ষ টাকার মেয়াদি আমানত করেছেন। কিন্তু মেয়াদ শেষের আগেই তার মধ্যে ২০ হাজার টাকা তোলা ভীষণ জরুরি। এ ক্ষেত্রে সমস্যা হল, ওই টাকা পেতে হলে, পুরো টাকাই ভাঙিয়ে তুলে নিতে হবে। লগ্নির একটা অংশ (এ ক্ষেত্রে ২০ হাজার) তোলা যাবে না।

ডেট ফান্ডে কিন্তু এই সমস্ত সমস্যা অনেক কম। কারণ, সেখানে যে কোনও সময় প্রয়োজনমাফিক নিজের ভাগের যে কোনও অঙ্ক তোলার সুবিধা রয়েছে। ওই টাকা ৩-৪টি কাজের দিনের মধ্যে আপনার অ্যাকাউন্টে পৌঁছেও যাবে। রিটার্ন কম পাওয়ার ঝামেলাও এখানে নেই। কিছু ফান্ড অবশ্য একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা তুলে নিলে ০.২৫ থেকে ০.৫০ শতাংশ এগ্‌জিট লোড চাপাতে পারে। তবে সাধারণত সেই অঙ্ক আমানতের ক্ষতির তুলনায় কম।

ফলে সব মিলিয়ে দেখলে, ডেট ফান্ডে টাকা রাখা মোটামুটি নিরাপদ, যে কোনও সময় টাকা তোলা সুবিধাজনক এবং কর দেওয়ার পরে নিট রিটার্ন অনেক ক্ষেত্রেই আমানতের সুদকে টেক্কা দেওয়ার মতো। তাই আপনার লগ্নির বিকল্প গন্তব্য হিসেবে এই ফান্ড মেয়াদি আমানতকে কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতেই পারে।

আসরে ইকুইটি ফান্ড

ঝুঁকি আপনার যতই অপছন্দ হোক, ধীরে ধীরে পরিস্থিতি যা দাঁড়াচ্ছে, তাতে মূল্যবৃদ্ধিকে টপকে দু’পয়সা বাড়তি রিটার্ন পেতে শেয়ার বা ইকুইটি ফান্ডের দিকে হয়তো তাকাতেই হবে আপনাকে। এই ফান্ডের তহবিল খাটে বিভিন্ন সংস্থার শেয়ারে। তাই স্বাভাবিক ভাবেই ঝুঁকি এখানে মেয়াদি আমানত কিংবা ডেট ফান্ডের তুলনায় অনেকটাই বেশি। কিন্তু তেমনই অনেকখানি বেশি এর রিটার্ন দেওয়ার ক্ষমতাও। ডেট ফান্ড বা আমানতে যেখানে ৮ থেকে ৯ শতাংশ রিটার্ন পাওয়া যাচ্ছে, সেখানে দীর্ঘ মেয়াদে ভাল ইকুইটি ফান্ডে তা থাকে ১৫ শতাংশের আশেপাশে। ফলে একবার ভাল ইকুইটি ফান্ড বেছে নিয়ে লম্বা সময়ের জন্য সেখানে টাকা ঢালতে পারলে, মূল্যবৃদ্ধিকে টেক্কা দেওয়া রিটার্ন দিতে তার জুড়ি মেলা ভার।

সেই সঙ্গে মনে রাখতে হবে করছাড়ের সুবিধাও। দীর্ঘ মেয়াদে (এক বছরের বেশি) এই ফান্ডে লগ্নি করলে, কোনও মূলধনী লাভ করই দিতে হয় না। অর্থাৎ, ভেবে দেখুন, চড়া রিটার্নেও করের হার এখানে শূন্য!

কোনটি কখন?

মনে রাখবেন, ভবিষ্যতের জন্য মোটা তহবিল গড়তে দু’ধরনের ফান্ডই উপযোগী। তবে কোনটি কখন বেশি কাজে লাগে, সে কথা গোড়া থেকেই মাথায় রাখা ভাল—

তুলনায় স্বল্প মেয়াদে (পাঁচ বছর বা তার কম) যদি কোনও নির্দিষ্ট লক্ষ্যে (ছেলে-মেয়ের উচ্চশিক্ষা, বিয়ে ইত্যাদি) টাকা জমানোর কথা ভাবেন, তাহলে ডেট ফান্ড বেশ কাজে দিতে পারে। কিন্তু যদি ভবিষ্যতের জন্য লম্বা সময় ধরে (১৫-২০ বছর) মোটা তহবিল গড়তে চান, তা হলে কিন্তু ইকুইটি ফান্ডই সেরা বাজি।

যদি মনে করেন, ভাল রিটার্নের জন্য সামান্যতম ঝুঁকি নিতেও আপনি রাজি নন, তাহলে ইকুইটি ফান্ড আপনার জন্য নয়। কিন্তু তেমনই আবার কোনও ডেট ফান্ডে ইকুইটি ফান্ডের মতো চোখধাঁধানো রিটার্নের আশাও করবেন না।

মাথায় থাকুক পিপিএফ

মেয়াদি আমানতের বিকল্প হিসেবে দু’ধরনের ফান্ডের কথা এতক্ষণ আলোচনা করলাম। কিন্তু এই প্রসঙ্গে পিপিএফের (পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড) কথা অন্তত একবার মনে করিয়ে দেওয়ার লোভ সামলাতে পারছি না।

আমানতের মতোই এই প্রকল্প থেকেও মেয়াদ শেষের আগে টাকা তোলা বেশ শক্ত। কিন্তু তেমনই এর বেশ কিছু সুবিধাও আছে। যেমন—

প্রতি বছর এখানে লগ্নি করতে পারেন নিজের সুবিধা অনুযায়ী। ৫০০ থেকে ১,৫০,০০০ টাকা। রেস্ত বুঝে টাকা ঢালার এমন সুযোগ খুব কম প্রকল্পেই মেলে।

এই প্রকল্পে বিনিয়োগ পুরোপুরি করমুক্ত। এটি অবশ্যই মাথায় রাখুন।

অবসরের কথা মাথায় রেখে লম্বা সময়ের জন্য পিপিএফে টাকা ঢালা লাভজনক হতে পারে।

বাগানে রকমারি ফুল

বাড়ির সামনে একফালি জায়গা থাকলে, তা কি শুধু এক ধরনের ফুলেই ভরিয়ে দেবেন? না কি সুন্দর বাগান করতে লাগাবেন রকমারি ফুল? পাঁচ রকম ফুলের বাহার থাকলে, তবেই না চোখ টানবে আপনার বাগান?

লগ্নির দুনিয়াতেও কিন্তু ওই একই কথা খাটে। নজরকাড়া রিটার্ন পেতে বিভিন্ন প্রকল্পে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে টাকা রাখতে হবে আপনাকে। সেই তালিকায় মেয়াদি আমানত থাকতেই পারে। কিন্তু সেটিই আপনার লগ্নি-বাগানের একমাত্র ফুল হবে কেন?

লেখক বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞ (মতামত ব্যক্তিগত)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE