Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা

এমন একটা পৃথিবী আমরা তৈরি করতে চলেছি যেখানে সব ধরনের মানুষ ভালবাসতে পারে, ভালবাসা পেতে পারে।’ জানিয়েছেন জেনি সিলি। ২৮ ও ২৯ মার্চ ঢাকায় এক অন্য রকম ‘রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট’-এর প্রথম অভিনয়ের আগে।

শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৬ ০১:১৯
Share: Save:

বর্ণময় উদ্যোগে শামিল দুই বাংলা

এমন একটা পৃথিবী আমরা তৈরি করতে চলেছি যেখানে সব ধরনের মানুষ ভালবাসতে পারে, ভালবাসা পেতে পারে।’ জানিয়েছেন জেনি সিলি। ২৮ ও ২৯ মার্চ ঢাকায় এক অন্য রকম ‘রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট’-এর প্রথম অভিনয়ের আগে। এই অভিনয়ের বৈশিষ্ট্য— শারীরিক প্রতিবন্ধী তরুণ-তরুণীরা এই নাটকের প্রধান শিল্পী। জেনির কথায়, সে জন্যেই এই পঁচাত্তর মিনিটের প্রযোজনাটি গুরুত্বপূর্ণ তো বটেই, চ্যালেঞ্জিংও। ‘শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও এই ভিন্ন ভাবে সক্ষমরা প্রমাণ করে দেবেন, তাঁরা কী-না পারেন, আর তাই চিরায়ত ভালবাসার নাটকটি বেছে নেওয়া।’ জানালেন নাসিরউদ্দিন ইউসুফ। শেক্সপিয়ার-এর মৃত্যুর চারশো বছর উদ্‌যাপনে উদ্যোগী হয়েছে ব্রিটিশ কাউন্সিল, ১৩০টি দেশ তাতে যোগ দিয়েছে, এই প্রযোজনাটি তারই অঙ্গ। বাংলাদেশের ‘ঢাকা থিয়েটার’ ও লন্ডনের ‘গ্রেআই থিয়েটার’ মিলে অভিনয় করছে। নেতৃত্বে জেনি, লন্ডনের নাট্যদলটির ‘আর্টিস্টিক ডিরেক্টর’; আর মূল ভাবনা ও প্রযোজনা নাসিরউদ্দিনের, ঢাকার নাট্যদলটির প্রতিষ্ঠাতা। এই উদ্যোগে জড়িয়ে গিয়েছে কলকাতাও, এক অর্থে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে এই নাটক। নাটকটির বাংলাপাঠ রচনা করেছেন দেবেশ রায়। ‘বাস্তবের শিকড় থেকে রচনাকে শিল্পের বৃক্ষে পরিণত করতে পারেন দেবেশ রায়ই, তাঁর লেখনীর মহাকাব্যিক বিস্তারে আমি চমৎকৃত ও বিস্মিত। তাই তাঁর অনুবাদ সাদরে গ্রহণ করেছি আমরা।’ বললেন নাসিরউদ্দিন। সম্প্রতি এই অনুবাদের দ্বিভাষিক সংস্করণ পশ্চিমবঙ্গে বের করেছে দে’জ পাবলিশিং (সঙ্গে প্রচ্ছদ)। শুধু তাই নয়, ২৬ মার্চ যে ৪৫ বছর পূর্ণ হল বাংলাদেশের স্বাধীনতার, সে কারণেই নাসিরউদ্দিনের কাছে এই উদ্যোগের অন্য তাৎপর্য। শেক্সপিয়ারের নাটক, ব্রিটিশ কাউন্সিলের উদ্যোগ, ঢাকা থিয়েটারের অভিনয়, পশ্চিমবঙ্গের অনুবাদ— এমন এক মিলিত উৎসব হয়ে উঠল! বাঁ দিকের ছবিতে জেনি সিলির সঙ্গে অভিনেতারা, তারেক মেহদির তোলা ছবিটি ব্রিটিশ কাউন্সিলের সৌজন্যে।

প্রসঙ্গ রুদ্রপ্রসাদ

‘তাঁর সারাজীবনের কাজের জন্য সংবর্ধিত হয়েছেন রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত। সেই সংবর্ধনায় আমরাও আমাদের স্বরসংযোগ করি।’ লিখেছেন শঙ্খ ঘোষ। তরুণ রুদ্রপ্রসাদের চমৎকার একটি আলোকচিত্র অন্যকথা-র (সম্পা: দীপক মিত্র সিদ্ধার্থ সেন) ‘প্রসঙ্গ রুদ্রপ্রসাদ’ সংখ্যাটির প্রথম খণ্ডের শুরুতেই, তেমনই দ্বিতীয় খণ্ডের শুরুতে তাঁর পরিণত বয়সের ছবি। তাঁকে নিয়ে পারিবারিক মানুষজন ও বিশিষ্ট জনের নতুন-পুরনো লেখার পাশাপাশি তাঁরও একগুচ্ছ রচনা। জীবনী, সাক্ষাৎকার, চিঠিপত্র। তাঁর অভিনীত-নির্দেশিত-রূপান্তরিত নাটক ও চলচ্চিত্র এবং সম্মানপ্রাপ্তির তালিকা, সঙ্গে সে সব নিয়ে আলোচনাও। তাঁর থিয়েটার-ভুবনকে সামগ্রিকতায় দেখার চেষ্টা। প্রচ্ছদ: অনুপ রায়

শিল্পকথা

তাঁর হাতে চক-পেন্সিলের সঙ্গে সঙ্গে রং-তুলিও স্বমহিমায় বিরাজ করে। শিল্পী প্রশান্ত বসু কখনও নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন, কখনও বা সাউথ পয়েন্ট স্কুলে গণিতের শিক্ষকতা করেছেন। প্রশান্তর ‘নেচার অ্যারাউন্ড-২’ শীর্ষক পঞ্চম একক প্রদর্শনী চলছে আলতামিরা আর্ট গ্যালারিতে। চলবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত, ৩-৮টা। অন্য দিকে, কলকাতা, শান্তিনিকেতন এবং বডোদরা-র বিশিষ্ট শিল্পীদের আঁকা তেত্রিশটি মূল রেখাচিত্রের প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে ভদ্রকালী, উত্তরপাড়া জীবনস্মৃতি ডিজিটাল আর্কাইভ। দেখা যাবে রামকিঙ্কর বেজ, কমলকুমার মজুমদার, দিনকর কৌশিক, রবীন মণ্ডল প্রমুখ শিল্পীর কাজ। চলবে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত, ৪-৯.৩০টা। সহযোগিতায়, ফোকাস। সমগ্র পরিকল্পনায় অরিন্দম সাহা সরদার। সঙ্গের ছবির শিল্পী হরেন দাস।

লোকতীর্থ

চু-কিতকিত, ডাংগুলি, বুড়িছোঁয়া, চোর-পুলিশ বা কুমিরডাঙ্গা— ছেলেবেলার সেই খেলাগুলি কি মনে পড়ে! আজকের নেটস্যাভি প্রজন্মের কাছে এ সব হাস্যকর মনে হবে, কিন্তু সে দিনের শিশুদের কাছে এই ছিল অমূল্য। সেই দিনের রেশ ফিরে পেতে চাইলে চলে আসতে হবে ইকোপার্কের আরবান ভিলেজে। হিডকো-র সঙ্গে আর্ট ইলুমিনেটস ম্যানকাইন্ড-এর উদ্যোগে এখানে আয়োজিত হয়েছে ‘লোকতীর্থ উৎসব’, ১-৩ এপ্রিল। ছেলেবেলার খেলায় যোগ দেওয়া ছাড়াও এখানে দেখা যাবে ধামসা বাদন, বহুরূপী, বাউল, রণপা, আদিবাসী ও ছোনাচ এবং পুতুলনাচ। এ দিকে একটি অন্য ধরনের পরিবেশনা ৮ এপ্রিল সন্ধে ৬টায় আইসিসিআর-এ। ‘তৌর্য্যত্রিকম’ অর্থ নৃত্য, সঙ্গীত এবং নাট্যের যুগলবন্দি। শোভা রায় প্রতিষ্ঠিত সৌন্দর্য ভারত নাট্যালয় দীর্ঘদিন ধরে ভরতনাট্যমের এই দিকটি নিয়ে কাজ করে চলেছে। ভারতীয় বিদ্যাভবন এবং ইনফোসিস ফাউন্ডেশনের প্রযোজনায় সন্দীপ মল্লিকের কথা, শুভেন্দু মুখোপাধ্যায়ের মূকাভিনয় এবং শোভা রায়ের নৃত্যে উদ্ভাসিত হবে বিষয়টি।

কল্পনির্ঝর

অমসৃণ সাম্প্রতিক সময়টার সঙ্গে বোঝাপড়ার জন্যে বা বর্তমান নিয়ে নতুন করে ভাববার জন্যে অতীত পুনঃপাঠের ভিতর দিয়ে যেতে হবে আমাদের। সাহিত্য ও সিনেমার ‘টেক্সট’-এ ভর করে পৌঁছতে হবে জাতি, দেশ ও তার ইতিহাসের সন্ধিক্ষণে। এই নিয়েই প্রতি বারের মতো এ বারও ভিভাদা-কল্পনির্ঝর বার্ষিক বক্তৃতা। বক্তা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির এমেরিটা অধ্যাপক সুপ্রিয়া চৌধুরী। বিষয়: ‘রিডিং পাস্টস, থিংকিং প্রেজেন্টস: রিফ্লেকশনস অন দ্য নেশন, রিপ্রেজেন্টেশন, অ্যান্ড মোর্নিং’। উদ্যোগে কল্পনির্ঝর ফাউন্ডেশন ও গ্যেটে ইনস্টিটিউট। ১ এপ্রিল সাড়ে ৬টায় ম্যাক্সমুলার ভবনে।

বিকল্প থিয়েটার

নাটকই শেখায় অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে। আর এর থেকেই জন্ম নেয় প্রতিবাদের ভাষা। এ বার সেই ভাষাকে সঙ্গে নিয়ে এফ আই টি এ/প্রকৃতি তীর্থ এবং রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে ‘অন্তরঙ্গ স্পার্টাকাস’ শীর্ষক এক বিকল্প থিয়েটারের আয়োজন করা হয়েছে (রাজারহাট, ইকো পার্ক ১নং গেট) প্রকৃতি তীর্থ রবি অরণ্যের মুক্তমঞ্চে। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন পর্যটনমন্ত্রী ব্রাত্য বসু, হিডকো চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন এবং রবীন্দ্রতীর্থ-র অধিকর্তা অনুপ মতিলাল। চলবে ৩ এপ্রিল (সোমবার বাদে রোজ বিকেল ৫-৭.৩০) পর্যন্ত। মেলায় চোদ্দোটি নাট্যদলের উপস্থিতিতে প্রতিদিন দুটি করে নাটক ছাড়াও থাকবে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গীত ও নৃত্যানুষ্ঠান।

উদ্যোগ

শুধু বইমেলার আয়োজন করেই দায়িত্ব শেষ নয়, নানা সামাজিক দায়িত্ব পালনেও এগিয়ে আসে পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ড। অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল বা বন্যাবিধ্বস্ত এলাকার ছাত্রছাত্রীদের পাঠ্যবই বিতরণ, অনাথ আশ্রমে গ্রন্থাগার স্থাপন, বিনামূল্যে স্বাস্থ্যপরীক্ষা তো ছিলই। এ বার, আমহার্স্ট স্ট্রিটের চিলড্রেন্স হ্যাপি হোম প্রাইমারি স্কুলের পরিচালন সমিতির পাশে দাঁড়াল গিল্ড। আগামী এক বছরের জন্য ওই স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের বিনামূল্যে স্কুল ইউনিফর্ম প্রদান, গ্রন্থাগার স্থাপন, টিফিনের ব্যবস্থা ও স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হবে। এই কর্মকাণ্ডের সূচনা ৩০ মার্চ দুপুর ১২টায়।

প্রয়াণ

‘এদেশের মাটি, মানুষ আর সংস্কৃতিকে ভালবাস। তাদের নিয়ে কাজ কর। তারাই তোমায় এগিয়ে নিয়ে যাবে।’— ছাত্রছাত্রীদের এ কথা প্রায়ই বলতেন ইতিহাসবিদ অমিতা রায়। আদি নিবাস ময়মনসিংহ হলেও কর্মসূত্রে পিতা উমেশ রায়ের রেঙ্গুনে বসবাসকালে ১৯২৯ সালের ২৩ জুন ওখানেই তাঁর জন্ম। উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি চলে আসেন কলকাতায়। এখানে কল্যাণী কার্লেকরের চেষ্টায় কসবা চিত্তরঞ্জন স্কুলে সকালে চাকরি এবং দুপুরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস ও সংস্কৃতিতে এম এ পড়া। ১৯৪৯-এ প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়ে গবেষণা করেন নীহাররঞ্জন রায়ের তত্ত্বাবধানে। ১৯৬০-এ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সূচনাপর্ব থেকেই পড়িয়েছেন। পড়িয়েছেন দেশবিদেশের নানা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সম্প্রতি প্রয়াত হলেন তিনি।

স্মরণ

তখন তিনি কলেজ ছাত্র। কুড়ি পার হননি। ডায়েরি লেখার অভ্যাস তার আগে থেকেই। তবে কলেজ ছাত্র হিসেবে এই সময়ে লেখা ডায়েরির পাতায় খুঁজে পাওয়া যায় এক ভিন্ন নরেশ গুহকে। যিনি শুধুই কবি নন, সময় সচেতন এক চিন্তক। এমন ৮টি ডায়েরি ঘেঁটে ভিন্ন এক নরেশকে উপস্থাপন করবেন সোমা মুখোপাধ্যায় চক্রবর্তী ও অনিমেষ দত্ত বণিক। সোমার বক্তব্য ছুঁয়ে যাবে ব্যক্তি নরেশ গুহর নানা স্মৃতি। এর পরে থাকবে তৃতীয় নরেশ গুহ স্মারক বক্তৃতা ২০১৬, বক্তা প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত, বিষয় ‘ভারতবর্ষের গুহামন্দির ও পাহাড় খোদাই ভাস্কর্য’। ‘অহর্নিশ’ আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে আরও থাকছে জিৎ মুখোপাধ্যায়ের সংবর্ধনা। নবীন এই কবি- সম্পাদকের হাতে সম্মাননা তুলে দেবেন জয় গোস্বামী। আজ বিকেল ৫.৩০-এ, জীবনানন্দ সভা ঘরে।

অন্য গাঁধীজি

ভেবেছিলেন ডাক্তার হবেন। বাবার কথায় যোগ দিলেন ওয়ার্ধা আশ্রমে গাঁধীজির নিজস্ব কর্মীদলে। কানু গাঁধীর বাবা নারানদাস ছিলেন গাঁধীজির ভাইপো। কানু মহাত্মার এতটাই ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন যে তাঁকে ‘বাপুর হনুমান’ বলা হত। শেষ দশ বছরে গাঁধীজির দিনযাপনের অন্তত হাজার দু’য়েক ছবি তুলেছিলেন তিনি। ক্যামেরাটা দেন জি ডি বিড়লা, আর গাঁধীজির শর্ত ছিল ফ্ল্যাশ জ্বালানো যাবে না, পোজ দিতেও বলা যাবে না, আর আশ্রম এর খরচ দেবে না। শর্ত মেনেই কানু যে সব ছবি তোলেন তা আজ বিস্মৃত। তা থেকে বেছে কানুজ গাঁধী নামে দারুণ বই তৈরি করেছেন প্রশান্ত পাঞ্জিয়ার আর সঞ্জীব সাইত (নজর ফাউন্ডেশন)। তারই ৪২টি ছবি নিয়ে আজ থেকে ১৭ এপ্রিল প্রদর্শনী ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলে, সন্ধে ৬টায় উদ্বোধনে সব্যসাচী ভট্টাচার্য। সঙ্গের ছবিতে সোদপুর খাদি প্রতিষ্ঠানে গাঁধীজি, ভোর চারটে, ১৯৪৬।

সুরে সুরে

নেলসন ম্যান্ডেলা কেপ টাউনের রবেন আইল্যান্ডের জেলে বসে শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায় ও রকেট মণ্ডলের সুরে ‘ম্যান্ডেলা আফ্রিকা ম্যান্ডেলা’ গানটির তর্জমা শুনে বলেছিলেন, ‘আমাকে নিয়ে বাংলাভাষায় এ রকম সুরেলা গান তৈরির জন্য আমি গর্বিত।’ ম্যান্ডেলা যখন কলকাতায় এলেন, তখনও রকেটের সুর করা ‘স্বাগত ম্যান্ডেলা’ গান দিয়ে তাঁকে অভ্যর্থনা জানানো হয়। আবার, তাঁরই সুরে ইউথ ক্যয়ারের গাওয়া ‘বিশ্বজননী মাদার টেরিজা’ গানটিও প্রশংসিত হয়েছিল। হিল্লোল ওরফে রকেট সত্যজিৎ রায়, সলিল চৌধুরী, আর ডি বর্মন, মান্না দে, সুধীন দাশগুপ্তর সঙ্গে কাজ করে ঋদ্ধ হয়েছেন। প্রাণিত হচ্ছেন দেশে-বিদেশে রুনা লায়লা, অমিতকুমার, ভূপিন্দর সিংহ-মিতালি, সাবিনা ইয়াসমিন, অ্যান্ড্রু কিশোরদের স্টেজ শো-এ গিটারিস্ট হিসেবে পারফর্ম করতে পেরেও। অ্যালবাম ‘কলকাতা-৩০০’ বা নীতীশ রায়ের ‘এক পশলা বৃষ্টি’, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘ওয়ারিশ’, ‘রংমিলন্তি’, অতনু ঘোষের ‘অংশুমানের ছবি’, ‘তখন তেইশ’-এর মতো ছবিতে তাঁকে সুরকার হিসেবে পাওয়া গিয়েছে। জন্ম ১৯৬০-এ কলকাতায়। সংগীত জীবন শুরু ‘লিটল বিটলস’ ব্যান্ড-এ। সুরকার সুধীন দাশগুপ্তর ভাই পরিমল দাশগুপ্তর উৎসাহেই কলকাতা ইয়ুথ ক্যয়ারে যোগদান। ২০১০-এর বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত সাউথ এশিয়ান গেমস-এর মিউজিক অ্যারেঞ্জারও ছিলেন তিনি। সম্প্রতি, নীতীশ রায়ের ছবি ‘তদন্ত’-র সংগীত পরিচালনা করলেন রকেট।

একশো পেরিয়ে

তাঁর আত্মজীবনীর নাম একশো বছরের সাতশো কথা! ১৯২৯ সালে তাঁর গান শুনে রবীন্দ্রনাথ মুগ্ধ হয়েছিলেন আগরতলার উমাকান্ত অ্যাকাডেমিতে। অমিয়কুমার চট্টোপাধ্যায় ১৯৩৫ সালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের হাত থেকে স্বর্ণপদক গ্রহণ করেন। ছেলেবেলা থেকেই ফুটবলটাও গভীর আগ্রহের সঙ্গে খেলতেন। যাদবপুরের হয়ে ‘ইলিয়ট শিল্ড’-এ দশটি গোল করে ক্রীড়ামোদীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। এ থেকেই পরে ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান ক্লাবে প্রতিনিধিত্ব। ১৯১৪ সালের ২৯ মার্চ পূর্ববঙ্গের কুমিল্লা জেলায় জন্ম। বাবা ব্রজেন্দ্রকুমার চট্টোপাধ্যায় ত্রিপুরা রাজদরবারে উচ্চপদে কর্মরত ছিলেন। অমিয়কুমার আমেরিকার কর্নেল ও ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স ও ডক্টরেট। ১৯৩৫-৭১ যাদবপুর, পিলানি, ইলিনয় ও মেসরা-য় অধ্যাপনা করেছেন। ১৯৮১-তে অবসর নেন। শতবর্ষে সংবর্ধিত হয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে, একশো পেরিয়েও চোখে চশমা পরতে হয় না, হাঁটতেও লাঠিতে ভর দেওয়ার দরকার পড়ে না তাঁর। শতবর্ষের সুস্থ, তরতাজা যুবকের সময় কাটছে ফেলে আসা জীবনের স্মরণীয় স্মৃতিচিত্রগুলিকে লেখনীতে রূপ দিতে আর পছন্দের বই পড়ে! তাঁর কথায়, ‘চলাফেরার অভ্যাসটা না রাখলে যে একদম অথর্ব হয়ে যাব!’ একশো তিনে পা দিচ্ছেন আগামী কাল।

ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

city news in brief kolkata karcha cultural
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE