Advertisement
১৯ মার্চ ২০২৪

কলকাতার কড়চা

সময় বদলেছে, পাল্টে গিয়েছে চারপাশের কত কিছু। ছবির প্রেক্ষাপটেও এসেছে পরিবর্তন। কিন্তু একই ভালবাসা নিয়ে আজও সমান গতিতে এগিয়ে চলেছে এক শিল্পীর রেখা আর তুলির টান। রণেন আয়ন দত্তের কাজের সঙ্গে আম বাঙালির যেন একেবারে নাড়ির যোগ।

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৬ ০১:২৩
Share: Save:

সাত দশকের শিল্পজীবন ফিরে দেখা

সময় বদলেছে, পাল্টে গিয়েছে চারপাশের কত কিছু। ছবির প্রেক্ষাপটেও এসেছে পরিবর্তন। কিন্তু একই ভালবাসা নিয়ে আজও সমান গতিতে এগিয়ে চলেছে এক শিল্পীর রেখা আর তুলির টান। রণেন আয়ন দত্তের কাজের সঙ্গে আম বাঙালির যেন একেবারে নাড়ির যোগ। সে কালের তেলের বিজ্ঞাপন থেকে বাণিজ্যিক নানা পণ্য— সকল বিষয়েই তাঁর উৎকর্ষ পৌঁছে গিয়েছে শীর্ষবিন্দুতে।

অন্নদা মুন্সি রণেন আয়নকে নিয়ে আসেন বাণিজ্যিক শিল্পের জগতে। বিখ্যাত বিজ্ঞাপন সংস্থা জে ওয়াল্টার টমসন-এ দুই দশক চিফ আর্ট ডিরেক্টর ছিলেন রণেন আয়ন। টি বোর্ড, টাটা স্টিল, জবাকুসুম, উইলস-এর জন্য করা তাঁর প্রচার-পরিকল্পনা আজও অনেকেরই স্মৃতিতে অম্লান। ছবির সঙ্গে তাঁর প্যাভিলিয়ন, ম্যুরালও স্থায়ী মর্য‌াদা পেয়েছে।

স্টেট ব্যাঙ্কের জন্য আর্কাইভাল মিউজিয়ম তৈরি করা, কিংবা রাজা রামমোহন রায়ের স্মারক সংগ্রহশালা গড়ে তোলা, আবার দেশের প্রথম ভাসমান সামুদ্রিক সংগ্রহশালা— রণেন আয়নের বহুমুখী প্রতিভার স্বাক্ষর বহন করছে। এই সবের মধ্যে মিলেমিশে গিয়েছে বাণিজ্যিক ও সৃজনশীল কাজ, চারু ও কারু কলা। তৈরি হয়েছে এমন এক ঘরানা, যা আমাদের পথনির্দেশ করতে পারে।

সাত দশকের এই পথ চলায় আজও অবিরাম, অক্লান্ত তিনি। এই পথ চলাকে মনে রেখেই আয়োজিত হয়েছে একটি প্রদর্শনী। গত শনিবার গ্যালারি ৮৮–এ এই প্রদর্শনীর উদ্বোধনে হাজির ছিলেন শিল্পী নিজে। এখানে পুরনো কাজের সঙ্গেই প্রদর্শিত হয়েছে শিল্পীর সাম্প্রতিক কাজও। ‘আ পেরিস্কোপিক জার্নি থ্রু সেভেন ডিকেডস’ শীর্ষক এই প্রদর্শনীটি চলবে ১৪ মে পর্যন্ত, ১১-৭টা। সঙ্গে শিল্পীর দুটি সাম্প্রতিক রঙিন ছবির সঙ্গে পুরনো সাদাকালো ছবিটি প্রদর্শনী থেকে।

দারোগার কাহিনি

১৮৫৩ থেকে ১৮৬০ গিরিশচন্দ্র বসু নবদ্বীপ-শান্তিপুর-কৃষ্ণনগর অঞ্চলে দারোগা ছিলেন। প্রবীণ বয়সে লেখা তাঁর কর্মজীবনের স্মৃতিকথায় সে আমলের ‘দস্যুদিগের কীর্ত্তিকলাপ’ ও ‘পুলিশের কার্য্যপ্রণালী’র যে বর্ণনা পাওয়া যায়, আধুনিক গবেষকদের কাছে তা আকরসূত্রের গুরুত্ব পেয়েছে। শুধু গোয়েন্দাগল্প নয়, এ রীতিমতো সমাজচিত্র। গিরিশচন্দ্র সেকালের দারোগাদের মধ্যে বিশেষ শিক্ষিত ছিলেন, পনেরো বছর তিনি হিন্দু কলেজে পড়েছেন। নীলবিদ্রোহের সময় তিনি চাষিদের পক্ষ নেন, নীল কমিশনে সাক্ষ্যও দেন। স্মৃতিকথায় অবশ্য নীলকর সাহেবদের গুণের কথাও বলেছেন। তবে তাঁর লেখায় সব থেকে ভাল ফুটেছে প্রত্যক্ষ দেখা নানা চরিত্র, সাহেব ম্যাজিস্ট্রেট, জমিদার কি নীলকুঠির নায়েব-গোমস্তা। সেকালের দারোগার কাহিনী প্রথম প্রকাশিত হয় ১৮৮৮-তে। অলোক রায় ও অশোক উপাধ্যায় সম্পাদিত পরিবর্ধিত সংস্করণ (অক্ষর প্রকাশনী) প্রকাশ পেল সদ্য, দীর্ঘ ভূমিকা, টীকা ছাড়াও আছে গিরিশচন্দ্রের আরও দুটি দুর্লভ রচনা।

চিত্তচর্চা

আমাদের মনন আর সৃজন কী ভাবে সভ্যতার ক্রমবিকাশে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে উত্তরোত্তর, তা নিয়েই বলবেন স্বামী শাস্ত্রজ্ঞানন্দ, রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দির, বেলুড় মঠের অধ্যক্ষ। দীনেশচন্দ্র সেন জন্ম-সার্ধশতবর্ষ স্মারক বক্তৃতা: ‘আমাদের চিত্তচর্চা’। ২৩ এপ্রিল সন্ধে সাড়ে ৬টায় সাধারণ ব্রাহ্ম সমাজের উপাসনা মন্দিরে (২১১ বিধান সরণি)। পৌরোহিত্য করবেন অলোক রায়, প্রারম্ভিক কথনে স্বামী শিবপ্রদানন্দ, বড়িশা রামকৃষ্ণ মঠের অধ্যক্ষ। প্রকাশিত হবে সূত্রধর-এর মননবৈভবী পুস্তিকামালা: দীনেশচন্দ্র সেনের বাঙালার বিলুপ্ত সম্পদ কথকতা, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মাতৃভাষা ও সাহিত্য, ধূর্জটিপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের হীরেন্দ্রনাথ দত্ত, প্রতুলচন্দ্র সরকারের যাদুবিদ্যা ও বাঙ্গালী, শ্রীজীব ন্যায়তীর্থের বাঙ্গলার সংস্কৃত পণ্ডিত সমাজ, ভবতোষ দত্তের বাঙ্লায় অর্থনীতি চিন্তার ও চর্চার ইতিহাস, এবং রমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের যদু ভট্ট। আয়োজনে সূত্রধর।

বিচিত্র গল্প

তেলাপিয়া মাছের ফুড ভ্যালু রুই কাতলার চেয়ে ঢের বেশি। এই মাছের ঝোল-ভাত খেয়ে এক বার ইথিওপিয়ার আবেবে বিকিলা অলিম্পিকে ম্যারাথন রেস দু’ঘণ্টা তেরো মিনিটে শেষ করে স্বর্ণপদক পান। তখনই জানা যায় ওই দেশে প্রচুর পুকুর এবং পুকুরভর্তি তেলাপিয়া। শস্তায় প্রচুর প্রোটিন পায় বলেই সাহেবদের সঙ্গে সমানে টক্কর দিতে পারে। কিংবা, বাইশ বছরের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিয়েতে ব্যয় হয়েছিল ৪৮৩২ টাকা ৩ পাই (হিসেব অসম্পূর্ণ)। বা নিউ আলিপুরে উত্তমকুমারের বাড়ি তৈরি হচ্ছে। রোজ সকালে তিনি কাজ দেখতে যান। তার বহু আগে থেকেই মেয়ে-বউরা ভিড় করে দাঁড়িয়ে থাকে। অগত্যা উত্তমের কাছে স্বামীদের আর্জি— দোহাই আপনি অন্য সময় আসুন, আপনার জন্য দেরিতে রান্না হচ্ছে, তাই অফিসও লেট, আমাদের বাঁচান। সম্প্রতি প্রকাশিত বিজনকুমার ঘোষের ‘বাজার সরকারের ডায়েরি’-র দ্বিতীয় খণ্ড বহু বিচিত্র (লালমাটি) বইটি এ রকমই নানান স্বাদের ঘটনায় ঠাসা। লেখক বাইশ বছর ধরে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ‘বাজার সরকার’ নামে ও স্বনামে নিয়মিত কলাম লিখছেন। এটি তা থেকেই সংকলন।

টিভির সেরা

কখনও ১৯৮৯, সোভিয়েত রাশিয়া শাসিত পূর্ব ইউরোপের নিষেধাজ্ঞার দেওয়াল ভেঙে পড়ছে, আবার কখনও ১৯৪৪, নাতসি অত্যাচারের দেওয়াল নড়বড়ে... ইতিহাসের এ সমস্ত সন্ধিক্ষণ বহুবিধ ঘটনা আর অনুষঙ্গে জড়িয়ে হাজির এ বার এ শহরে। নানা দেশের সেরা টিভি অনুষ্ঠান থেকে অভিজিৎ দাশগুপ্তের উদ্যোগে বাছাই কয়েকটি দেখাচ্ছে ইনপুট সোসাইটি: ‘মিনি ইনপুট... বেস্ট অব ওয়ার্ল্ড টিভি’। সঙ্গে গ্যেটে ইনস্টিটিউট ও ফোরাম ফর ফিল্ম স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যালায়েড আর্টস। ২২-২৪ এপ্রিল ম্যাক্সমুলার ভবনে। অন্য দিকে আজ নন্দনে সন্ধে ৬টায় দেখানো হচ্ছে স্বস্তিসুন্দরের ছবি ‘র‌্যাগস অব টাইম’। নিরীক্ষাময় পনেরো মিনিটের এ-ছবিটির কথাবস্তু চেনাতে পরিচালক ব্যবহার করেছেন একটি বাক্য: ‘আমার তুমি যখন অসীম, তোমার আমি নৈঃশব্দ্যে রচিত হই।’ আর ভবানীপুর ফিল্ম সোসাইটির উদ্যোগে নন্দনে ১৯ এপ্রিল সন্ধে ৬টায় নজরুলের গল্প থেকে বাংলাদেশের পরিচালক গীতালি হাসানের ছবি ‘প্রিয়া তুমি সুখী হও’।

দ্বিভাষিক

মা আসতে পারেননি, তাই মনখারাপ হয়ে গিয়েছে তাঁর, বলছিলেন নন্দনা সেন, ‘তবে সৌভাগ্য যে জয় গোস্বামী এসেছেন বইটি প্রকাশ করতে।’ বাংলা মূল সহ নন্দনার অনুবাদে বেরল নবনীতা দেবসেনের মেক আপ ইয়োর মাইন্ড/ টোয়েন্টি ফাইভ পোয়েমস অ্যাবাউট চয়েস (আইইউনিভার্স)। গত শনিবার সন্ধেয় অক্সফোর্ড বুকস্টোরে প্রকাশের সময় এ-বইয়ের কবিতাগুলির বৈশিষ্ট্য চেনাচ্ছিলেন জয়, ‘শব্দের স্তব্ধতা দরকার। নৈঃশব্দ্যের এমন আশ্চর্য ব্যবহার নবনীতাদির এই কবিতাগুলোয়, যেই শেষ হয়ে যাচ্ছে কাগজের পাতায়, শুরু হয়ে যাচ্ছে আমার মনে।’ নিজের অনুবাদের কথা বলার সময় নন্দনাও স্বীকার করলেন, কত কম শব্দে কত বেশি কথা বলা যায়, তার প্রমাণ এই কবিতাগুলি। বইপ্রকাশ ও তজ্জনিত কথাবার্তার পরে জয় পড়লেন নবনীতার মূল রচনা, নন্দনা নিজের ইংরেজি অনুবাদগুলি। অভিনেত্রী নন্দনা ছোটদের জন্যও লেখেন, আজ অক্সফোর্ড বুকস্টোরে ৪টেয় তাঁর লেখা মাম্বি অ্যান্ড দ্য ফরেস্ট ফায়ার (পাফিন ইন্ডিয়া) প্রকাশিত হবে। থাকবেন অনুপম রায়, আছে ছোটদের নিয়ে অনুষ্ঠানও।

নতুন গান

রবীন্দ্রসংগীতের রেকর্ড দিয়েই আত্মপ্রকাশ। আধুনিক ও শ্যামাসংগীতের রেকর্ড বের হয় পরে। শিল্পী অগ্নিভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেড়ে ওঠা সাংগীতিক পরিবারে। যেখানে অন্যতম চর্চার বিষয় ছিল সলিল চৌধুরীর গান। সম্প্রতি, শিল্পীর ষোলোটি গানে সমৃদ্ধ অ্যালবাম ‘ও আলোর পথযাত্রী’ প্রকাশিত হল সারেগামা থেকে। এই অ্যালবামে সলিল চৌধুরীর মূল সংগীত আয়োজনকে অবিকৃত রাখা হয়েছে। অ্যালবামে শোনা যাবে, ও আলোর পথযাত্রী, ধরণীর পথে পথে, ঠিকানা, ধন্য আমি জন্মেছি মা, উথালি পাথালি আমার বুক, ঢেউ উঠেছে কারা টুটছে, হেই সামালো, গহন রাতি ঘনায়, গাঁয়ের বধূ, শোন কোন একদিন, কে যাবি আয়, সেই মেয়ে-র মতো গান।

সমকালীন

প্রখর গ্রীষ্ম বা নির্বাচনের উত্তাপ এতটুকু দমাতে পারেনি বঙ্গরঙ্গমঞ্চকে। নতুন নতুন ভাবনা ও ভঙ্গির থিয়েটার লাগাতার মনস্ক করে তুলছে বাঙালিকে। যেমন রঙ্গপট-এর নতুন প্রযোজনা ‘কৃষ্ণপক্ষ’ প্রায় একটি সমকালীন রাজনৈতিক ধারাভাষ্য। মৌলবাদ, অসহিষ্ণুতা, আধিপত্যবাদ বা রেজিমেনটেশন-এর বিরুদ্ধ স্বর দেবতোষ দাশ রচিত নাটকে। বহুস্বরকে এক ছাঁচে ঢালার চেষ্টা চলছে সর্বত্র, সেই অস্থির সময়টার দিকে সরাসরি আঙুল তোলা হয়েছে এ-নাটকে। ‘তথাগত’-খ্যাত এই নাট্যগোষ্ঠীর কর্ণধার তপনজ্যোতি এটিরও নির্দেশনা ও মুখ্য অভিনয়ে। প্রথম অভিনয় ২০ এপ্রিল সন্ধে সাড়ে ৬টায় তপন থিয়েটারে, সঙ্গে মহড়ার ছবি। অন্য দিকে দেশকালকে সমসময়ের প্রেক্ষিতে উপস্থাপনার জন্যে হাবিব তনবিরের ‘চরণদাস চোর’ অবলম্বনে কলকাতা ইউটোপিয়ান-এর ‘চরণদাস’— রাঢ় বাংলার কথ্য ভাষায়। নামচরিত্রে সতীশ সাউ। বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্যের পরিচালনায় অ্যাকাডেমিতে ২১ এপ্রিল সন্ধে ৬টায়। নাট্যগোষ্ঠীটির দশ বছর পূর্তি উপলক্ষে চন্দন সেনকে সম্মাননায় দেবেশ চট্টোপাধ্যায়। আবার মূল্যবোধের লড়াই হাওড়ার শিল্পীসংঘের ‘যুধিষ্ঠিরবাবু’ নাটকে। প্রচেত গুপ্তের গল্প নিয়ে তীর্থঙ্কর চন্দ রচিত নাটকের নির্দেশক সীমা মুখোপাধ্যায়। ২৪ এপ্রিল সন্ধে সাড়ে ৬টায় অ্যাকাডেমিতে।

সুস্থ থাকতে

বয়েস হলে তিরিশ বছর, ব্লাডশুগার টেস্ট প্রতি বছর’— এই স্লোগানই ‘ডায়াবেটিস অ্যাওয়ারনেস অ্যান্ড ইউ’ নামক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির মূলমন্ত্র। ওরা ২০০৬ সাল থেকে সাধারণ মানুষ, ছাত্রছাত্রী এমনকী কর্পোরেট স্তরেও ডায়াবেটিসের প্রতিকার ও সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষে নানান কর্মসূচিতে ব্যস্ত। অ্যাম্বুল্যান্স, বিনামূল্যে ইনসুলিন, প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং চিকিৎসা পরিষেবাও এদের কর্মকাণ্ডের মধ্যে পড়ে। সদ্য পালিত বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসে এ বার তারাই ড. দেবাশিস বসু ও কিংশুক দে-র তত্ত্বাবধানে নির্মিত শর্ট ফিল্ম ‘ডে’-তে গল্পের মোড়কে দেখাল ডায়াবেটিসের প্রতিকার এবং সুস্থ থাকার উপায়। অভিনয়ে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, পায়েল সরকার, ডলি বসু এবং দেবজ্যোতি মিশ্র প্রমুখ।

নবীন শিল্পী

ছেলেবেলা থেকেই অভিনবত্বের প্রতি তাঁর প্রবল আকর্ষণ। জন্মদিনে জামাপ্যান্টের ছিট উপহার পেলেই সঙ্গে সঙ্গে ‘নতুন’ ডিজাইনের পোশাক বানানোর তাগিদে পাড়ার দরজির শরণাপন্ন হতেন। ইচ্ছে ছিল বড় হয়ে ফ্যাশন ডিজাইনিং নিয়ে পড়ার, কিন্তু পড়ছেন আইন নিয়ে। অভিনয়ে, লোকগানে যথেষ্ট পারদর্শী, ছবি আঁকাতে সিদ্ধহস্ত তেইশ বছরের ফ্যাশন ডিজাইনার ঋক। চিন্তাভাবনায় ও শিল্পসুষমায় তিনি অন্যদের চেয়ে স্বতন্ত্র। তাঁর হাতে যখন থাকে রং-তুলি-পেনসিল, তখন পোশাকপরিচ্ছদ হয়ে ওঠে ক্যানভাস। নিজের সংস্থার ‘থ্রেডবাবা’ নামকরণের কারণ? ‘এক, ‘থ্রেড’ মানে মা, আর ‘বাবা’ মানে বাবা— বাবা-মা’র কাছে উৎসাহ না পেলে কাজটা করতে পারতাম না। অন্য দিকে, ‘থ্রেড’ মানে সুতো, যা আমার রুটিরুজির উৎস, আর ‘বাবা’ মানে এখানে নতুন রূপ।’ তিনি প্রায়-বিস্মৃত শিল্পকলা পুনরুদ্ধারে সচেষ্ট। তাই তাঁর বানানো জামাকাপড়ের নকশায় ফুটে ওঠে মধুবনী, গোন্দ, মায়াপল্লি, কোনাম, থিয়ামের প্রাচীন চিত্রকলা বা আদিবাসী শিল্পনিদর্শন। ওড়িশা, ত্রিপুরা, অন্ধ্রপ্রদেশ, অসম, ফুলিয়া— বিভিন্ন জায়গার বিভিন্ন রকম গামছার ওপর বানিয়েছেন নিজের ফ্যাব্রিক প্যালেট। জামাকাপড়ে ব্যবহৃত তাঁর সমস্ত রঙই ভেষজ বা জৈব। তাঁর কালেকশনে এখন গামছার শার্ট, পঞ্জাবি, ফতুয়া, টি-শার্ট, লেহঙ্গা, স্কার্ট, শাড়ি, ম্যাক্সিড্রেস ইত্যাদি ইত্যাদি। তাঁর কথায়, ‘শুধুমাত্র র‌্যাম্প-পোশাক নয়, সকলের সামর্থ্যের মধ্যে ঐতিহ্যবাহী পোশাক তৈরিই আমার লক্ষ্য।’ সল্ট লেক সিটি সেন্টার ওয়ান-এ সম্প্রতি শেষ হল শিল্পীর একক প্রদর্শনী।

বিপ্লবী

তাঁর ভারতের পণ্য বইটি পড়ে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, ‘বইখানি বহুমূল্য তথ্যে পরিপূর্ণ। লেখক বহু অনুসন্ধানে ইহাকে সম্পূর্ণতা দিয়াছেন। সেজন্য তিনি পাঠকমাত্রেরই নিকট কৃতজ্ঞতা ভাজন।’ আবার, ফ্যামিনস ইন বেঙ্গল, ১৭৭০-১৯৪৩ বইটির মুখবন্ধে অমর্ত্য সেন লিখলেন, ‘দ্য বুক পুটস টুগেদার আ গুড ডিল অব পার্টিন্যান্ট ইনফর্মেশন অ্যাবাউট দ্য ফ্যামিন, অ্যালং উইথ অ্যানালিসিস, কোশ্চেনিং অ্যান্ড অ্যাসেসমেন্ট।...’ সুখের কথা, সম্প্রতি বইটি আবার প্রকাশিত হয়েছে বঙ্গীয় জাতীয় শিক্ষা পরিষৎ থেকে। পণ্ডিত, লেখক, বিপ্লবী কালীচরণ ঘোষের জন্ম ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দের ২৩ জুন, মাতামহের আলয়ে। বাবা শ্যামাচরণ ঘোষ ছিলেন সরকারি অফিসার। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার কোদালিয়া গ্রামে বড় হওয়া কালীচরণ হরিনাভি অ্যাংলো-স্যানসক্রিট স্কুল, রিপন কলেজ (সুরেন্দ্রনাথ কলেজ) ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করেন। তবে রাজনৈতিক কারণে আত্মগোপনের জন্য তিনি শেষ পর্যন্ত এম এ পরীক্ষা দিতে পারেননি। তিনি বিভিন্ন সময়ে নানা পত্রপত্রিকা সম্পাদনার সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন। বেশ কয়েক বছর কলকাতা কর্পোরেশনের ‘কমার্শিয়াল মিউজিয়াম’-এর তত্ত্বাবধায়ক ও পরে প্রচার-আধিকারিক হিসেবে কাজ করেন। বিপ্লবী আন্দোলন সম্বন্ধে কালীচরণের উল্লেখযোগ্য বইগুলি হল দ্য রোল অব অনার, দ্য ফুট প্রিন্টস অন দ্য রোড টু ইন্ডিয়ান ইনডিপেনডেন্স, জাগরণ ও বিস্ফোরণ (দুই খণ্ডে) ইত্যাদি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

calutural news city news
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE