Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা

১৮৬৬ সালে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত বোর্ন অ্যান্ড শেফার্ডের ইতিহাস মুছে গিয়েছে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে। বিভিন্ন সংগ্রহে শুধু টিকে রয়েছে কিছু ফটোগ্রাফিক অ্যালবাম ও প্রিন্ট। যেমন আদি পর্বের দাগেরোটাইপ ছবির নমুনা সংরক্ষিত আছে কেবল ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালেই। সেই সংগ্রহ থেকেই এ বার আয়োজিত হয়েছে বোর্ন অ্যান্ড শেফার্ড ও জনস্টন অ্যান্ড হফম্যান স্টুডিয়োর ৯৬টি ছবির প্রদর্শনী ‘ফ্রোজ়েন ইন টাইম’।

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

আলোকচিত্রে সে কালের কলকাতা

আন্তর্জাতিক স্তরে ফটোগ্রাফি উদ্ভাবনের সঙ্গে সঙ্গেই তা কলকাতায় পৌঁছে গিয়েছিল। ইউরোপীয়দের হাতে দ্রুত গড়ে উঠেছিল একের পর এক ফটোগ্রাফিক স্টুডিয়ো। পিছিয়ে ছিলেন না বাঙালিরাও। অথচ উনিশ ও বিশ শতকের গোড়ায় কলকাতায় তোলা সেই সব ছবি আজ কোথায়? ১৯৭০-৮০’র দশকে বিপুল অনুসন্ধানেও সিদ্ধার্থ ঘোষ বাঙালির ফটোগ্রাফি চর্চার সামান্য নিদর্শনই উদ্ধার করতে পেরেছিলেন। ১৮৬৬ সালে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত বোর্ন অ্যান্ড শেফার্ডের ইতিহাস মুছে গিয়েছে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে। বিভিন্ন সংগ্রহে শুধু টিকে রয়েছে কিছু ফটোগ্রাফিক অ্যালবাম ও প্রিন্ট। যেমন আদি পর্বের দাগেরোটাইপ ছবির নমুনা সংরক্ষিত আছে কেবল ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালেই। সেই সংগ্রহ থেকেই এ বার আয়োজিত হয়েছে বোর্ন অ্যান্ড শেফার্ড ও জনস্টন অ্যান্ড হফম্যান স্টুডিয়োর ৯৬টি ছবির প্রদর্শনী ‘ফ্রোজ়েন ইন টাইম’। মূলত কলকাতারই ছবি— বিখ্যাত সব বাড়িঘর, এলাকা, নানা দ্রষ্টব্য— কিছুর অস্তিত্ব আছে, কিছু শুধুই স্মৃতিধার্য (সঙ্গে সে কালের হাইকোর্টের ছবি, জনস্টন অ্যান্ড হফম্যান)। ভিক্টোরিয়ার কুইন্স হল/সেন্ট্রাল রোটান্ডায় ৩০ জুলাই বিকেল সাড়ে ৫টায় উদ্বোধন করবেন রঘু রাই, প্রদর্শনী চলবে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এটি কিউরেট করেছেন গুয়াহাটি আইআইটি-র ইতিহাসের শিক্ষক রানু রায়চৌধুরী, আলোকচিত্রের ইতিহাসই তাঁর চর্চার বিষয়। এই প্রদর্শনীতেই থাকছে একদা কলকাতায় স্থাপিত, কিন্তু বর্তমানে অপসারিত ক্যানিং ও হার্ডিঞ্জের মূর্তির ছবি। শহরের প্রকাশ্য স্থানে স্থাপিত মূর্তি সত্যিই কতটা চোখ টানে? কী শিল্পমূল্য তাদের দিই আমরা? ব্রিটিশ বাস্তববাদী ঘরানার ওই সব মূর্তি থেকে শুরু করে স্বাধীনতা-উত্তর কালে স্থাপিত নানা মূর্তির প্রসঙ্গে বিচার-বিশ্লেষণ করবেন তপতী গুহঠাকুরতা, ৩ অগস্ট বিকেল সাড়ে ৫টায় ভিক্টোরিয়ার লাইব্রেরি ভবনের নতুন কনফারেন্স হলে: ‘হোয়াই স্ট্যাচুজ় ম্যাটার? দ্য চেঞ্জিং ল্যান্ডস্কেপ অব ক্যালকাটাজ় কলোনিয়াল অ্যান্ড পোস্টকলোনিয়াল স্ট্যাচুয়ারি’।

খোলা হাওয়া

খোলা হাওয়া নাটকের দৃশ্য।

অশোকনগর নাট্যমুখ-এর বার্ষিক নাট্যোৎসব— খোলা হাওয়া-৫। গোবরডাঙা সংস্কৃতি কেন্দ্রে, ২-৫ অগস্ট। উদ্বোধন করবেন ব্রাত্য বসু, তার পর আয়োজক নাট্যগোষ্ঠীর ‘সময়যান’ (সঙ্গে তারই দৃশ্য), ব্রাত্যই নাটকটির লেখক। এর পরে অসমের নাটক ‘ইথাৰৰ ইড়িকা’। এ দেশের অস্থির সময় ও তার নানান সঙ্কট নাটকগুলিতে। ঝাড়খণ্ড থেকে হৃষিকেশ লালের নাটক ‘ফিরোজা’, কোচবিহারের ‘ঠিকানা’ (অনুভব), কালিন্দী ব্রাত্যজন-এর নবতম নাট্য বাদল সরকারের ‘শনিবার’ অবলম্বনে ‘ওঃ স্বপ্ন’ (নির্দেশনায় পৃথ্বীশ রানা), বিহারের দ্য লেফ্ট থিয়েটারের ‘হরিজন গাথা’। শেষ দিনে বিভাস চক্রবর্তীর হাতে সম্মাননা তুলে দেবেন ওড়িশা নাট্যচেতনার নির্দেশক সুবোধ পট্টনায়েক। অভিনীত হবে অন্য থিয়েটার-এর ‘জগাখিচুড়ি’। আঞ্চলিক থিয়েটারের ভবিষ্যৎ এবং সাহিত্য ও নাটকের সম্পর্ক নিয়ে দু’টি আলোচনায় থাকবেন নাট্যব্যক্তিত্বরা। শেষ নাটক কালিয়াগঞ্জ অনন্য থিয়েটার-এর ‘অশ্বত্থামা’।

দুর্লভ নথি

১৮২৬ সালে ব্রহ্মদেশের সঙ্গে যুদ্ধে সাফল্যের পরেই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি উত্তর-পূর্ব ভারতে পা রাখে। তবে গারো, নাগা, জয়ন্তিয়া, লুশাই, কুকি-দের পদানত করা খুব সহজ হয়নি। সেই দীর্ঘ প্রক্রিয়ার অনেকটাই লুকিয়ে আছে পুরনো নথির স্তূপে। ‘‘ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল নিয়ে অসংখ্য নথি আছে, সে সবেরই কিছুটা বেছে নেওয়া হয়েছে। স্বাধীনতা-পূর্ব আধুনিক ভারত নিয়ে যা বইপত্র পাওয়া যায়, সেগুলিতে উত্তর-পূর্বাঞ্চল উপস্থাপিত হয়নি যথাযথ ভাবে। তন্নিষ্ঠ পাঠক থেকে গবেষকের কাছে সেই খামতিটাই পূরণ করে দেবে এ বই।’’ বললেন রাজ্য লেখ্যাগারের অধিকর্তা সীমন্তী সেন। নর্থ ইস্ট (১৮৩০-১৮৭৩)/ সিলেক্ট ডকুমেন্টস পার্ট ১ বইটির মুখ্য সম্পাদক তিনিই, সম্পাদনায় শর্মিষ্ঠা দে ও বিদিশা চক্রবর্তী। ৩১ জুলাই বেলা ৩টেয় ৪৩ শেক্সপিয়ার সরণির নতুন ভবনে বইটির উদ্বোধন।

মিলাবে মিলিবে

সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়িয়ে দেশকে অস্থির করে তোলার পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে এগিয়ে এসেছে ছোট-বড় অনেক সংগঠনই। এর মধ্যে ‘অহর্নিশ’ পত্রিকার সদস্যরা গত এক বছর ধরে মূলত গ্রামাঞ্চলে গিয়ে লাগাতার প্রচার চালাচ্ছেন, মানুষকে সচেতন করতে সভা করছেন। তারই অঙ্গ হিসেবে অহর্নিশ, বুকফার্ম এবং উত্তরপাড়া জীবনস্মৃতি একটি সভার আয়োজন করেছে জীবনানন্দ সভাঘরে, ১ অগস্ট বিকেল সাড়ে পাঁচটায়। ‘মুসলমান হিন্দু: মিলাবে, মিলিবে’ অনুষ্ঠানে উঠে আসবে ভাষার ক্ষেত্রে গ্রহণ ও বর্জন, স্থাপত্যে শৈলীতে প্রভাব কিংবা প্রতিবেশীকে চেনা-চেনানোর অভিজ্ঞতার বিবরণ। থাকছে গ্রন্থপাঠ, কবিতা ও গান। শঙ্খ ঘোষ ছাড়াও থাকবেন বিশ্বজিৎ রায়, সাবির আহমেদ প্রমুখ।

মুদ্রণ প্রদর্শনী

গত অক্টোবরে হুগলির উত্তরপাড়ায় লিটল ম্যাগাজ়িনের মুদ্রণ নিয়ে একটি কর্মশালা আয়োজিত হয়। কাজ ও কথা হয় ছাপা, বাঁধাই, হরফ, লে-আউট, মুদ্রণপ্রযুক্তি নিয়ে। ‘মেন্টর’ হিসেবে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের অভিজ্ঞজনরা। ওই কর্মশালার কাজগুলির নির্বাচিত একটি অংশ নিয়ে এ বার আয়োজন এক প্রদর্শনীর: ১-৪ অগস্ট (রোজ ৩-৭:৩০), বই-চিত্র, কলেজ স্ট্রিটে। থাকছে দার্জিলিং-এর পাহাড়ি এলাকা থেকে প্রকাশিত ‘অবহেলিত’ পত্রপত্রিকার মুদ্রণের অজানা ইতিহাস। এখানেই কর্মশালার কাজকর্ম নিয়ে ‘বোধশব্দ’ প্রকাশ করবে অভিনব একটি বই, মুদ্রণ কর্মশালা: লিটল ম্যাগাজিন: ফাইল কপি। ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন ফর দি আর্টস-এর সহায়তায় আয়োজিত কর্মশালা ও এই প্রদর্শনী-সহ গোটা প্রকল্পটির পরিকল্পনা ও রূপায়ণের দায়িত্বে এবং প্রকাশিতব্য বইটির সম্পাদনায় ‘বোধশব্দ’ পত্রিকার সম্পাদক সুস্নাত চৌধুরী।

গিরিশ-স্মরণ

নাট্যকার, নাট্য-পরিচালক, নাট্যশিক্ষক, অভিনেতা গিরিশচন্দ্র ঘোষের ১৭৫তম জন্মবর্ষ শুরু হয়ে গিয়েছে। সাধারণ রঙ্গালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, শ্রীরামকৃষ্ণের শিষ্য গিরিশচন্দ্রের লেখা নাটকের সংখ্যা আশিরও বেশি। প্রায় সবগুলি সে কালের বিভিন্ন মঞ্চে অভিনীত হয়েছে। রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। ৩১ জুলাই সন্ধে ৭টায় স্বামী বিবেকানন্দের পৈতৃক ভবন ও সংস্কৃতি কেন্দ্রের রামকৃষ্ণ মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে স্বামী মাধবানন্দ স্মারক বক্তৃতা, বিষয় ‘রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দ ভাবালোকে গিরিশচন্দ্র’, বক্তা তাপস বসু। উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রের সম্পাদক স্বামী পূর্ণাত্মানন্দ। স্বামী মাধবানন্দ ছিলেন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের নবম অধ্যক্ষ (১৮৮৮-১৯৬৫), প্রেসিডেন্সি কলেজের ইংরেজি সাহিত্যের কৃতী ছাত্র। তিনি মন্ত্রদীক্ষা নেন শ্রীমা সারদাদেবীর কাছে, আর সন্ন্যাস নেন স্বামী বিরজানন্দজির কাছে।

সহজ পরব

এমন সব শিল্পীকে খুঁজে আনতেন, যাঁদের কণ্ঠ কিংবা বাদ্যযন্ত্র কলকাতার বাঙালি শোনেইনি কখনও। এ ভাবেই কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্য তৈরি করেছিলেন ‘দোহার’, যার ভিত ছিল উত্তর-পূর্বাঞ্চলের লোকসঙ্গীত। সঙ্গীতের অঙ্গনে তেমনই আশ্চর্য উদ্যোগ ‘সহজ পরব’। কালিকাপ্রসাদের ভাবনা থেকে ২০১৪-য় ডানা মেলা ‘দোহার’ ও ‘লোপামুদ্রা প্রোডাকশন’-এর যৌথ প্রয়াসের এই অনুষ্ঠান কালিকার অকালপ্রয়াণে এক বছর বিরতির পর এ বারে ৩-৫ অগস্ট রবীন্দ্র সদন শিশির মঞ্চ জুড়ে, রোজ সন্ধে ছ’টায়। সংবর্ধিত করা হবে খন গানের শিল্পী তরণীমোহন বিশ্বাসকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE