Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সক্রিয় বাচ্চাই সুস্থ

সন্তানের ওজন কম হোক বা বেশি, শারীরিক সক্ষমতা বজায় রাখার জন্য প্রয়োজন নিয়মিত শারীরচর্চা। হতে পারে তা খেলার ছলেই। রইল হদিশসন্তানের ওজন কম হোক বা বেশি, শারীরিক সক্ষমতা বজায় রাখার জন্য প্রয়োজন নিয়মিত শারীরচর্চা। হতে পারে তা খেলার ছলেই।

নবনীতা দত্ত
শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৯ ০০:০০
Share: Save:

যে কোনও বয়সের বাচ্চারই রোজ ব্যায়াম করা প্রয়োজন। শারীরিক ও মানসিক গঠনেও ব্যায়ামের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। বিশেষ করে বাচ্চাদের বড় হওয়ার সময়ে তারা যত বেশি শারীরচর্চা করবে, ততই ভাল। এখনকার দিনে বেশির ভাগ বাচ্চাই টিভি ও মোবাইল গেমে বুঁদ হয়ে থাকে। তার থেকে বার করে এনে খেলাধুলোয় তাকে আগ্রহী করে তোলার দায়িত্ব কিন্তু মা-বাবাকেই নিতে হবে। পেরেন্টিং কনসালট্যান্ট পায়েল ঘোষ বললেন, ‘‘শৈশবে নিউরোট্রান্সমিটারের খুব প্রয়োজন। যার মধ্যে রয়েছে সেরোটনিন ও এনডরফিন। এই দু’টি উপাদান বাচ্চার শরীরে যত থাকবে, বাচ্চার মধ্যে আত্মিক সন্তুষ্টি, কর্মদক্ষতা, প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব, জ্ঞান অর্জনের ক্ষমতা এই চারটি জিনিসও বাড়তে থাকবে। এই নিউরোট্রান্সমিটার তৈরি হয় শারীরচর্চার মাধ্যমে। ফলে তারা রোজ যত ঘাম ঝরাবে, ততই লাভ।’’

শারীরচর্চা জরুরি

•সকলের আগে প্রয়োজন খেলা। প্রত্যেকটি বাচ্চারই রোজ খেলা প্রয়োজন। এতে তারা মনেরও খোরাক পাবে, সঙ্গী পাবে, শরীরও ভাল থাকবে। তার সঙ্গে শিখবে সময়ানুবর্তিতা, সঙ্ঘবদ্ধতা, সহিষ্ণুতা। জীবনে জেতার মতোই ব্যর্থতাকেও মেনে নিতে শিখবে। তাই সন্তানকে খেলায় বাধা দেবেন না। এখনকার জীবনে অনেকেরই হয়তো বাচ্চাকে খেলতে নিয়ে যাওয়ার মতো অবসর থাকে না। সে ক্ষেত্রে সপ্তাহের দু’টো দিন অন্তত ওর খেলার ব্যবস্থা করুন। খোলা মাঠে ছেড়ে দিন। ওর সঙ্গে আপনিও একটু দৌড়ঝাঁপ করে নিতে পারেন। এতে আপনারও লাভ হবে বইকী!

•খেলাকে ওর এক্সট্রা কারিকুলারেও যোগ করতে পারেন। তার জন্য সাঁতারে ভর্তি করতে পারেন। বা ব্যাডমিন্টন, ক্রিকেট জাতীয় খেলাতেও ভর্তি করতে পারেন। এতে শারীরচর্চা তো হবেই। একই সঙ্গে ভবিষ্যতের জন্যও সে কিছুটা তৈরি হয়ে যাবে।

•বাচ্চারা কিন্তু মা-বাবাকে দেখেই শেখে। তাই ওর সামনেই হালকা কিছু ব্যায়াম আপনিও করতে পারেন। আপনাকে দেখে খুদেটিও হয়তো এগিয়ে এসে কয়েকটা পুশ আপ বা স্কোয়াট করে নিতে পারে।

•বাড়ির কাজে আপনার সন্তানের সাহায্য নিন। বাগান করায়, বাজার করায়, বিছানা গোছানোর মতো ছোট ছোট কাজে তাকেও সঙ্গে নিন। এতে অল্প অল্প করে সে-ও দায়িত্বশীল হবে। টানা বসে না থেকে কাজের ইনভল্ভমেন্ট বাড়বে।

•সাইক্লি‌ং খুব ভাল ব্যায়াম। তাই সন্তানকে সাইকেল উপহার দিতে পারেন। ও তো খুশি হবেই। কাজেও লাগবে। প্রয়োজনে বাড়ির ছাদে বা চৌহদ্দির মধ্যেই সাইকেলে কয়েক পাক ঘুরে আসতে পারবে সে।

•মা-বাবা দু’জনেই কর্মরত হলে সকালের দিকে হয়তো হাতে সময় থাকে না। কিন্তু বাড়ি ফেরার পরে তো কিছুটা সময় থাকে। ডিনারের পরে সন্তানকে নিয়ে হাঁটতে বেরোতে পারেন। এতে হাঁটাও হবে, সেই সঙ্গে খাবারও হজম হবে। রাতের দিকে পাড়ার গলি বা ফ্ল্যাটের কমপাউন্ডে ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টনও চলতেই পারে।

•ছুটির দিনে একটু অবসর পেলে গান চালিয়ে নাচতে পারেন। এতে খুদেটি বেশ উত্তেজিতও বোধ করবে। এই অ্যাক্টিভিটিতে সে আনন্দও পাবে। খেলার ছলে শরীরের ঘামও ছুটবে।

খাবারে রাশ টানুন

শরীরের গঠনে খাবারের ভূমিকাও সমান জরুরি। পায়েল ঘোষ জানালেন, ‘‘বড়রা যে ধরনের স্ট্রং কার্বোহাইড্রেট্‌স এড়িয়ে চলেন, সেটাই দরকার আপনার সন্তানের। তার জন্য ফ্যানাভাত দিতে পারেন। সেরোটনিন ও এনডরফিন উৎপাদনে এই ধরনের জটিল কার্বোহাইড্রেট্‌স খুব ভাল কাজ করে।’’

এ ছাড়াও রোজকার খাবারে প্রোটিনও রাখতে হবে প্রচুর পরিমাণে। মোদ্দা কথা, আপনার সন্তান যেন রোজ সুষম আহার পায়, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

মনে রাখবেন, সক্রিয় বাচ্চাই কিন্তু সুস্থ থাকে।

মডেল: অলিভিয়া, দীপ্তার্ক, রাইমা; মেকআপ: প্রিয়া গুপ্ত; ছবি: অমিত দাস; লোকেশন: লাহাবাড়ি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Health Excersize Kid
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE