ছবি: সুমন বল্লভ
কলকাতার সায়েন্স সিটি অডিটোরিয়ামে শনিবারের সন্ধেটা ছিল একেবারেই আলাদা একটা দিন। সুরের মায়ায় আবিষ্ট হয়ে ছিলেন হলভর্তি দর্শক। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘আগমনী’ বাঙ্ময় হয়ে উঠেছিল উস্তাদ আমজাদ আলি খানের আঙুলের জাদুস্পর্শে। তাঁর পিতৃদেব এবং গুরু হাফিজ আলি খানকে স্মরণ করে উস্তাদজি মা দুর্গাকে আবাহন করলেন দুর্গা রাগের মূর্ছনায়।
এর পর ইমনকল্যাণ। কল্যাণ ঠাটের অন্তর্গত এই রাগের পেলব স্পন্দন পরিব্যাপ্ত হল প্রতিটি দর্শকের অণু-পরমাণুতে।
উস্তাদজি এ বার সুরের মায়াজাল সৃষ্টি করলেন বিলাবল ঠাটের অন্তর্গত শঙ্করা রাগ দিয়ে। অল্প আলাপের পর দ্রুত শেষ করলেন তিনি।
উস্তাদজি স্মরণ করালেন আধুনিক উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের প্রাণপুরুষ আমির খসরুকে (১২৫৩-১৩২৫ খ্রিঃ)। মার্গসঙ্গীতে আমির খসরুর অবদানের কথা সংক্ষেপে বর্ণনা করলেন। জানালেন যে, অনেক নতুন রাগ, তাল, গজল, তারানার নতুন রূপে তিনি সমৃদ্ধ করেছিলেন সঙ্গীতজগৎকে। উস্তাদজি আমির খসরু রচিত তারানার কিছু অংশ গাইলেন তাঁর সুললিত কণ্ঠে। তার পর সেটিরই ঝংকার তুললেন সরোদে।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ বিভিন্ন রাগের উপর তাঁর বেশ কয়েকটি গানে সুর দিয়েছিলেন। গুরুদেবের এরকমই রাগাশ্রয়ী দু’টি গান বেছে নিলেন উস্তাদজি। তার পর খাম্বাজের অনন্য প্রয়োগে তিনি বাজালেন ‘কোন্ খেলা যে খেলব কখন্ ...’ এবং ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে...’
এ দিনের সুরসন্ধ্যা শেষ হল দরবারি চারুকেশীর অসাধারণ সুরমাধুর্যে। সঙ্গীতের মাধ্যমে এক স্থিতধী ঋষির মতো সুপ্রিম কনশাসনেসের সঙ্গে যেন একাত্ম বোধ করলেন উস্তাদ আমজাদ আলি খান।
পুরো অনুষ্ঠানটিতে যোগ্য সংগত করেছেন তবলায় শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পাখোয়াজে ফতে সিংহ গঙ্গানি। তাঁদের প্রতিভার বিচ্ছুরণ দেখা গেল, কিছুক্ষণ দু’জনের একক বাদনে এবং উস্তাদজির সঙ্গে সাথসংগতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy