Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

চেনা ডিম অচেনা রূপ

সিদ্ধ, ভাজা বা পোচ নয়, এ বার ডিম ধরা দিক অন্য রূপেসিদ্ধ, ভাজা বা পোচ নয়, এ বার ডিম ধরা দিক অন্য রূপে

রূম্পা দাস
শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৮ ০০:৩১
Share: Save:

সকালের প্রাতরাশে টোস্টের সঙ্গে ডিমের পোচ, দুপুরে ভাতের পাতে কষানো ডিমের লাল লাল ঝাল, বিকেলে অফিস থেকে বেরিয়ে টুক করে গরম গরম ডিমসিদ্ধ, রাতে রুটির সঙ্গে লঙ্কা-মরিচ দেওয়া নরম তুলতুলে ওমলেট... যে রূপেই ডিম ধরা দিক না কেন, তাকে স্বাগত না জানিয়ে উপায় নেই। বাঙালি মাছের মতো ডিমের প্রেমেও হাবুডুবু খায়। তাই সাবেক সিদ্ধ, ভাজায় আটকে নেই ডিম। ভিন্দালু, ধোকা, মাঞ্চুরিয়ান, হালুয়া, কাস্টার্ড... কী নেই সেই তালিকায়! সেই ডিম আবার এখন শিল্পের পর্যায়ে পৌঁছেছে। অনেক ক্ষেত্রে স্বাদটা প্রায় একই থাকলেও বদলে গিয়েছে তার রং-রূপ।

পিকল্‌ড এগ: লেবুর আচার শুনেছেন, লঙ্কার আচারও দিব্যি খেতে লাগে, কিন্তু ডিমের আচারের নাম শুনেছেন? লাল টুকটুকে পিকল্‌ড এগে এখন মজেছে সকলে। একটি সসপ্যানে বীট, ভিনিগার, জল, চিনি, নুন, দারচিনি একসঙ্গে ফুটিয়ে নিলেই হল। ভাল ভাবে সিদ্ধ করে খোসা ছাড়ানো ডিম ওই ফোটানো রসে সারা রাত ভিজিয়ে রাখলে বীটের রং ফুটে উঠবে তার গায়ে। বদলাবে স্বাদও। পরের দিনের জলখাবারে লাল টুকটুকে পিকল্‌ড এগের সঙ্গে টোস্ট খেয়ে দেখতে পারেন। মন্দ লাগবে না। শুধু বীটই নয়, ডিম পিকল্‌ড করতে পারেন হ্যালাপিনো, ট্যারাগন, স্টার অ্যানিস, হোয়াইট ভিনিগার দিয়েও।

ব্রুলি এগ: ডেজ়ার্টের তালিকায় ক্রিম ব্রুলি থাকলে তার হাতছানি এড়ানো মুশকিল। ক্রিম ব্রুলি বানাতে গেলে ক্রিমের যোগ্য জুড়িদার হয় ডিম। কিন্তু ডিমকে যদি একাই ব্রুলি করা যায়? সেই সমাধানও হাজির। ডিম মিনিট পাঁচেক সিদ্ধ করে খোসা ছাড়িয়ে নিন। লম্বালম্বি চিরে ডিমের উপরে সামান্য নুন, মরিচ গুঁড়ো আর চিনি ছড়ান। এ বার ব্লো টর্চের সাহায্যে ডিমের উপরের চিনি গলিয়ে নিন। নরম হলদেটে কুসুম, ক্যারামালাইজ়ড হয়ে যাওয়া চিনি মিলেমিশে ব্রুলি এগ কিন্তু এক্কেবারে অমৃত সমান।

কিয়োর্‌ড এগ: এটায় অবশ্য মূলত কুসুমকেন্দ্রিক। প্রায় সম পরিমাণ নুন ও চিনির মধ্যে কাঁচা ডিমের কুসুম অন্তত চার দিন ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করতে হবে। পরে সেখান থেকে কুসুম তুলে ধুয়ে, একশো পঞ্চাশ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে গরম করতে হবে। ঠান্ডায় প্রায় এক মাস এই কিয়োর্‌ড এগ রাখা যায়। সুপ, পাস্তা, স্যালাডে উপর থেকে কিয়োর্‌ড এগ কুরিয়ে পরিবেশন করাই দস্তুর।

টি ইনফিউস্‌ড এগ: ডিমের গায়ে মার্বেলের মতো ছোপ ধরেছে। অথচ আপনি ঠিক ঠাহর করতে পারছেন না, কী ভাবে হল? রহস্যটা লুকিয়ে রয়েছে চায়ে। এ ক্ষেত্রে ডিম যেমন সিদ্ধ করেন, তেমনই নুন-জলে সিদ্ধ করে নিতে হবে। তবে খোসা না ছাড়িয়ে আলতো করে ঠুকে খোসা ফাটিয়ে নিতে হবে মাত্র। অন্য দিকে জল, সয়া সস, চা পাতা, স্টার অ্যানিস, দারচিনি, লেবুর খোসা একসঙ্গে ফুটিয়ে নিতে হবে। এ বার খোসা সমেত ডিম সেই জলে সারা রাত ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন সকালে উঠে খোসা ছাড়ালেই দেখবেন, ডিমের সাদা অংশে কী সুন্দর দাগ ধরেছে!

আপসাইড ডাউন স্ক্র্যাম্বল্‌ড এগ: ডিম ফাটিয়ে স্ক্র্যাম্বল করার উপায় তো আমরা জানি। কিন্তু এ ক্ষেত্রে গল্পটা উল্টো। কাঁচা থাকা অবস্থায় ডিম ভাল করে নাড়িয়ে নিন। এতে কুসুম ডিমের খোলার মধ্যেই ফেটে বাকি সাদা অংশের সঙ্গে মিশে যাবে। এ বার সেই ডিম সিদ্ধ করে খোসা ছাড়ালে দেখবেন, গোটা ডিমটাই যেন কুসুমরঙা। ডিমের ভিতরেই স্ক্র্যাম্বল রহস্য খোলসা হল?

জাপানি ও ফরাসি ওমলেট: আমরা নিজেদের পছন্দ মতো পেঁয়াজ, লঙ্কা, নুন মিশিয়ে ফেটানো ডিম ভেজে ওমলেট করি। কিন্তু জাপানি ও ফরাসি ওমলেট তৈরির মধ্যেই বড়সড় পার্থক্য রয়েছে। ফরাসি ওমলেট অনেক বেশি ক্রিমি ও তুলতুলে হয়। ননস্টিক পাত্রে মাখন গরম করে নুন ও মরিচ মেশানো ফেটানো ডিম ঢেলে দেওয়া হয়। ওমলেট তৈরির শুরুতে পাত্রে তা খুন্তি বা স্প্যাচুলার সাহায্যে নাড়িয়ে নেওয়া হয়। ওমলেটের তলা জমতে শুরু করলে আলতো করে উল্টে নামিয়ে নিলেই হল। ফরাসি ওমলেটের ভিতরে নরম ক্রিমি ব্যাপার তৈরি। উল্টো দিকে জাপানি ওমলেট প্যানে অল্প অল্প করে দিয়ে ভাল করে ভেজে নিতে হয়। খানিকটা ভেজে রোল করে নিয়ে তার পরে আবার কাঁচা ডিম দেওয়া হয়। এর ফলে একটা বেশ মোটাসোটা রোলড ওমলেট তৈরি হয়। তার পরে মাঝখান থেকে কেটে পরিবেশন করলেই হল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Food Reciepe Egg
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE