টুপটাপ জল খসে প়়ড়ছে চুল থেকে, পিঠের উপরে। তোয়ালে দিয়ে চুলগুলো কোনওক্রমে মুড়ে পিঠের উপর ফেলে রেখে সাজপাঠের পালা। ত্বকচর্চা শেষে সেই অর্ধসিক্ত চুল মাথার উপর জড়ো করেই দুরন্ত গতিতে রাস্তায়। গাড়ির অপেক্ষা, বাইরের জগতের তাড়ায়। সময় নেই। হাত উলটে ঘড়ি দেখারও সময় নেই যে এখন। মুঠোফোনের জগতে বন্দি ঘড়ির কাঁটা। আর সেই কাঁটাদের গতি একটুও না কমিয়ে যদি চোখের পলকে সেরে ফেলা যায় চুলচর্চা! অবাক হবেন না। কেয়ারি করে খোঁপা বা বিনুনি করার সময় না থাকলেও চলবে। সিঁথিতে চিরুনি চালিয়ে রেখাপাত করার সময় আছে তো? তা হলেই হবে। চুলের সঙ্গে বদলে যাবে মুখের চেহারাও।
মাঝ বরাবর: সেই কোন যুগ থেকেই এই ধরনের সিঁথিতে মেয়েরা সাবলীল ও সুন্দর। চিরন্তন এই সিঁথি কিন্তু এখনও ইন। তবে আগেকার দিনে তো চুল খুলে রাখার তেমন চল ছিল না। এখন মাঝ বরাবর সিঁথি করে চুল খুলে রাখতে পারেন। স্ট্রেট চুল হোক বা ওয়েভি বা কার্লি সিঁথির মধ্যরেখা কিন্তু সব মুখেই ভাল মানায়।
ঘুরপথে: একটু তেরচা করে এই ধরনের সিঁথি করতে হয়। যে কোনও এক দিকে ভুরুর শেষ প্রান্তের ঠিক উপরের চুল থেকে সিঁথি শুরু হয়ে বাঁকা পথে তা মাথার পিছনে গিয়ে শেষ হবে। মাথার পিছনে যেখানে সিঁথি শেষ হবে, সেখান থেকে সামনের দিকে দাগ টানলে তা যেন অন্য ভুরুর শেষ প্রান্তে এসে মিলিত হয়। এই হিসেবটা মাথায় রাখলেই পেয়ে যাবেন ডায়াগনাল পার্টিং। ভারী মুখে এই ধরনের সিঁথি করলে মুখ সরু দেখায়। এই ধরনের সিঁথি করে পিছনের চুলে পনি বা বান করে নিতে পারেন।
অবিন্যস্ত: মাথায় যা চুলের বহর, সিঁথি না করলেও মোটা সিঁথি বেরিয়ে পড়ে। সে ক্ষেত্রে একটু অবিন্যস্ত ভাবে আঁকাবাঁকা পথে সিঁথিকে ঘুরিয়ে দেওয়া গেলে কিন্তু চুলের ফাঁক দিয়ে সাদা মাথা কম দেখা যাবে। এই ধরনের সিঁথি করতে খুব বেশি সময়ও লাগে না।
পার্শ্বচরিত্রে: এই ধরনের ভাগ মাথার যে কোনও একটা দিকেই করা হয়ে থাকে। সোজা কথায় যাকে বলে সাইড পার্টিং। বাঁ দিক বা ডান দিক ঘেঁষে চুল ভাগ করে নিন। তার পর মাথার ক্রাউন এরিয়া থেকে অর্থাৎ ব্রহ্মতালু থেকে বাকি চুল পিছন দিকে উলটে নিন।
ভি ফর ভিকট্রি: স্বাধীন, স্বাবলম্বী চরিত্রে এই যুগের নারী সফল। আত্মবিশ্বাসী নারীর সাফল্যের ছাপ থাকুক তার সিঁথিতেও। পুরো চুল মাথার উপর চিরুনি দিয়ে ভি-আকারে ভাগ করে নিন। এই ধরনের পার্টিংয়ে মুখের চেহারার সঙ্গে পালটে যাবে মনের মানচিত্রও।
আঁকাবাঁকা পথে যদি... সোজা কথায় যাকে বলে জ়িগজ়্যাগ। অর্থাৎ ছোট ছোট ভি আকারে কপালের সামনে থেকে ব্রহ্মতালু পর্যন্ত চুল ভাগ করে নিন। অনেকটা কুমিরের দাঁতের মতো দেখতে লাগবে।
মুখের আকার অনুযায়ী সিঁথি
• গোল মুখের জন্য সাইড পার্টিং বা ঘুরপথে সিঁথি করলেই ভাল দেখায়। জ়িগজ়্যাগ সিঁথিও মুখের গোল ভাব কাটিয়ে দেবে।
• লম্বাটে মুখে অবশ্যই সাইড পার্টিং বা অবিন্যস্ত সিঁথি।
• ডিম্বাকার মুখে জ়িগজ়্যাগ, মাঝ বরাবর সিঁথি, ভি ফর ভিকট্রি... মোটামুটি সব রকমের সিঁথিই ভাল মানাবে।
• চৌকো মুখে মাঝ বরাবর সিঁথি করে মুখের দু’পাশে চুল ফেলে রাখলে ভাল লাগবে। জ়িগজ়্যাগ সিঁথি এই ধরনের মুখে ভাল মানাবে।
• অনেক মুখের আকার আবার এই শ্রেণিবিভাগের মধ্যে না-ও আসতে পারে। সে ক্ষেত্রে সিঁথি করে পালটে পালটে দেখতে হবে, কোন ধরনের সিঁথি ভাল মানায়।
চুল যেমনই হোক না কেন, কেশবীথি তাকে দিতে পারে নতুন রূপ। চুলের সেই রূপটান এ বার আপনার হাতে।
মডেল: বিবৃতি, অঙ্কিতা, শ্রীলগ্না মেকআপ: কাজু গুহ
হেয়ার: সোমা
ছবি: দেবর্ষি সরকার
পোশাক: সুমন নাথওয়ানি (শ্রীলগ্না), নীল সাহা (বিবৃতি)
শুটিংস্পট: ভর্দে ভিস্তা ক্লাব,
উপহার বিল্ডিং, চকগড়িয়া
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy