নাটকের একটি দৃশ্য
মূল চিঠি বা লেখার পরেও কিছু কথা বাকি থেকে যায়। সেই বাকিটাই আমরা সংযোজন করি শেষে এসে ‘P.S.’-এ। P.S. ভালবাসা। নামের মধ্যে একটি ব্যঞ্জনা আছে। P.S. অর্থাৎ পোস্ট স্ক্রিপ্ট। বাংলায় যাকে বলি পুনশ্চ।
আমাদের অল্প বয়সে বিটল্সের ‘পি. এস. আই লভ ইউ’ গানটি বারবার শুনেও যেন মন ভরত না। মনে হয় এখনকার প্রজন্মকেও এ গান অনুপ্রাণিত করে, তাই এই নাটকের এমনতর নাম। তা, ভালবাসার এই নাটক মনে রসসঞ্চার করল বইকী!
নাটকের শুরু রেলওয়ে প্ল্যাটফর্মে। শহরতলি থেকে অসংখ্য ছেলেমেয়ে কাজে বা অকাজে আসছে কলকাতায়। কেউ বা শহর ছেড়ে যাচ্ছে। এরই মাঝে কোনও সম্পর্ক দানা বেঁধে উঠছে। আবার কখনও তা ভাঙছে। বন্ধুত্ব যেমন হচ্ছে, তেমনই ফাটলও ধরছে। প্রত্যহ এক দিনযাপনের গ্লানির পাশাপাশি আছে খুশির আমেজও।
এই সব নানা মুহূর্তকে এক সূত্রে গেঁথে, তৈরি হয়েছে একটি কোলাজ। পুরো নাটকটিকে এমনই কোলাজের ফর্মে বেঁধেছেন নির্দেশক অনিরুদ্ধ দাশগুপ্ত। সেট ও আলোর নির্দেশনাও তাঁরই।
ফোর্থ বেল থিয়েটার প্রযোজিত এই নাটকের সবচেয়ে বড় সম্পদ এর মিউজ়িক। তিমির বিশ্বাস ও তাঁর সঙ্গীদের লাইভ পারফর্ম্যান্স নাটককে এক অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছে।
অভিনয়ের ক্ষেত্রে তিন নারীচরিত্রের উল্লেখ করতে হয়। রাই (স্নেহা চট্টোপাধ্যায়), নীলা (সাহানা সেন) এবং পল্লবী (মহুয়া হালদার) এতটাই স্বাভাবিক যে, মনেই হয় না তাঁরা অভিনয় করছেন! জয়ী (সুলগ্না চক্রবর্তী) কিছুটা দুর্বল। পুরুষ চরিত্রের মধ্যে সবচেয়ে নজর কাড়েন মেহবুব (শুভাশিস দাশগুপ্ত)। মেহবুবের খুশি ও বেদনা দর্শকের মন ছুঁয়ে গিয়েছে নিমেষে। নীলার বন্ধু পার্থও (আত্মদীপ ঘোষ) অভিনয়ে স্বচ্ছন্দ। অরিত্র দত্তের অভিনয়ের ওঠাপড়া আরও প্রাণবন্ত হতে পারত। সুদীপ সরকারের ‘ইন্দ্র’ স্বল্প উপস্থিতিতেও চোখে পড়ে।
প্রত্যেক শহরের নিজস্ব কিছু গল্প থাকে। আর সেই সব গল্পের মধ্যে থাকে ভালবাসার উপাদান। শহরকে কেন্দ্র করে আবর্তিত গল্পে তাই লেপে যায় পূর্ণ চালচিত্র। তেমনই সাত জন মানুষ, চার টুকরো ভালবাসার গল্প আর তাদের ঘিরে আরও কিছু বন্ধু বা সঙ্গী, এদের নিয়েই ‘P.S. ভালবাসা’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy