Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

জীবনের ভাল-মন্দ

প্রতিবাদও স্টুডিওর প্রেক্ষাপটে। ‘এফ এম মহানগর’ দেখলেন পিয়ালী দাসএফ এম মহানগর। নাটকটির প্রেক্ষাপট একটি রেডিও স্টুডিও। জনপ্রিয় আড্ডার আসর। সঞ্চালনায় আর জে অভ্র নামে এক তরতাজা যুবক। সমস্ত নাটকটাই ঘটে চলে সঞ্চালকের সঙ্গে শ্রোতাদের কথোপকথনের মাধ্যমে। তবে শুধুমাত্র সংলাপ-নির্ভর নয় এ নাটক। অভিনয়-নির্ভরও। মঞ্চের ডান প্রান্তে স্পট লাইটের আলোয় উজ্জ্বল হয়ে ওঠেন আর জে, অভ্র। স্টুডিওর একটি ঘরে বসে।

শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:০৩
Share: Save:

এফ এম মহানগর। নাটকটির প্রেক্ষাপট একটি রেডিও স্টুডিও। জনপ্রিয় আড্ডার আসর। সঞ্চালনায় আর জে অভ্র নামে এক তরতাজা যুবক। সমস্ত নাটকটাই ঘটে চলে সঞ্চালকের সঙ্গে শ্রোতাদের কথোপকথনের মাধ্যমে। তবে শুধুমাত্র সংলাপ-নির্ভর নয় এ নাটক। অভিনয়-নির্ভরও।
মঞ্চের ডান প্রান্তে স্পট লাইটের আলোয় উজ্জ্বল হয়ে ওঠেন আর জে, অভ্র। স্টুডিওর একটি ঘরে বসে। তার সামনে টেবিলে রাখা একটি ল্যাপটপ, ল্যান্ড ফোন আর কানে হেড ফোন। তার থেকে অল্প দূরত্বে বাঁ দিকে একটি চেয়ার, সেখানেই একে একে উপস্থিত হন শ্রোতারা তথা চরিত্ররা – রাঘব মুখোপাধ্যায়, সুরজিৎ, রাহুল, রাধিকা, সেলিম মিঞা, কালীদাস সেন শর্মা প্রমুখ। নির্দেশক অরিন্দম মুখোপাধ্যায়। প্রযোজনায় স্টোরিটেলার। নাটকটি অনুপ্রাণিত এরিক বোগোসিয়ানের টকরেডিও নাটক থেকে। বিশ্বাসহীনতাই নাটকের উপজীব্য। নাটকের ক্লাইম্যাক্সে বিষয়টি প্রকট হয়ে ওঠে।
বিভিন্ন বয়সের শ্রোতারা ফোন করেন আড্ডার আসর অনুষ্ঠানে। গুণমুগ্ধ কিছু শ্রোতাও আছেন, যারা প্রায় নিয়মিতই ফোন করেন অভ্রকে। তাদের কথোপকথনে একটা অস্থিরতা, দোলাচলতা, অবিশ্বাস ধরা পড়ে। কেউ একাকীত্বে ভোগেন, আতঙ্কের কথা বলেন, বেঁচে থাকা অর্থহীন ভেবে আত্মহত্যার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। কেউ আবার মনের অন্দরে ভিড় করে থাকা প্রশ্নের উত্তর হাতড়ে বেড়ান। রাজনৈতিক, সামাজিক পরিস্থিতি নিয়েও অনেকে চিন্তিত। এই দ্বিধাগ্রস্ত, বিচলিত মানুষগুলো সব বিষয়ে অভ্র’র মতামত জানতে চান। আড্ডার আসর ক্রমশ হয়ে ওঠে প্রতিবাদ মঞ্চ।
নাটকের উপস্থাপনায় বৈচিত্র আছে। চরিত্রগুলোর সংলাপে ধরা পড়ে সেই সমস্যা জর্জরিত জীবনের নানা দিক। চরিত্রগুলো আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে আলোর সঠিক ব্যবহারে। বিশেষভাবে বলতে হয় অনির্বাণ ভট্টাচার্যের (অভ্র) কথা। তিনি এই নাটকের প্রধান অবলম্বন। যাকে কেন্দ্র করেই আসে অন্যান্য চরিত্ররা। আর জে অভ্র আত্মবিশ্বাসী তরুণ, চাঁছাছোলা বদমেজাজি। যার সঞ্চালনায় আত্মবিশ্বাস ঝরে পড়ে, কখনও মেজাজ হারিয়ে গলা চড়ে যায় উচ্চগ্রামে। সেই সঙ্গে তাঁর মধ্যে লুকিয়ে থাকা যন্ত্রণারও বহিঃপ্রকাশ ঘটে উত্তেজিত হয়ে পড়ায়। এভাবেই বেরিয়ে পড়ে অভ্র’র ব্যক্তিগত জীবনের ফাঁক-ফোঁকরগুলোও। যা সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তোলেন অর্নিবাণ।

বৃদ্ধ সেলিম মিঞার চরিত্রে চন্দন সেন অসাধারণ। যিনি অনবরত ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করেন। সিপাহি বিদ্রোহের ঘটনা তাঁকে ভাবায়। প্রযোজক অনামিকা এবং আত্মহত্যাপ্রবণ রাধিকার চরিত্রে বিন্দিয়া ঘোষের অভিনয় চোখে পড়ার মতো। কালিদাস (লোকনাথ দে) চরিত্রটাও বেশ মজাদার। যিনি সংশয়ের দোলাচলতায় ভোগেন। এছাড়াও উল্লেখযোগ্য রাঘ়ব-এর চরিত্রে সুমন নন্দী, দীপক এর ভূমিকায় শান্তনু নাথ প্রমুখ।

আত্মকথার দ্রৌপদী

বিজয়লক্ষ্মী বর্মনের ‘যাজ্ঞসেনী অগ্নিকন্যা’ দেখলেন পিনাকি চৌধুরী

সম্প্রতি অ্যাকাডেমিতে অনুষ্ঠিত হল ভবানীপুর শিশিক্ষুর ‘যাজ্ঞসেনী অগ্নিকন্যা’। মহাকাব্যের দ্রৌপদীকে ঘিরেই নাটকটি নির্মিত। আত্মকথার আদলে দ্রৌপদীর স্মৃতি-রোমান্থন। মঞ্চে অবতীর্ণ হলেন দ্রৌপদী (বিজয়লক্ষ্মী বর্মণ)। অতীতের সেই সৌন্দর্যের প্রতিমূর্তি দ্রৌপদী আজ বার্ধক্যের শেষ সীমায়।

হস্তিনার রাজপ্রাসাদ থেকে দ্রৌপদীর মহাপ্রস্থান। কিন্তু তার আগের রাতে তাঁর মনের মধ্যে ভিড় করে অতীতের টুকরো টুকরো কিছু স্মৃতি। তাঁর চোখের সামনে ভাসতে থাকে পঞ্চপাণ্ডবদের সঙ্গে অতীতে সেই সম্পর্কের কথা। আবার কখনও পুত্র-শোকে কাতর পুরনো ক্ষতমুখ। সুখ-দুঃখের সেই ঘটনায় তিনি কখনও কাঁদেন, কখনও হাসেন। বিজয়লক্ষ্মী বর্মনের অভিনয় দর্শকদের মনে থাকবে বহু দিন। মঞ্চ পরিকল্পনায় সৌমিক-পিয়ালি। আলোয় গোপাল ঘোষ। আবহে গৌতম হালদার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE