সৌরসেনী মৈত্র
একটা সুতোর উপর দিয়ে অন্য সুতো, তার ভিতর দিয়ে আর এক সুতো... বুনে চলে গল্প, গান, কথা আর তৈরি হয় এক একটা ফ্যাব্রিক। সুতোর রং, জেল্লার উপরেই নির্ভর করে সেই ফ্যাব্রিকের দেখনদারি। তার পরে সেই কাপড় দিয়েই তৈরি হয় পছন্দসই পোশাক।
হাতে বোনা এই ফ্যাব্রিক এখনকার দুনিয়ায় অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে। তার কারণ মেশিন। মেশিনে যত দ্রুত যত বেশি কাপড় তৈরি করা সম্ভব, হাতে তা হয় না। কিন্তু হাতে বোনা কাপড়ের সৌন্দর্য মেশিনে তৈরি কাপড়ের চেয়ে অনেক বেশি। তার বুনন, গঠন সবই আলাদা।
বেনারসি, বালুচরি, জামদানি, কাঁথা স্টিচ, লিনেন... এই সব শাড়িই হ্যান্ডলুমের মধ্যে পড়ে। এদের প্রত্যেকেই নিজের সৌন্দর্যে স্বতন্ত্র। বিশেষত, শাড়ির মধ্যেই এই ধরনের ফ্যাব্রিকের রকমফের বেশি চোখে পড়ে। কিন্তু এখন তো রোজকার জীবনে শাড়ি পরা অনেেকরই সম্ভব হয় না। সে ক্ষেত্রে এই ধরনের ফ্যাব্রিক দিয়ে বানিয়ে ফেলতে পারেন মানানসই পোশাক।
ব্লাউজ়: বেনারসি বা বালুচরি শাড়ি খুব ভারী আর জমকালো হওয়ায় অনুষ্ঠান না থাকলে পরা হয় না। কিন্তু এই কাপড়ের ব্লাউজ় বানিয়ে নিলে হালকা শাড়ির সঙ্গে পরতে পারেন। আর টপের মতো ব্লাউজ় তৈরি করে জিন্স বা স্কার্টের সঙ্গে পরলেও ফ্যাশনেব্ল দেখাবে।
জ্যাকেট: বাটিক প্রিন্ট বা কাঁথা স্টিচের ছোট বা লম্বা জ্যাকেটও ভাল লাগে পোশাকের উপরে। কাঁথা স্টিচের প্যাচওয়র্কের জ্যাকেট এখন ফ্যাশনেও বেশ ইন।
ওড়না: ভারী কাজের ওড়না সব সময়েই ভাল দেখায়। সেখানে কাঁথা স্টিচ বা বেনারসি কাপড়ের ও়ড়না পোশাকের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারলে তো কথাই নেই। ড্রেসের সঙ্গেও কাঁথার স্টোল রাখতে পারেন কাঁধের উপরে।
বটমওয়্যার: বিভিন্ন রকম প্রিন্টের হাতে বোনা কাপড়ে বানিয়ে নিতে পারেন স্কার্ট বা পালাজ়ো। কাটের জন্য এই ধরনের পোশাক অনেক দিন ধরেই ট্রেন্ডি। আর এই পোশাক তৈরি করতে যদি নতুন ধরনের কাপড় ব্যবহার করতে পারেন, তা হলে আপনার লুকও হবে স্বতন্ত্র। যেমন সৌরসেনী এখানে বেনারসি কাপড়ের স্কার্ট পরেছেন (চতুর্থ ছবিতে)।
খেয়াল রাখবেন
•এই ধরনের কাপড়ের সুতো ও বুনন খুব সংবেদনশীল। এই কাপড়ে তৈরি পোশাক পরতে হবে সাবধানে।
•এই কাপড়ের পোশাক পরিষ্কারের সময়েও যত্নবান হতে হবে। অতিরিক্ত ক্ষারযুক্ত সাবান ব্যবহার করবেন না।
•সুতো বা জরির কাজ থাকলে বাড়িতে কাচবেন না। ভাল দোকান থেকে ড্রাই ওয়াশ করিয়ে নিতে পারেন।
•বেনারসি, বালুচরি বাড়িতে আয়রন করবেন না। বছরে এক বার পালিশ করিয়ে নিলে ভাল।
বংশ পরম্পরায় হাতে বুনে তৈরি হয়েছে এই শিল্প। তা যেন এগিয়ে যায় আগামী প্রজন্মের হাত ধরে, এ দায়িত্বও আমাদেরই!
পোশাক: টাইমলেস উইভ্স
ছবি: দেবর্ষি সরকার
মেকআপ: অভিজিৎ পাল
লোকেশন: দ্য অ্যাস্টর হোটেল, শেক্সপিয়র সরণি
ফুড পার্টনার: ০৩৩, গোলপার্ক
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy