কারও জন্য উপহার কেনার ক্ষেত্রে যতটা সময় খরচ করে ভাবতে হয় কী দিলে সেটা উপযুক্ত উপহার হবে, ঠিক ততটাই সময় ব্যয় করা উচিত গিফটের মোড়কটা কী ভাবে করা যায়, তা নিয়ে ভাবতে। কারণ উপহার যতই ভাল হোক, তাকে সুন্দর আবরণ না পরালে কিন্তু অর্ধেক গুণই নষ্ট! তাই বিশেষ মানুষদের জন্য একটু বিশেষ ব্যবস্থা করাটা দরকারি...
রিসাইকলে কেল্লাফতে
এখন সময়টা রিসাইক্লিংয়ের। সব সময়ে যে দোকান থেকে কিনে আনা গিফট র্যাপার দিয়ে উপহার মুড়ে দিতে হবে, তার কোনও মানে নেই। ট্রান্সপ্যারেন্ট সেলোফেন পেপারে মোড়া উপহারও কিন্তু যতই দামি হোক, দেখতে ভাল লাগে না। তাই ব্রাউন পেপার বা খবরের কাগজ— এগুলো অপশন হিসেবে ভেবে দেখতে পারেন। খবরের কাগজ দিয়ে পেপার ব্যাগ তৈরি করে গিফটটা মুড়ে ফেলুন। তার পরে সুন্দর করে হাতে আঁকা গ্রিটিংস কার্ড দিয়ে সাজান। কালো লেস নিয়ে বিভিন্ন রকম শেপে কেটেও লাগাতে পারেন। প্রজাপতি ডানা, পাখির পালক, ফুলের পাপড়ি দিয়েও সাজাতে পারেন। অনেক সময়ে বাড়িতেই ছোটখাটো অব্যবহৃত কার্ডবোর্ড বাক্স পেয়ে যাবেন। তার উপরে কোনও দোকান বা ব্র্যান্ডের লোগো থাকতে পারে। তাতে গিফট ভরে ওই লোগোর উপরে পুরনো কিছু ক্রেয়ন পাশাপাশি লাগিয়ে সেলোটেপ মেরে নিন। দেখবেন বাক্সের চেহারা বদলে যাবে! ফাইনাল টাচ হিসেবে একটা ফ্লোরাল রিবন বেঁধে দিতে পারেন।
লেস ইজ় মোর
সামান্য ব্রাউন পেপারে মুড়ে একটু অন্য রকম ডেকোরেশন করলেই আপনার করা গিফট র্যাপিং অন্যদের চেয়ে আলাদা দেখাবে। ব্রাউন পেপার দিয়ে র্যাপ করার পরে সামান্য কয়েকটা গোলাপ এবং জিপসির গোছা আর একটা রিবন দিয়ে বাক্সটা সাজাতে পারেন। সঙ্গে হাতে লেখা মেসেজ। শীতের মরসুম থাকতে থাকতে বড়সড় একটা রঙিন ডালিয়াও আঠার সাহায্যে লাগিয়ে দিতে পারেন বাক্সের গায়ে। আর একটা সুন্দর আইডিয়া হল, ব্রাউন পেপারে মুড়ে ফেলার পরে গিফটের বাক্সটাকে পুরনো কোনও পুঁতির মালা দিয়ে জড়িয়ে দিতে পারেন। যদি ছবি আঁকার অভ্যেস থাকে, তা হলে র্যাপিংয়ের গায়ে সহজ কিছু আঁকিবুকি করে দিতে পারেন— ট্রাইবাল মোটিফ বা ফ্লোরাল মোটিফ এই ধরনের। তবে একটু ভাল মানের রং ব্যবহার করবেন, অ্যাক্রিলিক বা ফ্যাব্রিক কালার— তা হলে মোড়কটাও উপহারের প্রাপক চট করে ফেলে দেবেন না!
শুধু কাগজ কেন
খবরের কাগজ, দোকান থেকে কেনা র্যাপিং পেপার বা ব্রাউন পেপার ছেড়ে একেবারে অন্য রকম কিছুও ভাবতে পারেন। বাড়িতে অনেক সময়ে পুরনো স্কার্ফ বা পড়ে থাকা কাপড়ের মেটিরিয়াল থাকে। ওগুলো দিয়েও গিফট র্যাপ করতে পারেন। কাপড়ের প্রিন্ট যেন মনোগ্রাহী হয়, দেখে নেবেন। বটুয়ার মতো বানিয়ে নিতে পারেন, আবার প্রথাগত নিয়মেও কাপড়টা বেঁধে নিতে পারেন উপহার মুড়ে ফেলতে। তবে এগুলো হালকা গিফট, যেমন ছোটখাটো জুয়েলারি বা হালকা শো পিসের জন্য উপযুক্ত। একটা কথা মনে রাখবেন, শুধু র্যাপিং নয়, মেসেজ কার্ডও কিন্তু একই রকম গুরুত্বপূর্ণ। সেটাও নিজের মতো করে বানিয়ে নিতে পারেন। রিসাইকল করবেন না কি দোকান থেকে কিনবেন অথবা হাতে এঁকে বানিয়ে নেবেন, সেটা সময়-সুযোগ-মুডের উপরে। তবে মেসেজটা যাঁকে উপহার দিচ্ছেন, তাঁর ব্যক্তিত্বের সঙ্গে যেন মেলে।
পুরনোয় নতুন ছোঁয়া
অনেকে দোকান থেকে কেনা কিউট মোটিফের র্যাপিং পেপার পছন্দ করেন। সেগুলো কিনলেও কিন্তু নতুন ভাবে র্যাপিং করতে পারেন। ধরুন কাউকে বই উপহার দিচ্ছেন। র্যাপিং পেপারের সাহায্যে সেটাকে মুড়ে ফেলে তার পরে তাকে একটা হ্যান্ডব্যাগের আকার দিতে পারেন। ক্লোজ়িংয়ের মুখটায় জ়িপের মতো করে লেস কেটে বসিয়ে দিন। আর র্যাপিং পেপারের কিছুটা আলাদা করে রেখে দেবেন সরিয়ে। সেটাকে সরু করে ভাঁজ করে গ্লু-গানের সাহায্যে আটকে নিন, হ্যান্ডব্যাগের স্ট্র্যাপের মতো করে। বা ধরুন কাউকে বিবাহবার্ষিকীর উপহার দিচ্ছেন। তা হলে র্যাপিংয়ের পরে সেই দম্পতির একটি পোলারয়েড ছবি বাক্সের উপরে লাগিয়ে দিতে পারেন। নীচে থাকবে আপনার লেখা শুভেচ্ছা। এর চেয়ে ভাল মেসেজ কার্ড কিন্তু চোখে পড়ে না। ইন্টারনেটে নানা উপায়ে গিফট র্যাপিংয়ের ভিডিয়ো দেখে নিতে পারেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy