মঞ্চে কৈবল্যকুমার
রবীন্দ্র সদন প্রেক্ষাগৃহে আকাশবাণী সঙ্গীত সম্মেলনের ৬৫তম বর্ষ উদ্যাপিত হল। হিন্দুস্থানি এবং কর্নাটকি— দুই ধারার সঙ্গীত পরিবেশিত হল অনুষ্ঠানে। হিন্দুস্থানি সঙ্গীত পরিবেশন করলেন কৈবল্যকুমার গুরব। দক্ষিণী বাঁশির যুগলবন্দিতে ছিলেন কে এস হেরম্ব এবং কে এস হেমন্ত।
কৈবল্যকুমার গুরব শোনালেন গাওতি রাগ। আলাপটি সংক্ষিপ্ত হলেও সুসংবদ্ধ ছিল। একতালে নিবদ্ধ বিলম্বিত এবং তিনতাল ও একতালের দু’টি দ্রুত বন্দিশ শোনালেন কিরানা ঘরানার এই শিল্পী। সুনিয়ন্ত্রিত বিস্তার তাঁর পরিবেশনাকে নান্দনিক করে তুলেছিল। শিল্পীর কণ্ঠস্বরের ঔদার্য তাতে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। কিরানা ঘরানার বিশেষত্ব হল তার অলঙ্কারবহুল জটিল তান (কূট তান)। দ্রুত গতিতে গমক সহকারে এই ধরনের তান পরিবেশিত হয়ে থাকে। শিল্পীর উপস্থাপনায় স্বকীয় ঘরানার ঝলক পাওয়া গেল। তবে তাঁর পরিবেশনাকে খানিক একঘেয়ে করে তুলেছিল অত্যধিক গমকের প্রয়োগ। বহু ব্যবহারে গমকের সৌন্দর্য ধ্বস্ত হয়েছে। দ্রুত বন্দিশ দু’টি পরিমিত বিন্যাসে অধিক শ্রুতিনন্দন হয়ে উঠেছিল। ছুটতান, সপাট তান, সরগম তানের প্রয়োগে তাঁর গায়ন উপভোগ করেছেন শ্রোতারা। শিল্পীর দ্বিতীয় নিবেদন ছিল রাগ হংসধ্বনি। রূপক তালে নিবদ্ধ বিলম্বিত এবং তিনতালের দ্রুত বন্দিশ শোনালেন তিনি। রাগ-প্রবেশক সংক্ষিপ্ত সুরবিস্তারটি বেশ ভাল লেগেছে। সুমিষ্ট এই রাগটি স্বভাবে চঞ্চল। শিল্পীর গায়নে গমক প্রয়োগের স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গি এ ক্ষেত্রে রাগটির প্রতি সুবিচার করেছে। কৈবল্যকুমার গুরব অনুষ্ঠান শেষ করলেন দীপচন্দী তালে নিবদ্ধ, ভৈরবী রাগে একটি ঠুমরি শুনিয়ে। শিল্পীকে তবলায় সহযোগিতা করেছেন শ্রীধর মান্ড্রে এবং হারমোনিয়ামে ব্যাসমূর্তি কাট্টি। পূর্বী-কল্যাণী রাগে ত্যাগরাজার একটি কম্পোজ়িশন শোনালেন বংশীবাদক জুটি কে এস হেরম্ব এবং কে এস হেমন্ত। চতুস্র জাতির রূপক তালে (ছ’মাত্রার দক্ষিণী তাল) নিবদ্ধ কম্পোজ়িশনটি বেশ শ্রুতিমধুর। শিল্পীদ্বয়ের বাদনও সুসংবদ্ধ। পূর্বী-কল্যাণীর পরে তাঁরা শোনালেন আদি তালে নিবদ্ধ কাম্বোজি রাগের একটি কম্পোজ়িশন। এই পরিবেশনাটিও মন ছুঁয়েছে। শিল্পীদের বেহালা, মৃদঙ্গ এবং খঞ্জিরাতে সহযোগিতা করেছেন যথাক্রমে সুধা আর এস আইয়ার, বি এস প্রশান্ত এবং জি গুরু প্রসন্ন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy