তাপমাত্রা চড়চ়ড় করে বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাড়তে থাকে ঘরের ভিতরের বৈদ্যুতিক যন্ত্রের ব্যবহার। অবশেষে মাসের শেষে এক মুখ হাঁ করা বিল হাতে নিয়ে অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকতে হয়। তা ছাড়া বিদ্যুৎ, জল ইত্যাদি সম্পদ সংরক্ষণ করাও আমাদের দায়িত্ব। তাই একটু বুদ্ধি করে চললে যদি বিদ্যুতের খরচ কমে, তা হলে প্রকৃতির পাশাপাশি মানুষও লাভবান হবেন।
খেয়াল রাখবেন
• ঘরে সিএফএল ও এলইডি আলো লাগাতে পারেন। এই আলোয় বিদ্যুৎ খরচ কম হয়। সাধারণ বাল্বে আলোর জন্য ফিলামেন্ট ব্যবহৃত হয়, অন্য দিকে এলইডি আলোয় থাকে সার্কিট। ফিলামেন্টের তুলনায় সার্কিটে বিদ্যুতের খরচ কম হয়।
• এয়ার কন্ডিশনারের আউটলেট এমন জায়গায় রাখবেন যাতে তার উপরে রোদ সরাসরি না পড়ে। তবে এসির মেশিন ঢাকার চেষ্টা করবেন না। তা হলে মেশিনটাই খারাপ হয়ে যেতে পারে। বার বার এসি চালু ও বন্ধ করবেন না। যত বার এসি বন্ধ করে চালাবেন, তত বেশি ইউনিট পোড়ে। এসির তাপমাত্রা ২৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে রাখাই সবচেয়ে ভাল। বাড়ির শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের যন্ত্রে এনার্জি সেভার মোড থাকলে, তা ব্যবহার করবেন।
• ফ্রিজ বাড়ির দেওয়াল ঘেঁষে রাখবেন না। এতে ফ্রিজের পিছনের দিকে বায়ু সঞ্চালন পর্যাপ্ত পরিমাণে হয় না। দেওয়াল থেকে অন্তত ৩-৪ ইঞ্চি দূরত্বে ফ্রিজ রাখবেন।
• ফ্রিজে গরম খাবার রাখবেন না। গরম খাবার ঠান্ডা হতে বেশি বিদ্যুৎ খরচ হয়। আর ফ্রিজের মধ্যে খাবার রাখার সময়ে অবশ্যই তা ঢাকা দিয়ে রাখবেন। খাবার আলগা রাখলে তা ফ্রিজের ময়শ্চার টানতেই থাকে। ফলে বিদ্যুতের ইউনিট বেশি পোড়ে। অল্প খাবার বড় পাত্রে রাখবেন না।
• মনে রাখবেন, বাড়িতে ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক যন্ত্রের মধ্যে এসি মেশিন, মাইক্রোওয়েভ আভেন, ইন্ডাকশন, ফ্রিজ, গিজ়ার, হেয়ার ড্রায়ার, ইস্ত্রি জাতীয় মেশিন বিদ্যুতের খরচ অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। তাই এই সব যন্ত্রের ব্যবহার যত কম করবেন, ততই ভাল। সেই তুলনায় পাখা, টেলিভিশনে বিদ্যুতের খরচ অনেক কম।
• পুরনো বৈদ্যুতিক যন্ত্র তুলনামূলক ভাবে বিদ্যুতের খরচ বা়ড়ায়। তাই বেশি পুরনো (দশ বা বারো বছরের) বৈদ্যুতিক যন্ত্রের জায়গায় নতুন মেশিন ব্যবহার করাই বিবেচকের কাজ।
• বৈদ্যুতিক যন্ত্রে বাড়ি ভরে না ফেলে কিছু সৌর বিদ্যুৎ চালিত যন্ত্রও ব্যবহার করতে পারেন। খোলা বাজার থেকে শুরু করে ই-মার্কেটেও পেয়ে যাবেন সোলার কুকার, সোলার চিমনি, সোলার চার্জারের মতো দরকারি যন্ত্রপাতি।
ইউনিটের হিসেব
ইলেকট্রিক বিলের পিছনেই ইউনিট পিছু খরচ লেখা থাকে। এই খরচের কিন্তু অনেক স্তর থাকে। প্রত্যেক স্তরেই খরচ বাড়তে থাকে। যেমন ধরুন, প্রথম ২৫ ইউনিটের জন্য ২০০ টাকা ধার্য হলে, তার পরের ৩৫ ইউনিটের জন্য ৪০০ টাকা, পরের ৪০ ইউনিট আবার ৫৫০ টাকা... এই ভাবে প্রত্যেক স্তরে খরচ বাড়তেই থাকে। তাই আপনি কোন স্তরে আপনার বিদ্যুতের খরচ রাখতে চান, সেটা আগে হিসেব করে নিন। যে সংস্থার বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন, তার ইউনিট প্রতি চার্জ কত, সেটা দেখে নেবেন।
তবে মনে রাখবেন, ‘এসি ছাড়া ঘুম হয় না’, ‘ফ্রিজের জল ছাড়া খেতে পারি না’ এই জাতীয় মনোভাব থেকেও বেরিয়ে আসতে হবে। এই অভ্যেস স্বাস্থ্যকর নয়। আবার প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হওয়াও জরুরি। তা হলে দেখবেন এই বৈদ্যুতিক যন্ত্রের উপর নির্ভরতা কমছে। একই সঙ্গে বিদ্যুতের বিলেও লাগাম থাকছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy