মডেল: সুকন্যা;ছবি: দেবর্ষি সরকার; মেকআপ: কাজু গুহ; লোকেশন: দ্য কনক্লেভ ভর্দে ভিস্তা ক্লাব
নিত্যদিনের সঙ্গী এখন ঝিরিঝিরি থেকে শুরু করে ঝমঝম বৃষ্টি। তারই মাঝে কখনও আবার কড়া রোদ্দুর, তো কখনও আঁধারকালো মেঘের ভারে আকাশের গুমর। আর এই ঘণ্টায় ঘণ্টায় পরিবর্তনশীল আবহাওয়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উঠতে নাজেহাল আমাদের ত্বক। সে বেচারি এই ঘেমে উঠছে, তো এই শুকিয়ে হাঁসফাস করছে তেষ্টায়। তাই ত্বকের খাবার মজুত রাখতে হবে আপনার মেকআপ ভাঁড়ারে। বর্ষাকালে ত্বকের একটু বেশিই যত্নের প্রয়োজন।
বর্ষার আগমন ত্বকের দুশমন
প্যাঁচপেঁচে আবহাওয়ায় ত্বকে ধুলোময়লা জমে ব্রণ হওয়া অস্বাভাবিক নয়। তার উপরে আছে ফাঙ্গাল ইনফেকশন। অনেকের আবার বর্ষায় ত্বক বেশি শুকিয়ে যায়। ফলে চামড়া ওঠার মতো সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
সহজ সমাধান
ত্বকচর্চার কিছু নিয়ম রোজ মেনে চললেই ত্বকের জেল্লা বজায় থাকবে।
• দিনে তিন বার ত্বক পরিষ্কার করতে হবে। যদি রোজ বেরোতে হয়, তা হলে ব্যাগে ক্লেনজ়ার, টোনার রাখুন। ছ’ঘণ্টা বাদে বাদে ত্বক ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। বর্ষায় ত্বকের রোমকূপে ধুলোময়লা ও তেল বাসা বাঁধে সহজে। ধুলোবালি জমে জন্ম দেয় ত্বকের সমস্যার। তাই ভাল ক্লেনজ়ার দিয়ে ঘষে ত্বক পরিষ্কার করুন। তৈলাক্ত ত্বক হলে ঠান্ডা জলের জায়গায় ঈষদুষ্ণ জল দিয়ে মুখ ধোবেন। এতে ত্বকের অতিরিক্ত তেল বেরিয়ে যায়।
• তার পরেই ত্বকের পিএইচ ব্যালান্স বজায় রাখতে সক্ষম, এমন কোনও টোনার লাগিয়ে নিন।
• ত্বক খুব শুষ্ক হলে ভাল ময়শ্চারাইজ়ারও ব্যবহার করতে পারেন। গোলাপ জল ও গ্লিসারিন মিশিয়েও ব্যবহার করতে পারেন। তবে তৈলাক্ত ত্বকে ময়শ্চারাইজ়ারের জায়গায় ল্যাভেন্ডার বা লেমন ওয়াটার ব্যবহার করাই ভাল।
• বর্ষা মানেই সানস্ক্রিনের ব্যবহার বন্ধ নয়। এই মরসুমে কড়া না হলেও রোদ থাকে। আর সেই রোদ ত্বকের ক্ষতি করতে যথেষ্ট। তাই বাইরে বেরোনোর আগে সানস্ক্রিন অবশ্যই লাগাতে হবে।
• এক দিন অন্তর ত্বক এক্সফোলিয়েট করতে হবে, যাতে রোমকূপে ধুলোবালি না জমে। যেহেতু ঘন ঘন এক্সফোলিয়েট করতে হয়, তাই হালকা ধরনের এক্সফোলিয়েটর ব্যবহার করুন।
• দু’চা চামচ মধু, এক চা চামচ গোলাপজল ও এক চা চামচ পাতিলেবুর রস দিয়ে ফেসপ্যাক বানিয়ে ত্বকে লাগিয়ে রাখতে পারেন। এই ফেসপ্যাক যে কোনও ত্বকেই লাগানো যায়। মধু ত্বকের ময়শ্চার ধরে রাখে, পাতিলেবুর রস রোমকূপ পরিষ্কার রেখে, ত্বকের অতিরিক্ত তেল শুষে নেয়। আর গোলাপজল ত্বককে সজীবতা দেয়। তাই বর্ষায় এই ফেসপ্যাক আদর্শ।
চুল নিয়ে জেরবার
অত্যধিক আর্দ্রতার ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় চুলের। চুল রুক্ষ-শুষ্ক দেখায়। নোংরা হয় তাড়াতাড়ি। চুলের আগা ফাটার মতো সমস্যা থেকে শুরু করে চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যাও জাঁকিয়ে বসে। আবার চুলে তেল দিলেও চুল নোংরা ও ফ্রিজ়ি হয়ে যায়। মাথা চুলকানোর মতো সমস্যাও হতে পারে।
চুল বাঁচান
• ঈষদুষ্ণ নারকেল তেল বা নিম তেল দিয়ে স্ক্যাল্প মাসাজ করুন সপ্তাহে দু’বার। চুলের রুক্ষ ভাব কমে যাবে। তবে একগাদা তেল মাখবেন না। চুলের পরিমাণ অনুযায়ী তেলের পরিমাণ ঠিক করবেন। অতিরিক্ত তেল মেখে ফেললে সেটা তোলার জন্য বেশি শ্যাম্পু করতে গিয়ে চুলের স্বাভাবিক ময়শ্চারও চলে যেতে পারে।
• সপ্তাহে যে দু’দিন মাথায় তেল লাগাবেন, তার পরদিন অতি অবশ্যই শ্যাম্পু করবেন। হালকা কিন্তু ডিপ ক্লেনজ়িং শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন। মনে রাখবেন, বৃষ্টিতে ভিজে গেলেও চুলে শ্যাম্পু করা আবশ্যিক।
• শ্যাম্পু করে অবশ্যই কন্ডিশনার লাগাবেন। তবে সেটাও বেশি নয়, পরিমাণ মতো। কন্ডিশনার চুলের উপর ময়শ্চারের একটা স্তর তৈরি করে। ফলে আবহাওয়া চুলের বিশেষ ক্ষতি করতে পারে না।
• স্নানের পর চুল শুকিয়ে তবে রাস্তায় বেরোন। হালকা করে ড্রায়ার বা ব্লোয়ার চালিয়ে চুলের ভিজে ভাব কমিয়ে নিন। তার পরে পাখার হাওয়ায় চুল শুকিয়ে নিন।
• চুলে রং বা হেয়ার স্ট্রেটনিং ইত্যাদি স্টাইলিং এই মরসুমে এড়িয়ে চলুন।
ত্বক ড্রাই হয়ে যাচ্ছে, চুল পড়ে যাচ্ছে বলে ব্যতিব্যস্ত না হয়ে এই নিয়মগুলো মেনে চলার চেষ্টা করুন। দেখবেন, আপনার ত্বক ও চুলের সমস্যা কমবে এবং জেল্লাও বাড়বে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy