Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ত্বক বাঁচাতে কোল্ড প্রেসড অয়েল

ত্বকের কোন কোন উপকারে লাগে এই তেল? এ বার তা বিশদে জেনে নিন ত্বকের কোন কোন উপকারে লাগে এই তেল? এ বার তা বিশদে জেনে নিন

অন্তরা মজুমদার
শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:৫৩
Share: Save:

কোল্ড প্রেসড অয়েল আসলে কী? বিভিন্ন ফুল এবং ফলের বীজ ভেঙে কোল্ড প্রেসড অয়েল তৈরি হয়। এগুলি সবই অর্গ্যানিক। এর নাম কোল্ড প্রেসড অয়েল, কারণ এই পদ্ধতিতে রাসায়নিক ব্যবহার না করে, ৩৫ ডিগ্রির মধ্যে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখে, বাইরে থেকে চাপ প্রয়োগে তেল নিষ্কাশন করা হয়।

এসেনশিয়াল অয়েলের সঙ্গে কোল্ড প্রেসড অয়েলের ফারাক কী? এসেনশিয়াল অয়েল স্টিম ডিস্টিলেশন পদ্ধতিতে তৈরি হয়, ফল বা ফুলের সুগন্ধকে তেলে পরিণত করার জন্য। আর কোল্ড প্রেসড অয়েলের নামের মধ্যেই পদ্ধতিটি বলা রয়েছে। এখানে ফুল বা ফলের বীজ গুঁড়িয়ে তেল বার করা হয়। দুটোর ব্যবহারবিধিও আলাদা। সাধারণত অ্যারোমাথেরাপিতে এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করা হয়। কোল্ড প্রেসড অয়েলের ব্যবহার সাধারণ ভাবে স্কিন কেয়ারের ক্ষেত্রে হয়। তবে এই তেল আনরিফাইন্ড এবং কোলেস্টেরলমুক্ত হয় বলে কোল্ড প্রেসড গ্রাউন্ডনাট অয়েল, সেসমি অয়েল, কোকোনাট অয়েল বা মাস্টার্ড অয়েল অনেকে রান্নাতেও ব্যবহার করেন।

গুণাগুণ

কোল্ড প্রেসড অয়েল মাসাজ অয়েল হিসেবে ব্যবহার করা যায়, আবার ফেস অয়েল হিসেবেও। কোল্ড প্রেসড হোহোবা অয়েল, আমন্ড অয়েল, কোকোনাট অয়েল এবং অলিভ অয়েল মাসাজের উপকারিতা বেশ কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়। কারণ এতে কোনও প্রিজ়ারভেটিভ থাকে না। ফলে সব ধরনের ত্বকে এটা ব্যবহার করা যায়। তবে এক বার প্যাচ টেস্ট করে নেবেন। ফেস অয়েল হিসেবে ব্যবহার করলে পঁচিশোর্ধ্বরাই করবেন। কারণ তাঁদের ত্বকেই এর কার্যকারিতা বেশি।

কোল্ড প্রেসড আমন্ড অয়েলের সঙ্গে সুইট অরেঞ্জ এসেশিয়াল অয়েল এবং রোজ় এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে বডি মাসাজ করতে পারেন। ত্বক মসৃণ হবে, তার ঔজ্জ্বল্য বাড়বে।

চুলের জন্য কোল্ড প্রেসড কোকোনাট অয়েলের সঙ্গে আর্গান অয়েল তিন-চার ফোঁটা মেশান।

তার সঙ্গে ল্যাভেন্ডার অয়েল পাঁচ ফোঁটা এবং প্যাচুলি এসেনশিয়াল অয়েল তিন ফোঁটা মিশিয়ে চুলে মাসাজ করুন। খুশকি দূর হবে, চুল নরম হবে, গোড়া মজবুত হবে

এবং এই তেলেই হোহোবা কোল্ড প্রেসড অয়েল মেশালে চুলের ঔজ্জ্বল্যও বাড়বে।

এক কাপ কোল্ড প্রেসড হোহোবা অয়েলে ২-৩ ফোঁটা বার্গামট এসেনশিয়াল অয়েল, ১০-১২ ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল, ৮-৯ ফোঁটা মায়ার অয়েল এবং ৪-৫ ফোঁটা রোমান ক্যামোমাইল অয়েল মিশিয়ে মাসাজ করলে মাস্‌ল পেন থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

ব্যবহারবিধি

কোল্ড প্রেসড গ্রেপসিড অয়েলে রয়েছে ভিটামিন ডি, সি এবং ই, যা ত্বককে টানটান রাখতে সাহায্য করে। এর মধ্যে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড ত্বকে বলিরেখা পড়তে দেয় না। মুখে দাগছোপ থাকলে এর মধ্যে থাকা ভিটামিন সি তার মোকাবিলা করতে পারে। অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি অয়েল বলে ব্রণ হওয়ারও সুযোগ কম।

পমিগ্র্যানেট সিড অয়েলে

রয়েছে ওমেগা ফাইভ ফ্যাটি অ্যাসিড, যা অ্যান্টি-এজিং গুণসমৃদ্ধ। এতেও ব্রণর সঙ্গে মোকাবিলা করার গুণ রয়েছে। তা ছাড়াও বেদানার বীজে পিউনিসিক অ্যাসিড থাকায় চুলের জন্য এই তেল ভাল। চুলের গোড়া মজবুত করে চুল নরম করে এই তেল। চুলের জন্য তিন টেবিল চামচ কোল্ড প্রেসড আমন্ড বা কোকোনাট অয়েলের মধ্যে পাঁচ-ছ’ফোঁটা এই তেল মিশিয়ে মাসাজ করলে ভাল।

কোল্ড প্রেসড রোজ়হিপ অয়েল ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট পরিপূর্ণ। ভিটামিন সি থাকায় চোখের চারপাশে ডার্ক সার্কল, ঠোঁটের চারপাশে কালো ছোপ... এগুলো দূর করতে রোজ়হিপ অয়েলের জুড়ি নেই। কোল্ড প্রেসড আমন্ড অয়েলের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করলে আরও উপকার পাবেন। নিয়মিত মাসাজ করলে নতুন কোষ জন্মাতেও সাহায্য করে।

কোল্ড প্রেসড আর্গান অয়েলও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ। আর্গান অয়েলকে অনেকে বলেন মিরাকল অয়েল। ফেস ময়শ্চারাইজ়ার হিসেবে আর্গান অয়েলের জুড়ি নেই। নাইট ক্রিম ব্যবহার করার আগে সিরাম হিসেবে আর্গান অয়েল মাসাজ করে নিতে পারেন। শীতকালে ডে ক্রিম হিসেবে আর্গান অয়েল লাগিয়ে নিতে পারেন। তবে তার পরে অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। মেকআপের আগে আর্গান অয়েল দু’-এক ফোঁটা মাসাজ করে নিলে মেকআপ ভাল বসবে এবং একটা গ্লো থাকবে মুখে। মেকআপ তোলার ক্ষেত্রেও আর্গান অয়েলের জুড়ি নেই। আবার খুব ড্রাই চুল হলে শ্যাম্পু করার পরে দু’-এক ফোঁটা আর্গান অয়েল সিরামের মতো করে চুলের দৈর্ঘ্য বরাবর মাসাজ করে নিলে উপকার পাবেন।

মডেল: হিয়া, ছবি: অমিত দাস

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Skin Cold
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE