মডেল: দর্শনা। ছবি: দেবর্ষি সরকার
রোদ, ঘাম, দূষণ, ধুলোবালির কোপে রোজ জেল্লা হারাচ্ছে আপনার চুল। তার সঙ্গে যদি যোগ হয় শখের হেয়ার কালারের কয়েক রাউন্ড স্ট্রোক। স্টাইল ষোলো আনা হলেও চুল কিন্তু হারাবে তার প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ। সব বয়সের মেয়েদেরই একটি সাধারণ সমস্যা, অসময়ে চুল পড়া। তার উপর ক্রমাগত অযত্ন-অনাদরে চুলের স্বাস্থ্যের দফারফা!
চুলের হারিয়ে যাওয়া পুষ্টিগুণ ফিরে পেতেই কন্ডিশনিং এক ও অব্যর্থ ওষুধ। রোজকার দৌড়ঝাঁপে মেয়েদের সে কথা মনে থাকে না। অনেকেই ভাবেন, ভেজা চুলে ক্রিম লাগিয়ে কয়েক মিনিট রেখে ধুয়ে ফেললেই কাজ হয়ে গেল! তবে কন্ডিশনিং মোটেই অত সহজ নয়।
গোড়ার কথা
• কন্ডিশনিং লাগানোর আগে চুলের প্রকৃতি সম্পর্কে একটা স্পষ্ট ধারণা থাকা চাই।
• স্কাল্প বা চুলের গোড়ায় (রুট) ভুলেও কন্ডিশনার লাগাবেন না।
• রুট থেকে কয়েক ইঞ্চির ব্যবধান রেখে কন্ডিশনার লাগান। পুরো চুলে যেন তা সমান ভাবে মেশে, সে দিকেও নজর রাখুন।
• কন্ডিশনার দু’মিনিট লাগিয়ে রাখলেই যথেষ্ট, এই ধারণা ভুল। চুল লম্বা হলে পাঁচ-আট মিনিটও লাগতে পারে।
• চুল খুব ভাল করে ধোবেন, অন্তত যতক্ষণ না কন্ডিশনার পুরোপুরি চুল থেকে চলে যায়।
কোন চুলে কেমন কন্ডিশনার
• চুল যদি পাতলা হয়, এমন কন্ডিশনার ব্যবহার করুন যাতে চুলে ভলিউম আসে।
• ঘন চুলে এমন কন্ডিশনার ব্যবহার করুন যাতে তেলের ভাগ অল্প।
শ্যাম্পুর আগে কন্ডিশনার
সাধারণ ভাবে মনে করা হয়, শ্যাম্পুর পরে কন্ডিশনিং করতে হয়। তবে এর উল্টো টেকনিকেও কাজ হয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, অনেক ক্ষেত্রে শ্যাম্পুর পরে কন্ডিশনার লাগালে তা চুলে রয়ে যায়। তাই শ্যাম্পু করার আগে কন্ডিশনার লাগালে চুলের ঘনত্বও বাড়ে।
শ্যাম্পু ছাড়াও কন্ডিশনার
রোজ রোজ শ্যাম্পু করলে অনেক সময়ই চুলের আগা ভেঙে যায়। কিন্তু তার জন্য কন্ডিশনিং বন্ধ রাখার যুক্তি নেই। শ্যাম্পু না করেও তাই দিব্যি কন্ডিশনিং করা যায়।
হেয়ার কালারের কন্ডিশনার
চুলে কালার করালে একটু বাড়তি যত্ন প্রয়োজন। তাই এ ক্ষেত্রে জরুরি ডিপ কন্ডিশনিং। কালার করানোর পর হেয়ার মাস্ক লাগালে রঙের স্থায়িত্ব বাড়ে। আর কিউটিকলও সুরক্ষিত থাকে।
ডিপ কন্ডিশনিং
চুল স্ট্রেট হোক বা কোঁকড়ানো, তেলতেলে বা ড্রাই... সব চুলেই সপ্তাহে এক দিন ডিপ কন্ডিশনিং জরুরি।
শিয়া বাটার
• চুলে খুব ভাল করে শিয়া বাটার লাগিয়ে নিন।
• লাগানো হয়ে গেলে গরম তোয়ালে মাথায় জড়িয়ে নিন।
• প্রায় এক ঘণ্টা মতো তোয়ালে জড়িয়ে রাখুন।
• শুষ্ক চুলে শিয়া বাটার সপ্তাহে তিন বার ব্যবহার করা যেতে পারে। আর তৈলাক্ত চুলে সপ্তাহে এক দিন। সূর্যের ক্ষতিকর আলট্রা-ভায়োলেট রশ্মির হাত থেকে চুলকে রক্ষা করে শিয়া বাটার।
টি ট্রি অয়েল
• তিন-পাঁচ ফোটা টি ট্রি অয়েলের সঙ্গে তিন টেবিল চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে নিন।
• ভাগ ভাগ করে চুলে ওই তেল লাগান।
• দশ মিনিট ধরে মাসাজ করুন। তার পর হয় খোঁপা, না হয় বিনুনি বেঁধে নিন।
• পর দিন সকালে উঠে শ্যাম্পু করে কন্ডিশনার লাগান।
• তৈলাক্ত চুলে খুশকি প্রতিরোধে সাহায্য করে টি ট্রি অয়েল। মাথায় রক্ত সঞ্চালনেও সাহায্য করে এই তেল।
অ্যালো ভেরা
• চুলের দৈর্ঘ্যের উপর ভিত্তি করে অ্যালো ভেরা থেকে চামচ দিয়ে জেল বের করুন।
• ভাল করে জেল ফেটিয়ে নিন, যতক্ষণ না তা মসৃণ হয়।
• শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন না।
• জেল লাগাতে থাকুন চুলে। অন্তত আধ ঘণ্টা রেখে দিন।
• ঈষদুষ্ণ জলে চুল ধুয়ে নিন।
• মেয়োনেজ, ডিমের প্যাকও চুলের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে।
• মধু, অলিভ অয়েল, হেনাও ডিপ কন্ডিশনার হিসেবে খুব উপকারী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy