Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

পঞ্চব্যঞ্জনে, রসেবশে জামাইষষ্ঠীর আপ্যায়ন

জামাইষ্ঠী মানে পঞ্চব্যঞ্জনে, রসেবশে হইহই ব্যাপার। সঙ্গে সন্তানদের মঙ্গল কামনায় নানা আচার পালন। চিংড়ি মাছের কোফতা থেকে পঞ্চরুই, বেগুন বাহারের মতো খাঁটি বাঙালি খাবারের মেনু দিলেন মেহুলি গোস্বামী ঠাকুরজামাইষ্ঠী মানে পঞ্চব্যঞ্জনে, রসেবশে হইহই ব্যাপার। সঙ্গে সন্তানদের মঙ্গল কামনায় নানা আচার পালন। চিংড়ি মাছের কোফতা থেকে পঞ্চরুই, বেগুন বাহারের মতো খাঁটি বাঙালি খাবারের মেনু দিলেন মেহুলি গোস্বামী ঠাকুর

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

আমাদের বাড়িতে জামাইষষ্ঠী মানেই অনেক রান্না, প্রচুর খাওয়াদাওয়া। এই দিন আমার মা মিনু ঠাকুর তাঁর মেয়েদের শীতলপাটিতে বসিয়ে শোনাতেন, কী ভাবে মা ষষ্ঠী সকল শিশুর মঙ্গল করেন। দূর্বাঘাসের ছোট্ট চামর দিয়ে আমাদের গায়ে মাথায় পুণ্যবারি ছিটিয়ে আশীর্বাদ করতেন, মুঠো ভরে ফলমূল দিতেন। এ দিনের রান্না যে কেবল কব্‌জি ডুবিয়ে খাওয়া, তা নয়। আমার বাবা শক্তি ঠাকুরের দৌলতে বাড়িতে অতিথি আসা লেগেই থাকত। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে তরুণ মজুমদার সকলেই মায়ের ‘জামাইয়ের ভোজ’ খেতে হাজির হতেন ওই দিন। তরুণ মজুমদারকে থালা সাজিয়ে দিলে উনি মন দিয়ে খাবেন বলে, সব্বাইকে সেখান থেকে চলে যেতে বলতেন। আমাদের বাড়িতে যে রান্নাই হোক, জামাই আদরে চিংড়ি আর নারকেল থাকবেই। আজ সেই রান্নার কিছু রেসিপি থাকল।

চিংড়ি মাছের কোফতা কারি

উপকরণ: ছাড়ানো চিংড়ি ২০০ গ্রাম, টুকরো করে কাটা আলু ১টি, টম্যাটো কুচি ২টি, হলুদ গুঁড়ো ১ চা-চামচ, শুকনো লংকা পেস্ট ১ চা-চামচ, ঘি ১ টেবলচামচ, নারকেল বাটা অর্ধেক মালা, পেঁয়াজ বাটা ২টি, আদাবাটা ১ টেবলচামচ, তেজপাতা ২টি, সাদা জিরে, গরম মশলা আন্দাজমতো, সর্ষের তেল ৬ টেব্‌লচামচ, নুন স্বাদমতো।

আরও পড়ুন:শাশুড়ির জন্য সাধের উপহার

প্রণালী: চিংড়ির খোসা ছাড়িয়ে ভাল করে ধুয়ে মিক্সিতে পিষে নিতে হবে। একটু গোটা, গোটাই থাকবে। তার পর এই পেস্টে নারকেল বাটা আর সামান্য আটা দিয়ে নুন সহযোগে ভাল করে মেখে ডুবো তেলে পকোড়ার মতো ভেজে নিতে হবে। এর পর কড়াইতে আন্দাজমতো তেল দিয়ে, তেজপাতা ও সাদা জিরে ফোড়ন দিয়ে আলু ও টম্যাটো কুচি দিতে হবে। আলু একটু ভাজা হলে পেঁয়াজ,আদা ও নারকেল বাটা দিয়ে ভাল করে কষতে হবে। সঙ্গে নুন, হলুদ, লংকা বাটা দিয়ে ভাল করে কষিয়ে, জল দিতে হবে। আলু সেদ্ধ হলে কোফতাগুলো ছেড়ে দিন ঝোলে। হয়ে এলে একটু চিনি, ঘি আর গরম মশলা ছড়িয়ে দিয়ে নামিয়ে নিন।

বেগুন বাহার

উপকরণ: বড় বেগুন ৩টি, কিশমিশ আন্দাজমতো, বড় পেঁয়াজবাটা ১টি, টক দই ১০০ গ্রাম, আদা বাটা ১ চা-চামচ, ঘি আন্দাজমতো, গরমমশলা, তেজপাতা ও সাদা জিরে ফোড়নের জন্য, হলুদ গুঁড়ো ১ চা-চামচ, শুকনো লংকা পেস্ট ১ চা-চামচ, নুন স্বাদমতো।

প্রণালী: বোটা সহ বেগুন লম্বা লম্বা করে কেটে নিতে হবে। বেগুনে নুন-হলুদ মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখুন। এর পর কড়াইতে তেল গরম করে, সাদা জিরে আর তেজপাতা ফোড়ন দিন। পেঁয়াজ বাটা, টক দই ও আদা বাটা ঢেলে ভাল করে কষিয়ে নিন। যখন তেল ছাড়বে, তখন হলুদ ও শুকনো লংকা পেস্ট দিয়ে আবার কষান। কষা হলে অল্প জল দিয়ে দিন। জল ফুটলে বেগুনগুলো
ছেড়ে দিন এবং ঘি গরম মশলা আর কিশমিশ দিয়ে নামিয়ে নিন।

পঞ্চ রুই

উপকরণ: বড় রুই মাছ ৫০০ গ্রাম, টম্যাটো (কুচি) ৪টি, ধনে পাতা ১ আঁটি, কাঁচা লংকা ৮-১০টি, আদাবাটা ২ টেবলচামচ, রসুন বাটা ২ টেবলচামচ, ফোড়নের জন্য মেথি, নুন স্বাদমতো।

প্রণালী: মাছগুলো শুধু নুন মাখিয়ে ভেজে নিন। গরম তেলে মেথি ফোড়ন দিয়ে নেড়েচেড়ে মেথিগুলো ফেলে দিন। এ বার টম্যাটা কুচি দিয়ে ভাল করে কষান। তেল ছেড়ে দিলে আদা, রসুন, নুন দিয়ে একসঙ্গে কষিয়ে এক চামচ মিষ্টি দিন। এ বার কাঁচা লংকা আর ধনেপাতা দিয়ে মাছগুলো ছেড়ে দিন। একটু জল দিয়ে ঢেকে দিন। এক মিনিট পর নামিয়ে নিন।

চালকুমড়োর শুক্তো

উপকরণ: চালকুমড়ো ঝিরিঝিরি করে কাটা ১টি, নারকেল বাটা (অর্ধেক মালা), রাঁধুনি অল্প, তেজপাতা কয়েকটি, গোটা শুকনো লংকা ২-৩টি, সাদা তেল ৩ টেবলচামচ, নুন-চিনি স্বাদমতো।

প্রণালী: অল্প সাদা তেল গরম করে, তাতে রাঁধুনি, তেজপাতা, শুকনো লংকা ফোড়ন দিন। তার পর চালকুমড়ো ঢেলে দিন। সঙ্গে নারকেল বাটা। নুন দিয়ে নেড়েচেড়ে ঢাকা দিয়ে দিন। ঢিমে আঁচে পুরো সেদ্ধ হতে দিন চালকুমড়ো। মাঝে মাঝে নাড়তে থাকুন। সব জল শুকিয়ে গেলে ভাল করে শুকিয়ে নিন। চিনি দিন স্বাদ মতো। পুরো তেল বেরিয়ে এলে বুঝবেন, জামাই স্পেশ্যাল শুক্তো পুরোপুরি তৈরি।

অনুলিখন:
স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়

ছবি: শুভেন্দু চাকী

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE