Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

কেন মানুষ চোর হয়

নাট্যরঙ্গ-র নতুন প্রযোজনা ‘রাম শ্যাম যদু’ নাটকে বাদল সরকারের ‘রাম শ্যাম যদু’ জেল থেকে পালিয়ে আজও এই ইন্টারনেটের যুগে কী করে মানুষের মনের মধ্যেও সেঁধিয়ে যায়, সেটা ‘নাট্যরঙ্গ’-র প্রযোজনায় অনুভব করা গেল। তিন মূর্তির নানা কীর্তি। মজা, সঙ্গে শ্লেষ।

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৬ ০০:০০
Share: Save:

বাদল সরকারের ‘রাম শ্যাম যদু’ জেল থেকে পালিয়ে আজও এই ইন্টারনেটের যুগে কী করে মানুষের মনের মধ্যেও সেঁধিয়ে যায়, সেটা ‘নাট্যরঙ্গ’-র প্রযোজনায় অনুভব করা গেল। তিন মূর্তির নানা কীর্তি। মজা, সঙ্গে শ্লেষ। এই নাটকের পরিচালক অভিজিৎ দে। তিন দাগি আসামি রাম, শ্যাম এবং যদু জেল থেকে পালিয়ে ছদ্ম পরিচয়ে কালীগঞ্জে জনৈক ভবানী চৌধুরী-র বাড়িতে আশ্রয় নেয়। সর্বস্ব চুরি করে পালিয়ে যাওয়াই ছিল তাদের মূল উদ্দেশ্য। কিন্তু আশ্রয় পেয়ে সেই পরিবারের আন্তরিক আতিথ্যে তারা যেন জীবনের আসল মানে খুঁজে পায়। তখন তারা এই পরিবারকে নানা প্রতিকূল পরিবেশ এবং শত্রুদের হাত থেকে বাঁচায়। নাটকে ঘটতে থাকে একের পর এক ঘটনা।

পেশাদার থিয়েটারে এই নাটকটি অভিনীত হয়েছিল ‘গ্রেট ইস্টার্ন স্টোর্স’ নামে। শ্যামল সেনের পরিচালনায়। অভিনয় করেছিলেন বিমল দেব, শ্যামল সেন এবং অনুপ কুমার।

এ বার এই তিন চরিত্রে পরিচালক অভিজিৎ দে’র রাম, অর্ণব রায়ের শ্যাম এবং সুমন পালের যদু প্রশংসার দাবি রাখে। বাকিদের মধ্যে কুটিল শুকদেবের চরিত্রে সায়ন্তন রায়চৌধুরীর নাম করতে হয়। মহিলা শিল্পীদের অভিনয় বেশ দুর্বল। বিশেষ করে মৌলি সাহা’র অরু খুবই আড়ষ্ট। সময় নিয়ে এক বিভ্রাট দেখা দেয়। ফ্যান্টাসির মোড়কে লেখা হলেও আজ আর কোথায় কালীগঞ্জের মতো গ্রাম আছে! কিন্তু নাটক যখন রাম শ্যাম যদুর অদ্ভূত কীর্তি কলাপ নিয়ে এগোতে থাকে, তখন আর মনে অন্য কোনও প্রশ্নের অবকাশ ছিল না। তবে নাটকে ছিল সরাসরি আবেদন। যার মধ্যে রাজনীতি অর্থনীতি সমাজনীতি সবই আছে না হলে রাম শ্যাম যদু চোর হয় কেন।

এ নাটকে জয়ন্ত দাসের আলো বড় ভুমিকা নিয়েছে। আবহে অনিন্দ্য নন্দী নজর কাড়েন।

গোলাপ কলোনির কাণ্ড

‘চিড়িয়াখানা’ নাটকে

সম্প্রতি শিশিরমঞ্চে অনুষ্ঠিত হল মুম্বই-এর শখের থিয়েটার প্রযোজিত শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাটক ‘চিড়িয়াখানা’। যত অদ্ভুত ঘটনা যেন গোলাপ কলোনিতেই ঘটে! কিন্তু, কী এমন ঘটনা ঘটল, যার জন্য অবসরপ্রাপ্ত জজসাহেব নিশানাথ সেন সত্যান্বেষী ব্যোমকেশ বক্সীর শরণাপন্ন হলেন? বাস্তবে নিশানাথের এই গোলাপ কলোনিতে বিচিত্র সব মানুষজন বসবাস করেন। তাঁদের আচার-আচরণ, হাবভাব বড়ই অদ্ভুত! আক্ষরিক অর্থেই গোলাপ কলোনি যেন একটি চিড়িয়াখানা! সবাই সবাইকে চেনে, অথচ না চেনার ভানও করে। আবার অন্যের ব্যাপারে নাক গলাতেও কসুর করে না। সেখানে হঠাৎ করেই এমন সব বিচিত্র ঘটনা ঘটতে থাকল, বুদ্ধিতে তার যথার্থতা খুঁজে পাওয়া যেন দুরূহ কাজ। ব্যোমকেশ বক্সী সেই কারণ অনুসন্ধানে উদ্যত হলেন। আর ঠিক তখনই ঘটে যায় সব থেকে বড় অঘটন। নাটকের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত টানটান উত্তেজনা। প্রায় প্রত্যেকেই ভাল অভিনয় করেছেন। ব্যোমকেশ বক্সী (দেবাশীষ রায়) এবং অজিত (সব্যসাচী হাজরা) প্রাণবন্ত। ভাল লাগে নিশানাথ (অমিত দেব) এবং বিজয়কে (রাজশ্রী চট্টোপাধ্যায়)। মঞ্চসজ্জায় বেশ অভিনবত্ব আছে। মধুছন্দা মুখোপাধ্যায় এবং সুমিতা ঘোষের নির্দেশনা প্রশংসনীয়।

পিনাকী চোধুরী

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

theater
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE