Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

মার্কস, লেনিন সাহেব ও চন্দন

চিনে লং মার্চ চলছে। সাইকেল নয়, রাস্তায় সার সার মার্সিডিজ বেঞ্জ আর বিএমডব্লিউ। বহু ঠোক্কর খেয়ে মাও জে দং-এর দেশ আসল কথাটা শিখেছে। বন্দুকের নল নয়, ধনতন্ত্রই শক্তির উৎস।চিনে লং মার্চ চলছে। সাইকেল নয়, রাস্তায় সার সার মার্সিডিজ বেঞ্জ আর বিএমডব্লিউ। বহু ঠোক্কর খেয়ে মাও জে দং-এর দেশ আসল কথাটা শিখেছে। বন্দুকের নল নয়, ধনতন্ত্রই শক্তির উৎস।

অভ্রভেদী: শত পুষ্প বিকশিত, তবু চেয়ারম্যান আজ বিস্মৃত। চেংদু শহরে মাও-এর মূর্তি। সামনে কেয়ারি-করা ফুলের বাগান। ছবি: গেটি ইমেজেস

অভ্রভেদী: শত পুষ্প বিকশিত, তবু চেয়ারম্যান আজ বিস্মৃত। চেংদু শহরে মাও-এর মূর্তি। সামনে কেয়ারি-করা ফুলের বাগান। ছবি: গেটি ইমেজেস

অভীক সরকার
শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

মাটি থেকে প্রায় তিরিশ হাজার ফুট উঁচুতে উড়ছি আমরা। দুজনেই দিল্লি যাত্রী।সেই সময় উনি বললেন, আপনি তো আসলে আমাদেরই দলের। হকচকিয়ে জিগ্যেস করলাম, সেটা আবার কেন? তিনি বললেন, কারণ ইতিহাস আমাদের দিকে। জয় আমাদের হবেই। আপনি হলে আপনি, না হলে আপনার ছেলেমেয়েরা আমাদের দলে আসবেনই। এটাই ইতিহাস।

কথা হচ্ছিল সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক অনিল বিশ্বাসের সঙ্গে। রাজনীতি যাই থাক, অনিলবাবু সাংবাদিকদের সঙ্গে সহজভাবে মিশতে জানতেন এবং সেই সুযোগে মনের আসল কথাটা ব্যক্ত করতেও জানতেন। হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলাম। উত্তরের প্রয়োজন মনে করিনি। কিন্তু উত্তর দেওয়ার সুযোগ কিছুদিন বাদে চলে এল।

আমি ধনতন্ত্রের অতন্দ্র প্রহরী। অনিলবাবু আমার চোখে বাম-প্রতিক্রিয়াশীল। পার্টির কাজে প্রায়ই ওঁকে দিল্লি যেতে হত, আমার কাজে আমাকে। এর পরে যখন দেখা হল, আবার প্লেনে, অনিলবাবু খুব মৃদুস্বরে আনন্দবাজারের কিছু লেখার বিরুদ্ধে কথা বলছিলেন। আমি বললাম, ‘‘অনিলবাবু, আপনি কি বলেন আসে-যায় না। আপনি তো আসলে আমার দলের।’’ এ বার অনিলবাবুর চমকানোর পালা। বললেন, কেন? আমি বললাম, ‘‘চন্দন বসুর ব্যাপার তো শুনেছেন? (কমিউনিস্ট জ্যোতি বসুর ছেলে চন্দনের ধনতান্ত্রিক কার্যকলাপ তখন একটু জানাজানি হচ্ছে।) জয় আমাদের অনিলবাবু। ইতিহাস আমাদের দিকে। আপনি না হলে আপনার মেয়ে, তিনি না হলে আপনার নাতি-নাতনি— আমাদের ঘরে আপনারা সবাই আসবেন। এটাই ইতিহাসের শিক্ষা।’’

এত দিন জেনে এসেছি, বাংলা আজ যা ভাবে ভারতবর্ষ তা ভাবে কাল। এ বার চিনে গিয়ে বুঝলাম, বাংলা যা ভাবে আজ, চিনও তা ভাবে কাল। মাও জে দং একবার বলেছিলেন, শত পুষ্প বিকশিত হোক। তাঁর উত্তরাধিকারীরা যেন বলতে চান, শত চন্দন সুরভিত হোক। চিনে এখন চলছে ধনতন্ত্রের মহাযজ্ঞ।

অর্ধশতক ধরে এই জাতি কষ্ট স্বীকার করে সমাজতন্ত্র গঠনে প্রয়াস করেছিল, সাংস্কৃতিক বিপ্লব নামক এক অদ্ভূত রাজনীতি প্রবর্তন করেছিল। সদর্পে ঘোষণা করেছিল, বিপ্লব এক চলমান প্রক্রিয়া। যার অন্ত হওয়া সম্ভব নয়। ছেলে-ছোকরাদের বলেছিল, পার্টির সদর দুর্গেই আঘাত হানতে হবে। কারণ, পার্টিও অভ্যাসের দাস হয়ে যায়। হয়ে ওঠে প্রতিক্রিয়ার স্বর। সেই চিন সদম্ভে এ-ও বলেছিল, প্রগতিশীল বাঙালিরা একত্রিত হয়েছে জমিদার, সাম্রাজ্যবাদী জ্যোতি বসুর সরকারের পতন ঘটাতে। এখনকার চিনে কেউ বিপ্লব নিয়ে কথা বলে না। আমলাই হোন, কাগজের সম্পাদকই হোন বা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য— মার্কস বা মাও নিয়ে কথা বলতে কেউ আগ্রহী নন। কতটা জানেন, তা নিয়েও সংশয় থেকে যায়।

আরও পড়ুন:ফেসবুকে সাফল্যের কথা লেখার পরেই খুন তরুণী

চিনে এখন সম্ভোগী সমাজ। রাস্তাঘাটে বিদেশি পণ্যের প্রচার। সন্ধে নামলে নিয়ন আলোয় উজ্জ্বল হোর্ডিং। যাতে বিদেশি পণ্য আলিঙ্গনের হাতছানি। সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সময় যখন গিয়েছিলাম, তখন দেখেছিলাম বড় বড় হোর্ডিংয়ে থাকত মাওয়ের ছবি ও বাণী। হোর্ডিং এখনও একই রকম আছে। তবে তা সগর্বে ঘোষণা করে নতুন আইফোন, নতুন কোনও সুইস ঘড়ি, ফরাসি সুগন্ধি বা ইতালির পোশাক-আশাক। রাস্তাঘাটে আগে দেখা যেত সাইকেল আর সাইকেল। এখন মার্সিডিজ বেঞ্জ, বিএমডব্লিউ-দের ছড়াছড়ি। এত নিনাদ যেখানে, সেখানে নিশ্চয়ই ক্রেতা আছে। সেই ক্রেতাদের হাতে যথেষ্ট টাকাও আছে এই বিলাসে ব্যয় করার জন্য।

অনিল বিশ্বাস থেকে চন্দন বসু! চিনের এই পরিবর্তন কী ভাবে হল? বাঙালি বিপ্লবীরা কলকাতায় পোস্টার সেঁটে জানিয়েছিলেন বিপ্লবের পথ ত্বরান্বিত করুন। চেয়ারম্যানের চিনও আক্রান্ত হতে পারে। আক্রান্ত হওয়া দূরে থাক, নিজের দেশেই চেয়ারম্যান প্রায় বিস্মৃত। টাকার নোটে গাঁধীর মতো তাঁরও ছবি থাকে। কিন্তু আমাদের দেশে প্রায় সর্বত্রই গাঁধীর স্ট্যাচু দেখা যায়। রাজধানী বেজিং থেকে হাজার দেড়েক কিলোমিটার দূরে চেংদু শহর ছাড়া আর কোথাও মাওয়ের স্ট্যাচু চোখে পড়ল না। আছে হয়তো এ দিক–ওদিক। তবে সেটাও আমার অনুমান।

মাওয়ের মৃত্যুর পরেই দল ঘোষণা করে দিল, সাংস্কৃতিক বিপ্লবের ছুটি। নতুন মন্ত্র হল, চার প্রগতি। ১৯৬৩ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ঝাও এন লাই বললেন, শিল্প-কৃষি-প্রতিরক্ষা-বিজ্ঞান এই চারের উন্নয়ন ছাড়া বিকাশ অসম্ভব। একে চেয়ারম্যানের চিন, তার ওপর ঝাও এন লাইয়ের ভঙ্গুর রাজনৈতিক স্বাস্থ্য। স্বাভাবিক ভাবেই তাঁর কথায় সেদিন কেউ কর্ণপাত করেনি। মাওয়ের মৃত্যুর কিছুদিন বাদে দেং জিয়াও পিং পরিস্থিতি কব্জা করতে সক্ষম হলেন। ১৯৭৮ সালে চিন সরকারি ভাবে ঘোষণা করল চার প্রগতিই এখন একমাত্র পাথেয়। বলেই ক্ষান্ত হল না। কী ভাবে হবে, সেটাও জানিয়ে দেওয়া হল। দেং বললেন, বেড়াল সাদা না কালো কী আসে-যায়! ইঁদুর ধরতে পারলেই হল। ইঁদুর ধরতে গিয়ে চিন আরম্ভ করল বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড)। যেটা পশ্চিমবঙ্গে চালু করতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোরতর আপত্তি। যার ফলে পশ্চিমবঙ্গে ইনফোসিসের নতুন লগ্নি বন্ধ হয়ে গেল। বাঙালিদের কাছে ইঁদুর ধরা নয়, বেড়ালের রঙটিই একমাত্র বিচার্য।

চিন ঘোষণা করল দেশ এক হতে পারে, কিন্তু ব্যবস্থা দুই। দ্বিতীয় ব্যবস্থায় সব রকম আইন হয় শিথিল নয় প্রায় অনুপস্থিত। ঠিক ওই সময়ে আমার কয়েক জন পরিচিত বন্ধু চিনে ব্যবসা করেন এবং কারখানা স্থাপন করেন। এক জন নামি মার্কিন কোম্পানির প্রতিনিধি। অন্য জন নিজে ব্যবসায়ী এবং চিনে যৌথ উদ্যোগে রত। দুজনেই আমাকে বলেন, ব্যবসার পক্ষে চিন স্বর্গরাজ্য। তাঁদের বলা হয়, যখন ইচ্ছে তখন কাউকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা যাবে। কোনও কারণ দেখানো প্রয়োজন হবে না।

ব্যবসায়ী বন্ধুর প্রথম কারখানাটি চিনের একটু ভিতর দিকে। কোনও এক সোমবার তাঁর সঙ্গে চিনা সরকারি প্রতিনিধিদের মিটিং ছিল। বন্ধু একদিন আগে রবিবারই পৌঁছে যান। উদ্দেশ্য একটু ঘোরাঘুরি করবেন এবং চিনা খাবার খাবেন। শহরে পৌঁছনো মাত্র মেয়রের অফিস থেকে ফোন। বলা হল, যদি তিনি তাঁর সহকর্মীদের নিয়ে মধ্যাহ্নভোজে যান তাহলে মেয়র খুব ‘সম্মানিত’ বোধ করবেন। ব্যবসায়ী ভদ্রলোক গিয়ে দেখলেন, শুধু মেয়র নন, প্রতিটি সরকারি দফতরের প্রতিনিধি সেখানে উপস্থিত। কোনওক্রমে খাওয়া শেষ করেই মেয়র শুরু করলেন আলোচনা। সবগুলো বিষয়েই কথা হল। এবং তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তও। পরদিন সোমবার কাজের অর্ধেক সময় গেল চুক্তির বয়ান নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্তে। বিকেলে তাঁদের দেখানো হল কী কী জমি কী কী দামে তাঁরা দিতে রাজি। মঙ্গলবার চেক সই এবং জমি হস্তান্তর। আমার বন্ধু এতই আপ্লুত যে এখন মাসে দশদিন তিনি চিনেই ব্যয় করেন।

উসেন বোল্টের চেয়েও দ্রুত গতিতে ব্যবসার ফল যাঁরা চিনে গেছেন, তাঁরাই দেখেছেন এবং অভিভূত হয়েছেন। কলকাতার বামপন্থী রাষ্ট্রবিজ্ঞানী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অভিমত, চিন এখন পৃথিবীর সব থেকে দক্ষ ধনতান্ত্রিক রাষ্ট্র। কিন্তু জানলা খুললে কিছু মাছি-মশা আসবে। কথাটা স্বয়ং দেং বলেছিলেন। অবশ্য এই মাছি-মশা নিয়ে তাঁদের কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই।

চিনের উন্নয়ন দু’টি স্তম্ভের উপর দাঁড়িয়ে। এক, ম্যানুফ্যাকচারিং (যার অনুকরণে নরেন্দ্র মোদীর মেক ইন ইন্ডিয়া)। দুই, কনস্ট্রাকশন। তার জন্য চাই জমি। টাকা জমি, জমি টাকা। বেসরকারি লগ্নি, টাকা দিচ্ছে সরকারি ব্যাঙ্ক, জমি দিচ্ছে সরকার। যাঁরা এই সুযোগ পাচ্ছেন, তাঁরা রাতারাতি কুবের হয়ে যাচ্ছেন।

চিনে সু্প্রিম কোর্ট নেই। নেই বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়। কে সুযোগ পাবেন, তাতে স্বচ্ছতারও কোনও বালাই নেই। সুযোগ স্বাভাবিকভাবেই পেয়েছেন পার্টির লোক বা তাঁদের আত্মীয়স্বজনেরা। শুনলাম চিনের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী লি পেং-য়ের (যিনি বেজিংয়ের বুকে আন্দোলনকারী ছাত্রদের উপর ট্যাঙ্ক চালিয়েছিলেন) পরিবার বেজিং শহরের বেশ কিছু জমি হাতাতে পেরেছেন। কোনও সাক্ষ্যপ্রমাণ নেই। তবু দুষ্টজনেদের মুখ তো বন্ধ হয় না! তারা এ-ও বলে, মাত্র ৬০টি পরিবারের দখলে রয়েছে চিনের অর্থনীতি। পাকিস্তানে বলা হত, তাদের অর্থনীতি ১০টি পরিবারের কবলে। সেই ১০টি পরিবারের বাহুল্য এবং সাধারণে দারিদ্র্যের বৈপরীত্য বেশ চোখে পড়ে। চিনে তা নয়। কিছু লোক নিশ্চয়ই বেশি সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু এক বিশাল সংখ্যক মানুষের হাতে এসেছে অর্থ এবং স্বাচ্ছন্দ্য। নামি ব্র্যান্ডের দামি পণ্যের বিক্রি থেকেই এটা পরিষ্কার।

আমি গুইলিন শহরে একটি বিদেশি হোটেলে ছিলাম। অনেক চিনা লোকজন দেখে কৌতূহল হল, এরা কারা? আমেরিকা বা ইউরোপ থেকে বেড়াতে আসা প্রবাসী চিনা? হোটেলের ম্যানেজার বললেন, না না! এরা সবাই চিনের নাগরিক। এখানে এসেছেন ছুটি কাটাতে। দিল্লি, মুম্বই ছাড়া ভারতে ওই শ্রেণির বিদেশি হোটেলে এত দেশি লোকের ভিড় আমি দেখিনি। মাছি-মশা আছে, কিন্তু মার্সিডিজ বেঞ্জ বা বিএমডব্লিউ বিক্রি তা দিয়ে ব্যাখ্যা করা য়ায় না। আমেরিকার কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বাঙালি অধ্যাপক আমাকে বলেছেন তাঁর চিনা ছাত্রছাত্রীদের বৈভব দেখার মতো। প্রথম বর্ষের এক ছাত্রী পড়তে এসেই ফ্ল্যাট কিনলেন নিউ ইয়র্কের সেন্ট্রাল পার্ক অঞ্চলে। যেটা দিল্লি শহরে প্রায় আওরঙ্গজেব রোডে বাড়ি কেনার মতো।

আমার একটা তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা আছে। তা হল, বিপ্লবের আদি দিশারী কার্ল মার্কস ধনতন্ত্রের প্রতি বিরূপ ছিলেন না। ধনতন্ত্র যে খুব খারাপ, তা নয়। সামন্তন্ত্রের চেয়ে তা অনেক উন্নত। কিন্তু ধনতন্ত্র নিখুঁত নয়। তাই তার দুর্বল ফাঁকফোকর দিয়ে রোগ বাসা বাঁধবে। সমাজতন্ত্র আরও উন্নত। এবং এই রোগের একমাত্র ওষুধ। মার্কস বলেছিলেন, বিপ্লব প্রথম হবে জার্মানিতে। হল কিন্তু রাশিয়াতে। এবং সেখানে সামন্ততন্ত্র থেকে একধাপে প্রায় ডবল প্রমোশনের মতো সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা হয়। একটা বক্তব্য, লেনিন এ ভাবে মার্কসকে বিকৃত করেছেন। লেনিন-ভক্তদের মতে, ওটা বিকৃতি নয়, বিস্তৃতি।

চিন মাওয়ের আমলে মোটামুটি সোভিয়েত-পন্থাই অবলম্বন করে— বড় খামার, সরকারি কারখানা ইত্যাদি। কিছুদিন চললেও আসলে তা বিজয় মাল্যের ব্যবসার মতো। বাঙালি ব্যাঙ্কার অরুন্ধতী ভট্টাচার্যের ভাষায়, নন পারফর্মিং অ্যাসেট। অর্থাৎ সরকার নামক গৌরী সেনের কল্যাণে প্রতিষ্ঠানগুলি সচল। কিন্তু আসল ছবি তা নয়। (যেমন সরকারের অধীনে একদা কলকাতার গ্রেট ইস্টার্ন হোটেল বা দিল্লিতে এয়ার ইন্ডিয়া)। রাশিয়ায় বিপ্লবের ডঙ্কা বাজতে দেখে আশঙ্কিত চিনা নেতৃত্ব ধরে নিলেন, লেনিনের পথ ভুল। সমাজতন্ত্র এখনও তাঁদের লক্ষ্য। কিন্তু সমাজতন্ত্র আনতে গেলে ধনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ইউরোপে শিল্প বিপ্লবে স্বাভাবিক ভাবে বিকাশ হয়েছিল ধনতন্ত্রের। চিনে ধনতন্ত্রের বিকাশ হচ্ছে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায়। লেনিনের পথ ছেড়ে চিনারা যাচ্ছেন ধ্রুপদী মার্কসের পথে। আগে ধনতন্ত্র পরে সমাজতন্ত্র। ধনতন্ত্র নেই, আগে সেটা পত্তন করা যাক। চিন তাই নিজেদের অবস্থানকে বলে প্রিমিটিভ সোশ্যালিজম। যা ধনতন্ত্রেরই নামান্তর।

লেনিন ছেড়ে মার্কস। এটাও এক ধরনের লং মার্চ।

(আগামী সপ্তাহে ক্যাপিটালিস্ট খরগোশের তিন কাহিনি)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE