Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব ৩৩
bengali literature

মায়া প্রপঞ্চময়

আমার হাত থেকে মুক্তি পেতে তুমিও দেখছি ছটফট করছ! এখনও আমার প্রারব্ধ শেষ হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না। আমি আত্মহত্যা করতে চাইনি, এটা দুর্ঘটনাই।

ছবি: প্রসেনজিৎ নাথ

ছবি: প্রসেনজিৎ নাথ

কানাইলাল ঘোষ
শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২০ ০০:০৫
Share: Save:

একটু থেমে আবার অনিকেত বলে, ‘‘দাদুর ব্যাপারটা ছিল আবার অন্য রকম, নিজের জীবনে খেটেখুটে, কোনও রকম নেশা না করে উপার্জনের টাকা জমিয়ে জমিয়ে অনেক জমি কিনেছিলেন। আশপাশের লোকেরা বড় জোতদার বলে সম্মান করত, উনি তাতেই খুশি ছিলেন। আইনকানুন নিয়ে মাথা ঘামাননি। উনিশশো আটাত্তর-উনআশি সালে ভূমি-সংস্কারের সঙ্গে সঙ্গে ওঁরও আমূল সংস্কার হয়ে গেল। সঙ্গে এল অপারেশন বর্গা, উনি সেটাকে নবাবি আমলের বর্গি অপারেশনের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলতেন। মাথাটা একটু বিগড়ে গিয়ে থাকবে হয়তো। শেষ বয়সে পুরনো দলিল-পরচাগুলো বগলদাবা করে ঘুরতেন আর বিড়বিড় করতেন, ‘এ সব আমার ছেঁড়া তমসুক! আমার জমি চলে গিয়েছে যাক, কিন্তু এগুলো কেউ আমার কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারবে না। কোনও সরকার নয়, এমনকি ভগবানও নয়! এ আমার স্বোপার্জিত।’ নব্বই বছর বয়সে উনি যখন মারা গেলেন, তখন ওই সব তামাদি কাগজের বান্ডিল ওঁর চিতায় এক সঙ্গে ভস্মীভূত হল। জানি না, আজও উনি সেগুলো বুকে আঁকড়ে ঘুরছেন কি না!’’

বিবেককে এত ক্ষণে একটু নরম মনে হয়, ‘‘তার মানে বলতে চাইছ, একই বংশের ছেলে হয়ে তুমিও বংশের ধারা বজায় রাখছ? কিন্তু কী লাভ হবে তাতে, শুধু দুঃখের ভার বাড়ানো ছাড়া তো কিছু নয়? বরং ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করলে হয়তো এত দিনে সব ভুলে স্বাভাবিক হতে পারতে।’’

অনিকেত ম্লান হাসে, বলে, ‘‘বিষয়টা কি এক দিনের, যে ভুলে যাওয়া যাবে? ভুলে যাওয়ার এক্সপেরিমেন্ট করতে এমন কোনও নেশা নেই, যা করিনি। হাতের কাছে যা পেয়েছি, কোনওটা বাদ দিইনি। মুঠো মুঠো স্লিপিং পিল খেয়েছি, হাত-পা কাঁপা রোগ ছাড়া আর কোনও উপকার হয়নি তাতে। তার পর এক দিন বংশগতির ধারাকেই আঁকড়ে ধরলাম। যে সম্পর্কের বর্তমান নেই, ভবিষ্যৎও নেই, সেখান থেকে অতীতকে অন্তত কেউ কেড়ে নিতে পারে না। ঠাকুরদা-ঠাকুরমার চরম উপলব্ধিটা শেষ পর্যন্ত কাজ করল বাঁচার উপকরণ হিসেবে। সরকার হোক কিংবা নিয়তি— কেউই পুরোপুরি নিঃস্ব করতে পারে না এই একটা জায়গায়— স্মৃতি কেউ কেড়ে নিতে পারে না, একদম পাগল না করে দিয়ে!’’

বিবেক বোসের সঙ্গে কথাবার্তা চললেও অনিকেতের মনটা পড়ে ছিল শরীরের কাছেই। এত দিনের সঙ্গী হিসেবে একটা মায়া পড়ে গিয়েছে। তা ছাড়া একটা কৌতূহলও আছে, এর পর আর কী আছে বা হতে পারে! বিরাট টেনশনের কিছু নয়, কারণ আগের বারও বেশ কয়েক ঘণ্টা ও বাইরে ঘোরাঘুরি করেছিল, তার পর আবার শরীরস্থ হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। যে সেটা সম্ভব করেছিল, সে এ বার কী করবে, সেটাও একটা প্রশ্ন! তাই বেঞ্চ থেকে উঠে ও আবার ভিড়টার দিকে যাওয়ার উপক্রম করতে বিবেক গা ঝাড়া দেয়, বলে, ‘‘চললে আবার ওই দিকে? বেশ, তবে তিনি এত ক্ষণে মাঝরাস্তায়। যত তাড়াতাড়িই করুক, এসে পৌঁছতে আরও আধ ঘণ্টা-চল্লিশ মিনিট ধরে রাখো। তত ক্ষণে তো এরা তোমাকে নিয়ে কাছের নার্সিং হোমটায় পৌঁছে যাবে। আগের বার তোমার বাঁচার ইচ্ছে তোমার স্ত্রীর ইচ্ছাশক্তির সঙ্গে যোগ হয়ে তবে তোমার ফেরাটা নিশ্চিত করেছিল। না হলে অ্যাস্ট্রাল প্রজেকশনে আত্মা সব সময় তার শরীরে না-ও ফিরতে পারে। এ বারও কি তুমি ফিরতে চাও, না কি এই সূক্ষ্ম শরীরে বেশি আরাম বোধ করছ? ঠিক করে নাও তাড়াতাড়ি!’’

অনিকেত হেসে বলে, ‘‘আমার হাত থেকে মুক্তি পেতে তুমিও দেখছি ছটফট করছ! কিন্তু এখনও তো আমার প্রারব্ধ শেষ হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না। দেখেছ তো, আমি আত্মহত্যা করতে চাইনি এ বারও, এটা দুর্ঘটনাই। ও দিকে আবার ঠিক করে রেখেছিলাম পুরনো কাজের জায়গা বান্দোয়ানে এক বার যাব। সাতাশ বছর আগের কর্মস্থল দেখাই শুধু নয়, আমার সেই সময়ের সঙ্গী আর পাইলট বৃন্দাবনের সঙ্গেও দেখা করার ইচ্ছে ছিল। চলে গেলে সেটাও আর হবে না। পরিবারটাকেও তো একটু স্টেবল করা দরকার। কিছুই তো মন দিয়ে করতে পারিনি এতগুলো বছরেও। ফলে আমার ফেরারই ইচ্ছে, আর অনন্যার মনের কথা তুমি জানবে হয়তো।’’

বিবেককেও অনেকটা প্রসন্ন দেখায়, ‘‘আমি কটু কথা বলি শুধু তোমারই ভাল চেয়ে, না হলে তোমার চেয়ে ভাল সঙ্গী পাবই বা কোথায়? তা ছাড়া, বোঝোই তো, এক সঙ্গে থাকতে থাকতে একটা বোঝাপড়া গড়ে ওঠে, তোমার সঙ্গে আমার বা অনন্যার যেটা হয়েছে। তোমার গুণ-দোষ, ভাল-মন্দ— সব কিছু মিলিয়ে একটা গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করে নিয়েছি আমরা। যদিও এমনটা হতেই পারে যে, তোমাকে পছন্দ করার মতো একটা সদ্‌গুণও আসলে তোমার মধ্যে নেই!’’ বলে এক চোখ টিপে হাসে সে।

অনিকেত ঘাড় নাড়ে, ‘‘সেটা আমার চেয়ে ভাল কে জানে, বলো? তোমরা নিজগুণে আমাকে মেনে নিয়েছ, সে কারণে আমি কৃতজ্ঞ। তবে তার জন্যে আমার স্বভাব বদলে যাবে, এমন আশা করা ঠিক হবে না। যেমন ধরো, এই মুহূর্তে গীতগোবিন্দম্-এর যে শ্লোকটা মনে পড়ল— ত্বমসি মম ভূষণং, ত্বমসি মম জীবনং, ত্বমসি মম ভবজলধিরত্নম্। /ভবতু ভবতীহ ময়ি সততমনুরোধিনী তত্র মম হৃদয়মতিযত্নম্॥— এটা এক সময় কোনও এক জনকে শুনিয়েছিলাম। সেটা তো আর ফিরিয়ে নিতে পারি না। আবার একই কথা অনন্যার সম্বন্ধেও একশো ভাগ খাটে। বরং ও-ই এই বিনীত আবেদনের শুনানি এবং সিদ্ধান্তের একমাত্র হকদার। সুতরাং এ কথাটা যদি ওকেও বলি, তা হলে কি পুনরুক্তি দোষে দুষ্ট হবে?’’

বিবেক একটা চটুল হাসি উপহার দেয়, বলে, ‘‘তুমি আর কখনও শোধরাবে না! ঠিক আছে। বুঝলাম তুমি আস্তে আস্তে পথে আসছ, তবে কি না, ‘হুজুর আতে আতে বহুতই দের কর দি!’ যাই হোক, বেটার লেট দ্যান নেভার হল মন্দের ভাল। চেষ্টা চালিয়ে যাও, এক দিন পোড়ামুখে রামনাম ঠিকই বেরোবে। মনে হয়, অনন্যা আগের বারের মতো এ বারও তোমাকে ফেরানোর জন্যে ওর ইচ্ছাশক্তি প্রয়োগ করবে... ওকে আসতে দাও আগে।’’

বিবেক ঝিলের ধারেই বসে থাকে নিমীলিত নেত্রে, অনিকেত লোকজনের ভিড় এড়িয়ে দূর থেকে বোঝার চেষ্টা করে সর্বশেষ পরিস্থিতি। শরীরটা ধরাধরি করে স্ট্রেচারে তুলে অ্যাম্বুল্যান্সের ভিতরে ঢোকানোর সময় চাঁদু বলে ওঠে, ‘‘ম্যাডামের জন্যে একটু দেখে গেলে হত না? আমি তো ফোন করেছি চল্লিশ-পঁয়তাল্লিশ মিনিট আগে, এত ক্ষণে এসে যাওয়ার কথা কিন্তু। গাড়িও পাঠিয়েছি স্টেশন থেকে আনার জন্যে।’’

পাশ থেকে গৌরবাবু বলেন, ‘‘ওরে, আর দেরি করলে প্রাণটুকু খাঁচা থেকে বেরিয়ে যাবে যে! ও দিকে ডাক্তারদের রিকোয়েস্ট করে বসিয়ে রাখা হয়েছে, একটা মেডিক্যাল বোর্ডও চটজলদি তৈরি করা হয়েছে, পেশেন্টকে নিয়ে গেলে অ্যাডমিট করে তবে তো ট্রিটমেন্ট শুরু হবে। তুই ড্রাইভারকে ফোন করে দে, সোজা ওঁকে নিয়ে নার্সিংহোমে চলে আসুক, আমরা তত ক্ষণ এগোই।’’

অ্যাম্বুলেন্স সাইরেন বাজিয়ে রওনা দেয়, ফোন করতে করতে চাঁদু পিছন দিকে ঢুকে ওর শায়িত শরীরের পাশে বসে। নিশ্চিন্ত হয়ে অনিকেত এক বার জ়ু’প্রেমিসেস ঘুরে দেখার প্ল্যান করে। কে জানে আর সত্যিই এখানে আসা হবে কি না। জায়গাটা ওর ভাল লেগে গিয়েছিল। হাজার চাপ আর কর্মব্যস্ততা থাকা সত্ত্বেও। ও যখন দায়িত্ব নিয়েছিল, সেই সময় এক ক্রান্তিকাল চলছে। ন’-দশটা ছোট-বড় প্রজেক্টের কাজ মাঝপথে বন্ধ পড়ে রয়েছে। দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিতে দেখলে অধিকাংশ প্ল্যানই ভাল ছিল এই শতাধিক বছরের পুরনো চিড়িয়াখানার আধুনিকীকরণের খাতিরে, কিন্তু অনিবার্য কিছু কারণে সব কাজই আধখেঁচড়া অবস্থায় বন্ধ হয়ে পড়ে ছিল।

অনিকেত আসার পর ওর প্রথম কাজ ছিল, কর্মচারীদের ক্ষোভ সামাল দেওয়া। একে তো সরকারি চাকরির সুযোগ-সুবিধে এখানে নেই, তার উপর কম বেতনের কাজে পরিশ্রম এবং ঝুঁকি দ্বিগুণ। কিছু কর্মচারী মারা যাওয়ার পরও তাদের পরিবারের প্রয়োজনীয় আর্থিক ও অন্যান্য সুবিধে পেতে সমস্যা হচ্ছিল। অনিকেত সর্বাধিক জরুরি ভিত্তিতে সেই সব সমস্যার সমাধান করতে উদ্যোগী হয়েছিল। হয়তো সঙ্গে সঙ্গেই সবগুলোর সমাধান হয়নি, কিন্তু প্রশাসনের সদিচ্ছার বিষয়টা সবার নজর কেড়েছিল।

ওর দ্বিতীয় উদ্যোগ ছিল সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপন। যে কোনও কারণেই হোক, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মাধ্যম ভাল রকম বিগড়ে ছিল জ়ু-এর উপর। একটা কোর্ট কেসও চলছিল তখন বিশেষ এক সংবাদপত্রের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে। অনিকেতের মনে হয়েছিল যে, এই বিরূপ মনোভাব গড়ে ওঠার অন্যতম কারণ ঠিক তথ্য পরিবেশনের অভাব। সেটা কাটিয়ে ওঠার জন্য ও পাবলিক রিলেশনের দায়িত্বটা নিজের কাছেই রেখেছিল, সেই সঙ্গে শুরু করেছিল ছবি তোলা। কিছু দিন পরে এক সফিস্টিকেটেড ব্ল্যাকমেলার ওর চোখ খুলে দেওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়ে সেই ছবিও উৎসাহী মিডিয়াপার্সনদের সঙ্গে শেয়ার করা শুরু করে। সেই থেকে ওকে মিডিয়ার সহযোগিতা পেতে কোনও ঝামেলা পোহাতে হয়নি।

এর পর তৃতীয় লক্ষ্য ছিল অসমাপ্ত কাজগুলো পুনর্বিন্যস্ত করে যতটা সম্ভব কম খরচে উদ্যোগগুলো সম্পূর্ণ করা, যাতে সেগুলোর সুবিধে দর্শকসাধারণের সামনে খুলে দেওয়া যায়। অনিকেতের সুবিধে হয়েছিল ততটাই, যতটা সুবিধে এক জন রেডিয়ো বা টিভি মেকানিক নামী-দামি দোকান আর রিপেয়ারিং শপগুলোকে ছাড়িয়ে বাজারের শেষ প্রান্তে একটা ছোট্ট চালাঘরে বসে পেয়ে থাকে। মহালয়ায় মহিষাসুরমর্দিনী শুনতেই হবে, অথচ বিগড়ে যাওয়া যন্ত্রটা কোনও মেকানিক ছুঁতে চাইছে না বদনামের ভয়ে। সব হট্টগোলের বাইরে-থাকা একটা সব-হারানো মেকানিকের মতোই অনিকেতের আর নাম-বদনাম দিয়ে কী হবে? ফলে ও নির্দ্বিধায় প্রত্যেকটা কাজের জন্যে একটা করে স্টেটাস-রিপোর্ট তৈরি করে কাজে নেমে পড়ে এবং সকলের সাহায্য নিয়ে একের পর এক সেগুলোকে উতরেও দিতে থাকে। সুন্দর আর সফল ভাবে উদ্বোধনও হতে থাকে সেই সব প্রজেক্টের, যেগুলোর আশা অনেকে ছেড়েই দিয়েছিলেন, বিশেষ করে যাঁরা সেগুলোর ইতিহাস জানতেন।

ওর চতুর্থ ও শেষ টার্গেট ছিল চিড়িয়াখানার ভিতরে বাইরের লোকের খবরদারি আর হস্তক্ষেপ বন্ধ করা, যেটা প্রায় খাল কেটে কুমির আনার মতোই একটা সময়ে করা হয়েছিল। এক বার ভিতরে শিকড় মেলে বসার পর সেই অশুভ শক্তিকে আর পিঠ থেকে নামানো যাচ্ছিল না, অনেকটা বিক্রমাদিত্যের ঘাড়ে চেপে বসা সেই ভয়ঙ্কর বেতালের মতো। অনিকেত শুরুতেই আন্দাজ করেছিল যে, এই ব্যাপারটা খুব সাবধানে সামলাতে হবে। তাই ও কড়া নজর রাখার জন্য দিনের বেলা ছাড়াও রাতে যখন-তখন হানা দেওয়া আরম্ভ করেছিল। কিন্তু কোনও অবস্থাতেই ও জ়ু-তে রাত্রিবাস করত না। রাত জেগে ঘোরাঘুরি করে ভোরবেলা শুতে যেত উল্টো দিকের হসপিটাল এলাকায়। প্রায় ছ’মাস পর জ়ু-এর ভিতরটা অন্তত উপদ্রবমুক্ত হয়েছিল।

কারণ ডিরেক্টর হিসেবে সে কর্মচারীদের পূর্ণ সমর্থন পেয়েছিল।

কিন্তু এত সব করেও কী ফল লভিনু হায়? সারা জীবন অন্যদের কাছে ওর ভুমিকা তো কখনও কাকতাড়ুয়া, কখনও ঝুলঝাড়ু, কখনও মুড়ো ঝাঁটা কিংবা সঠিক ভাবে বলতে গেলে, ভাঙা কুলোর। ছোটবেলায় ও নিজেকে একটা নিখুঁত কলম হিসেবে ভাবত। তেমন দামি নয়, কিন্তু সেই কলমে ঝরঝরে আর পরিষ্কার লেখা যেতে পারে। একমাত্র মা জানতেন যে, কলমটার উল্টো দিকে একটা স্ক্রু-ড্রাইভারও আছে, যা প্রতিপক্ষকে টাইট দিতে কাজে লাগে! ভাগ্যদোষে এক জন জেনে বা না-জেনে তার জীবনের আলগা হয়ে-যাওয়া দু’-একটা স্ক্রু কলমের নিবের দিক দিয়েই টাইট দেওয়ার পর থেকে কলমের নিবটা অকেজোই হয়ে গেল। তখন থেকেই ও একটা টাইট করার যন্ত্রবিশেষ। তার বেশি কিছু নয়।

সেই কারণেই ক্রিয়েটিভ কিছু করার কথা ও আর মাথাতেই আনেনি কোনও দিন। শুধু বিগড়ে-যাওয়া মেশিনারি পেলে নিজের ধৈর্য আর তিতিক্ষা দিয়ে সারিয়ে তোলার চেষ্টা করে গিয়েছে। ফলও হাতে হাতে পেয়েছে তার।

(ক্রমশ)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bengali Literature Maya Prapanchamay
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE