Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

পাড়ুই-কাণ্ডে দুই পুলিশের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত

সাগর ঘোষ হত্যা মামলায় পাড়ুই থানার প্রাক্তন ওসি সম্পদ মুখোপাধ্যায় এবং তদন্তকারী অফিসার দ্বিজরাজ সাহানার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেছে বীরভূম জেলা পুলিশ। বৃহস্পতিবার এ কথা জানিয়েছেন জেলার পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া। তিনি বলেন, “সাগর ঘোষ হত্যা মামলাকে ঘিরে ওই দুই অফিসারের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এসেছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই আমরা তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেছি।”

সম্পদ মুখোপাধ্যায় ও দ্বিজরাজ সাহানা

সম্পদ মুখোপাধ্যায় ও দ্বিজরাজ সাহানা

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি ও পাড়ুই শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৪ ০৩:২৬
Share: Save:

সাগর ঘোষ হত্যা মামলায় পাড়ুই থানার প্রাক্তন ওসি সম্পদ মুখোপাধ্যায় এবং তদন্তকারী অফিসার দ্বিজরাজ সাহানার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেছে বীরভূম জেলা পুলিশ। বৃহস্পতিবার এ কথা জানিয়েছেন জেলার পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া। তিনি বলেন, “সাগর ঘোষ হত্যা মামলাকে ঘিরে ওই দুই অফিসারের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এসেছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই আমরা তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেছি।”

গত ২১ জুলাই পঞ্চায়েত ভোটের সময় পাড়ুইয়ে নির্দল প্রার্থী (বিক্ষুব্ধ তৃণমূল) হৃদয় ঘোষের বাবা সাগর ঘোষ খুন হন। ওই খুনে নিহতের পুত্রবধূ শিবানীদেবী তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী-সহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। প্রথম থেকেই নিহতের পরিবার পুলিশের বিরুদ্ধে খুনের তথ্যপ্রমাণ লোপাট এবং তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ আনেন। মাসখানেক আগেই ওই হত্যাকাণ্ডের তথ্যপ্রমাণ পাড়ুই থানার তৎকালীন ওসি এবং তদন্তকারী অফিসার লোপাট করে দিয়েছেন বলে বিশেষ তদন্তকারী দলের (সিট) কাছে রিপোর্ট পাঠান বীরভূমের সদ্য প্রাক্তন এসপি রশিদ মুনির খান। তিনি-ই ওই দু’জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরুর অনুমতি চান। তাঁর দাবি, খতিয়ে দেখে মনে হয়েছে, ওই দু’জনের গাফিলতি ছিল। সম্প্রতি সিটও আদালতের কাছে ওই দুই অভিযুক্তের ‘পলিগ্রাফ টেস্ট’-এর অনুমতি চায়। অনুমতি মিললেও দু’জনেই ওই পরীক্ষায় সম্মতি দেননি।

ওই মামলায় বীরভূমের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনন্দ রায়ের রিপোর্টেও দাবি করা হয়েছে, ‘পাড়ুই-কাণ্ডের তদন্ত ঠিক মতো হয়নি। সম্পদ এবং দ্বিজরাজ তদন্ত প্রক্রিয়াটাই ধামাচাপা দিতে চেয়েছিলেন। প্রমাণ লোপাটেরও চেষ্টা করেছেন।’ ঘটনায় বহু ক্ষেত্রে দু’জনের বেশ কিছু কাজের যুক্তিগ্রাহ্য ব্যাখ্যা মেলেনি। এক, জিডি খাতায় ওসির তদন্তে বেরনো বা ফেরার ভাষ্য অস্পষ্ট। দুই, ডায়েরির বয়ানে কাটাকুটি, একাধিক কালি ব্যবহার। তিন, কার্তুজ, রক্তের দাগ-সহ অন্যান্য তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহে গাফিলতি। চার, বারান্দার রক্ত, সাগরবাবুর লুঙ্গি ধুয়ে ফেলার নির্দেশ। পাঁচ, সাগরবাবুকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেরি। ছয়, সাদা কাগজে নিহতের পরিজনদের সই করিয়ে এফআইআরের বয়ান তৈরি। সাত, অভিযুক্তদের বদলে নিহতের আত্মীয়কেই গ্রেফতার। তদন্তের মোড় ঘুরিয়ে দিতেই ওই দুই অফিসার সক্রিয় হন বলে প্রাথমিক তদন্তে স্পষ্ট।

একই অভিযোগ জানিয়ে আসছে সাগরবাবুর পরিবার। হৃদয়বাবু বলেন, “ওই দুই অফিসার তথ্যপ্রমাণ লোপাট করেছেন। আসল অপরাধীদের আড়াল করেছেন। ক’দিন আগে পাড়ুই থানা থেকে নথি গায়েব হওয়াই প্রমাণ করে আমাদের অভিযোগ ভিত্তিহীন নয়।” নিরপেক্ষ তদন্ত হলে দুই অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হবে বলেই তাঁর ধারণা। বারবার যোগাযোগ করা হলেও অভিযুক্ত দুই পুলিশ অফিসার ফোন ধরেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

parui case
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE