বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় কয়েক জন গ্রামবাসীর বাড়ি ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সোমবার রাতে বীরভূমের ময়ূরেশ্বরের উপর বেজা গ্রামের ওই ঘটনার পর থেকে গ্রামছাড়া প্রায় ৫০টি পরিবারের পুরুষেরা। বীরভূমের পুলিশ সুপার রশিদ মুনির খান বলেন, “দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘরছাড়াদের গ্রামে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হবে।”
গত বছর পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের দখলে থাকা স্থানীয় দাসপলশা পঞ্চায়েতের অন্তর্গত উপর বেজা গ্রামের আসনটিতে তৃণমূল প্রার্থী জয়ী হন। বিজেপি মাত্র ২৪টি ভোট পেয়েছিল। কিন্তু, এ বার লোকসভা ভোটে বিজেপি ১৯৭টি ভোট পায়। তৃণমূলের দাবি, সিপিএমের ভোটারদের একাংশই গোপনে বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন। ফলপ্রকাশের পরে রবিবারই সিপিএমের প্রাক্তন উপপ্রধান সামাইল শেখের নেতৃত্বে ৫০টি পরিবারের প্রায় ২০০ জন বিজেপিতে যোগ দেন। বেজা বাসস্ট্যান্ডে একটি চায়ের দোকানে অস্থায়ী কার্যালয়ও তৈরি করেন। স্থানীয় বিজেপি নেতা প্রবীর দাসের অভিযোগ, “গ্রামে আমাদের প্রভাব বাড়ায় তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা সোমবার সন্ধ্যায় ওই চায়ের দোকান এবং আমাদের তিন কর্মীর বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। ওদের শাসানিতে আমাদের প্রায় ৫০ জন কর্মী-সমর্থক গ্রামছাড়া। তৃণমূলের ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হলেও পুলিশ কাউকে ধরছে না।”
এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, লাঠি, টাঙ্গি, বল্লম নিয়ে পাহারা দিচ্ছেন তৃণমূলের কিছু কর্মী-সমর্থক। আরও জনা কুড়ি যুবক সশস্ত্র অবস্থায় গ্রামে টহল দিচ্ছেন। কোথাও পুলিশ নেই। বিজেপি সমর্থকদের বাড়িতে হামলার চিহ্ন স্পষ্ট। বিজেপি-র অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি নারায়ণপ্রসাদ চন্দ্রের পাল্টা দাবি, “বিজেপির দুষ্কৃতীরাই আমাদের পাঁচ জনকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। তিন জন হাসপাতালে।” তৃণমূলের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশকে এক জনকে গ্রেফতারও করেছে।
অন্য দিকে, বসিরহাট লোকসভার শাসন, সন্দেশখালি এবং মিনাখাঁর বেশ কিছু এলাকায় তৃণমূল তাদের কর্মী-সমর্থকদের উপরে হামলা হচ্ছে, দাবি করে মঙ্গলবার বারাসতে পুলিশ সুপারকে স্মারকলিপি দেন বিজেপি নেতা তথাগত রায় ও শমীক ভট্টাচার্য। বারুইপুরেও বিজেপিকে ভোট দেওয়ায় মঙ্গলবার সকালে এক খেতমজুরের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাসক দলের বিরুদ্ধে। ওই খেতমজুরের ছেলে ও ভাগ্নে এবং আগুন ধরানোয় অভিযুক্ত এক তৃণমূল সমর্থককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
যাদবপুর কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থী সুজন চক্রবর্তীর নির্বাচনী এজেন্টের বাড়িতে লুঠপাট, ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। জিয়ারুল মোল্লা নামে ওই সিপিএম কর্মীর বাড়ি ভাঙড়ের কাঠজ্বালা-মানিকতলায়। সোমবার তাঁর পুকুরের মাছ লুঠ, বাগানের গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। ভাঙড়েরই কাশিয়াডাঙা, বনগ্রামে আরও কিছু সিপিএম কর্মীর বাড়িতে ভাঙচুর চালায় তৃণমূল বলে অভিযোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy