Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মনে রাখবে শুধু মানুষের কথা, বলতেন বিনয়

শুরু করেছিলেন কৃষক আন্দোলন দিয়ে। ধাপে ধাপে পৌঁছে গিয়েছিলেন সিপিএমের রাজ্য কমিটি, কেন্দ্রীয় কমিটিতে। দলের কর্মীদের বলতেন, “মানুষের কথা ছাড়া অন্য কিছু মনে ঠাঁই দেওয়া উচিত নয় আমাদের।” বেশ কয়েক দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকার পরে মৃত্যু হল মেমারির সেই সিপিএম নেতা বিনয় কোঙারের। রবিবার বিকেলে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় প্রবীণ এই নেতার।

কিছু দিন আগে পূর্বস্থলীতে দলের এক জনসভায় বৃন্দা কারাটের সঙ্গে বিনয় কোঙার। ফাইল চিত্র।

কিছু দিন আগে পূর্বস্থলীতে দলের এক জনসভায় বৃন্দা কারাটের সঙ্গে বিনয় কোঙার। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:১৬
Share: Save:

শুরু করেছিলেন কৃষক আন্দোলন দিয়ে। ধাপে ধাপে পৌঁছে গিয়েছিলেন সিপিএমের রাজ্য কমিটি, কেন্দ্রীয় কমিটিতে। দলের কর্মীদের বলতেন, “মানুষের কথা ছাড়া অন্য কিছু মনে ঠাঁই দেওয়া উচিত নয় আমাদের।” বেশ কয়েক দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকার পরে মৃত্যু হল মেমারির সেই সিপিএম নেতা বিনয় কোঙারের।

রবিবার বিকেলে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় প্রবীণ এই নেতার। তাঁর বড় ছেলে তথা সিপিএমের বর্ধমান জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুকান্ত কোঙার বলেন, “২০ অগস্ট মেমারির বাড়িতে বাবা পড়ে গিয়েছিলে। তাতে তাঁর কোমরের কাছে হাড় ভাঙে। অস্ত্রোপচার হয়েছিল। তবে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে আইসিইউ-তে রাখা হয়েছিল।” বিনয়বাবুর দেহ এ দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ওই হাসপাতালেই ছিল। সুকান্তবাবু বলেন, “তিনি চক্ষুদান করে গিয়েছেন। তাই কলকাতার চোখের হাসপাতাল থেকে চিকিৎসকেরা এসে চোখ নিয়ে গিয়েছেন।” তিনি আরও জানান, রবিবার রাতে প্রয়াত নেতার দেহ শায়িত থাকবে পিস হেভেনে। সোমবার দেহ নিয়ে যাওয়া হবে সিপিএমের রাজ্য কমিটি দফতরে। সেখান থেকে দেহ নিয়ে যাওয়া হবে কৃষকসভার রাজ্য দফতরে।

বিনয়বাবুর স্ত্রী মহারানি কোঙার মেমারির প্রাক্তন বিধায়ক। বর্তমানে তিনি দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যা। ছোট ছেলে অভিজিৎ কোঙার মেমারির প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধান। তিনিও সিপিএমের স্থানীয় নেতা। সব মিলিয়ে বিনয়বাবুর পরিবারের প্রায় সকলেই দলের সঙ্গে যুক্ত। পাঁচের দশকে বর্ধমান জেলায় আন্দোলন করেই রাজনৈতিক জীবন শুরু বিনয়বাবুর। দলের প্রয়াত কৃষকনেতা হরেকৃষ্ণ কোঙারের ভাই বিনয়বাবুকে এক সময়ে গ্রেফতারি এড়াতে পালিয়েও বেড়াতে হয়েছিল। দলের রাজ্য কমিটি, পরে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হয়েছিলেন তিনি।

বিনয়বাবু বরাবরই ছিলেন স্পষ্টবক্তা। কিন্তু নানা সময়ে তাঁর বিভিন্ন মন্তব্য বিতর্ক তৈরি করেছে। তাঁর নিজে সাধারণ জীবনযাপন করতেন। দলের কর্মীদেরও তিনি বরাবর সাধরণ জীবনযাপনের পরামর্শ দিতেন। অসুস্থতার কারণে বেশ কিছু দিন তিনি সক্রিয় রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে রেখেছিলেন।

সুকান্তবাবু জানান, সোমবার দুপুর ১টা নাগাদ বিনয়বাবু দেহ এসে পৌঁছবে তাঁদের মেমারির বাড়িতে। সেখানে গ্রামের মানুষজন তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন। সেখান থেকে বিকেল ৩টে নাগাদ প্রয়াত নেতার দেহ নিয়ে যাওয়া হবে সিপিএমের বর্ধমান জেলা দফতরে। সেখানে তাঁকে দলের তরফে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হবে। সুকান্তবাবু জানান, বিনয়বাবু বেশ কিছু দিন আগে দেহ দান করে গিয়েছেন। তাই সব শেষে তাঁর দেহ পৌঁছে দেওয়া হবে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE