Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

গজলডোবায় সাফারি, শিলান্যাস হতে পারে মুখ্যমন্ত্রীর সফরে

জল-জঙ্গল-বন্যপ্রাণ, অনেকটা দলের বীজমন্ত্র মা-মাটি মানুষের মতোই তাঁর প্রিয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘন ঘন উত্তরবঙ্গ সফরে তাই কদাচিৎ বাদ পড়েছে, ‘বন-সাফারি’। বন্যপ্রাণের উপর দলনেত্রীর এই অনাবিল আকর্ষণ উপলব্ধি করেই প্রস্তাবটা তাঁকে দিয়েছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব‘শিলিগুড়ির অদূরে একটা সাফারি পার্ক গড়লে কেমন হয়।’

রাহুল রায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৪ ০৪:০৮
Share: Save:

জল-জঙ্গল-বন্যপ্রাণ, অনেকটা দলের বীজমন্ত্র মা-মাটি মানুষের মতোই তাঁর প্রিয়।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘন ঘন উত্তরবঙ্গ সফরে তাই কদাচিৎ বাদ পড়েছে, ‘বন-সাফারি’। বন্যপ্রাণের উপর দলনেত্রীর এই অনাবিল আকর্ষণ উপলব্ধি করেই প্রস্তাবটা তাঁকে দিয়েছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব‘শিলিগুড়ির অদূরে একটা সাফারি পার্ক গড়লে কেমন হয়।’

ডুয়ার্সের বিস্তৃত জল-জঙ্গল জুড়ে ছড়িয়ে থাকা বন্যপ্রাণকে এক ছাতার নীচে হাজির করার এমন একটা চিন্তা ভাবনা বেশ কিছু দিন ধরেই ছিল বনকর্তাদেরও। গৌতমবাবুর আগ্রহ দেখে উৎসাহিত হয়ে এ বার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তদ্বির শুরু করেছিলেন তাঁরাও। সাড়াও মিলেছিল অচিরেই।

উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার শিলিগুড়ি থেকে মেরেকেটে ত্রিশ কিলোমিটার দূরত্বে, গজলডোবার কাছে প্রায় তিনশো একর জমিও পাওয়া গিয়েছিল মাস কয়েক আগে। তাই নিছক প্রস্তাব আকারে ফেলে না রেখে সেই সাফারি পার্কের শিলান্যাসও এ বার সেরে রাখতে চাইছেন বন কর্তারা।

আসন্ন পাহাড় ও উত্তরবঙ্গ সফরে মুখ্যমন্ত্রীকে দিয়ে সেই সাফারি পার্কেরই শিলান্যাসের তোড়জোড় শুরু করেছে বন ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর। মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সময় পেলে আগামী বুধ অথবা বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর ওই সাফারি পার্কের শিলান্যাস করার কথা। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন নির্দিষ্ট করে ওই অনুষ্ঠানের সময় সূচি জানাতে না পারলেও বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফরের মাঝেই ১৬ অথবা ১৭ তারিখ ওই সাফারি পার্কের শিলান্যাস করা হবে।” কেন্দ্রীয় বনমন্ত্রকের সেন্ট্রাল জু অথরিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, পার্কের ছাড়পত্র ইতিমধ্যেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে মধ্যপ্রদেশ, গুজরাত এমনকী পড়শি রাজ্য ওড়িশাতেও এমন সাফারি পার্ক থাকলেও এ রাজ্যে এমন পার্ক এই প্রথম। উত্তরবঙ্গের দক্ষিণ খয়েরবাড়িতে বছর কয়েক আগে বন দফতর একটি চিতাবাঘ সাফারি করেছিল। আয়তনে নিতান্তই ছোট সেই চিতাবাঘ-সাফারির আপাতত হতশ্রী দশা। গজলডোবার পার্কটি অবশ্য বেশ বড়সড়। প্রায় ২৯০ হেক্টর জমিতে সেই সাফারিতে খোলা ল্যান্ড রোভারে চড়ে পর্যটকরা দেখতে পাবেন হাতি-গন্ডার-হরিণ-সম্বর-বাইসন। এক পর্যটন কর্তা বলেন, “উত্তরবঙ্গের সামগ্রিক বন্য জীবনের একটা ছোট সংস্করণ হবে ওই সাফারি পার্ক।”

এক শীর্ষ বনকর্তা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছায় আফ্রিকান সাফারির ধাঁচেই গড়া হবে পার্কটি।” শাকাহারিদের পাশাপাশি যেখানে খোলা এনক্লোজারে থাকবে বাঘ-চিতাবাঘও। বনমন্ত্রী জানান, তাঁর নিজের দফতর ছাড়াও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর ও পর্যটন দফতরও হাতে হাত মিলিয়ে ওই সাফারি পার্ক গড়তে নেমেছে। মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পার্কের কাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সময় বেঁধে দিয়েছেন, পাঁচ বছর। যার জন্য বরাদ্দ হয়েছে প্রায় আড়াইশো কোটি টাকা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

gajoldoba mamata bandyopadhyay rahul roy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE