সাগর ঘোষ হত্যা মামলায় সরকারি আইনজীবী বদলের আবেদনের প্রেক্ষিতে নিহত সাগর ঘোষের স্ত্রী সরস্বতী ঘোষকে ডেকে পাঠালেন জেলাশাসক। আগামী ১০ তারিখ দিন ধার্য হয়েছে। জেলাশাসক পি মোহন গাঁধি বলেন, “কেন সরকারি আইনজীবী বদলের আবেদন করা হয়েছে, সেটা জানতেই সরস্বতীদেবীকে ডাকা হয়েছে।”
জেলা আদালতে গত ৯ ফেব্রুয়ারি তাঁর স্বামীর( সাগর ঘোষ) হত্যা মামলা শুরু হওয়ার দিন কয়েক পরেই জেলা শাসকের কাছে ওই আবেদন জানান নিহতের স্ত্রী। তাঁর অভিযোগ ছিল, “সরকারি আইনজীবী রণজিত গঙ্গোপাধ্যায় রাজনৈতিক মদতপুষ্ট। তিনি অভিযুক্তদের পক্ষ হয়ে কাজ করছেন। আমাদের সঙ্গে কোনও সহযোগিতা করছেন না। এতে আমরা নিরপেক্ষ বিচার পাব না। তাই মামলাটি থেকে সরকারি আইনজীবীকে বদল করা হোক।” যদিও তাঁর বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ মানেননি রণজিতবাবু। তিনি বলেন, “বিচার প্রক্রিয়াকে থামাতে চেয়ে তাঁর বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, গত ২০১৩-র পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে খুন হন পাড়ুইয়ের বাঁধ নবগ্রামের বাসিন্দা সাগর ঘোষ। ওই খুনের ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, জেলাপরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায় চৌধুরীর মতো তৃণমূল নেতার নাম। হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত ওই হত্যা মামলার দায়িত্ব পায় বিশেষ তদন্তকারী দল(সিট)। গত ১৬ জুলাইয়ে আদালতে চার্জশিট পেশ করে সিট। যদিও সেই চার্জশিটে অনুব্রত বা বিকাশ রায় চৌধুরীর নাম ছিল না। তবে তৃণমূলের সাত্তোর অঞ্চল কমিটির সম্পাদক শেখ মুস্তফা, তৃণমূলের কসবা অঞ্চাল সভাপতি শেখ ইউনুস, সহ মোট আট জনের নাম রয়েছে।
সিটের দেওয়া ওই চার্জশিটের ভিত্তিতে গত সিউড়ি জেলা আদালেত ৮ জানুয়ারি ওই মামলায় চার্জ গঠিত হয়েছে। সিউড়ির জেলা জজ গৌতম সেনগুপ্তের এজলাসে ৯ ফেব্রুযারি থেকে টানা ২৬ তারিখ পর্যন্ত সাক্ষ্য গ্রহন পর্বের জন্য ধার্য করেছিলেন জেলা জজ। সরকারি আইনজীবী জানিয়েছিলেন, নিহতের স্ত্রী সরস্বতীদেবী, পুত্র হৃদয় বা পুত্রবধূ শিবানী দেবী-সহ প্রথম তিন দিন সাক্ষীরা সমন নিয়েও আদালতে উপস্থিত না থাকায় বিচার প্রক্রিয়া শুরুই করা যায়নি। এজন্য তাঁদের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করে আদালত। কিন্তু সাক্ষ্য না দেওয়ার জন্য, এর পরই সরকারি আইনজীবীর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এবং অসহযোগিতায় অভিযোগ তুলে জেলাশাসকের কাছে আবেদন জানান সরস্বতীদেবী। মামলায় মোট ৫১ জনের সাক্ষ্য দানের কথা থাকলে সাকুল্য ১৩ জনের সাক্ষ্য নেওয়া গিয়েছে। এমনকী ১২ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যদানের জামিনযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেও সাক্ষীদের আদালতে উপস্থিত করানো যায়নি। মূল সাক্ষীদের সাক্ষ্য না হওয়ায় ফের আগামী মাসের ২৩-২৫ তারিখ সাক্ষ্য দানের দিন ধার্য করেছে আদালত। তার আগে জেলাশাসক কী পদক্ষেপ নেন সেটাই এখন দেখার। এ দিন সরকারি আইজীবী অবশ্য বলেন, “আমি নিরপেক্ষেভাবে আমার দায়িত্ব পালন করেছি। কী করিনি তা বিচারকের নির্দেশ ও মামলার সংশ্লিষ্ট নথি পত্র বলবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy