Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
জেলা অচলের হুমকি

জসিমের দেহের ময়না-তদন্ত নিয়ে ক্ষোভ বিজেপির

মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও পাঁড়ুইয়ের চৌমণ্ডলপুর গ্রামের বিজেপি কর্মী শেখ জসিমুদ্দিনের মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হল না সোমবারও! বিজেপির হুমকি, পুলিশ-প্রশাসন নিরপেক্ষ না হলে বীরভূম জেলা অচল করে দেওয়া হবে। চিকিত্‌সকের দেওয়া মৃত শংসাপত্র ছাড়া তাঁর মৃতদেহ কি ভাবে মর্গে রাখা হল? কেনই বা ময়নাতদন্ত সিউড়িতে করা হচ্ছে না, বর্ধমানে পাঠানো হচ্ছে?

সিউড়ি হাসপাতালের আহত একরামুলের সঙ্গে কথা বলছেন সুভাষ সরকার। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়

সিউড়ি হাসপাতালের আহত একরামুলের সঙ্গে কথা বলছেন সুভাষ সরকার। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়

ভাস্করজ্যোতি মজুমদার
সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:৩২
Share: Save:

মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও পাঁড়ুইয়ের চৌমণ্ডলপুর গ্রামের বিজেপি কর্মী শেখ জসিমুদ্দিনের মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হল না সোমবারও! বিজেপির হুমকি, পুলিশ-প্রশাসন নিরপেক্ষ না হলে বীরভূম জেলা অচল করে দেওয়া হবে।

চিকিত্‌সকের দেওয়া মৃত শংসাপত্র ছাড়া তাঁর মৃতদেহ কি ভাবে মর্গে রাখা হল? কেনই বা ময়নাতদন্ত সিউড়িতে করা হচ্ছে না, বর্ধমানে পাঠানো হচ্ছে? দিনভর সিউড়ি জেলা হাসপাতালের সামনে এসব প্রশ্ন নিয়েই অপেক্ষায় রইলেন নিহত জসিমউদ্দিনের বাবা একরামুল হক। সিউড়ি জেলা হাসপাতাল সুপার শোভন দে অবশ্য এসব নিয়ে একরামুল অথবা, বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বকেও সদুত্তর দিতে পারলেন না এ দিনও।

রবিবার সিরশিট্টায়, বিজেপি-তৃণমূলের সংঘর্ষে খুন হন জসিমুদ্দিন। তাঁর দেহ মেলে চৌমণ্ডলপুর গ্রামের ধাম জমি থেকে। দেহের পাশেই ছিলেন একরামুল। তাঁর অভিযোগ, পুলিশ তাঁকে মারধর করে। মেরে হাত ভেঙে দেয়। রবিবার রাতে সেই ভাঙা হাত নিয়ে সিউড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি হন একরামুল। বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের অভিযোগ, তাঁর ভাঙা হাতের অপারেশন না করে সিউড়ি জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে সোমবার ছুটি দিয়ে দিয়েছেন।

এ দিন পাঁড়ুই এর সিরশিট্টা ও চৌমণ্ডলপুর কাণ্ডে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের পাঁচ সদস্যের দল ওই এলাকা ঘুরে বিকেল সাড়ে তিনিটে নাগাদ সিউড়ি জেলা হাসপাতালে যান। ওই পাঁচ সদস্য হলেন, সুভাষ সরকার, প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়, তাপস চট্টপাধ্যায়(তিনজনেই দলের সহ-সভাপতি), রাজ্যের প্রাক্তন ডিআইজি রামকৃষ্ণ মহান্তি(রাজ্য কমিটির সদস্য) ও দলের রাজ্য সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি শাকিল আহমেদ। সঙ্গে ছিলেন জেলা সভাপতি দুধ কুমার মণ্ডল সহ জেলা নেতৃত্ব।

মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে একরামুল বলেন, “ছেলেটা আগের দিন থেকে হাসপাতালের মর্গে পড়ে আছে। আজও সকাল পেরিয়ে বিকেল হয়ে গেল। ছেলেটার ময়নাতদন্ত হল না!” ইতিমধ্যেই বিজেপির জেলা সভাপতির সঙ্গে হাসপাতালে এসে পড়েন পাঁচ সদস্যের দল।

সুভাষবাবু প্রথমে দেখা করেন, ১২ তারিখের ইমাদপুরের ঘটনার দিন গুলিতে আহত হরিশপুরের শেখ আনারুলের সঙ্গে। সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দেন তিনি। বাইরে বেরিয়ে সুভাষবাবু বলেন, “বিজেপি সমর্থকদের নানা ভাবে মিথ্যা মামালায় ফাঁসানো হচ্ছে। রবিবারের সিরশিট্টা গ্রামের ঘটনাতেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।” এ দিন দুধকুমার বলেন, “২৪ ঘন্টার মধ্যে যদি পুলিশ নিরপেক্ষ ব্যবস্থা না নেয় তাহলে, বীরভূম জেলা অচল করে দেব।”

কেন ময়নাতদন্ত হল না জসিমুদ্দিনের?

সিউড়ি সদর হাসপাতালের সুপার শোভন দে’র ব্যাখ্যা, “এখানে কোনও বিশেষজ্ঞ নেই। আর যাঁরা সাধারণত ময়নাতদন্ত করে থাকেন, তাঁরা কেউ করতে চাননি। তাই এখানে করা যাচ্ছে না।” বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব জানতে চান, তাঁরা লিখিত দিয়েছেন? সুপার কোনও উত্তর দিতে পারেননি। ‘ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়া মর্গে কি ভাবে রাখা হল জসিমউদ্দিনের দেহ’, সদুত্তর মেলেনি সে প্রশ্নেরও।

এ দিন হাসপাতাল চত্বর ছাড়ার আগে সুভাষবাবু বলেন, “পুরো বিষয়টি মানবাধিকার কমিশনে জানানো হবে। দলীয় কর্মী একরামুলের চিকিত্‌সায় গাফিলতি এবং তৃণমূলের হামলায় নিহত জসিমের ময়নাতদন্তর ব্যাপারে দেরির জন্য আমরা আদালতেরও দ্বারস্থ হবো।”

পুরো বিষয়টি মানবাধিকার কমিশনে জানানো হবে। আমাদের দলীয় কর্মী একরামুলের চিকিত্‌সায় গাফিলতি এবং তৃণমূলের হামলায় নিহত শেখ জসিমউদ্দিনের দেহ ময়না-তদন্তের ব্যাপারে দেরির জন্য দরকারে আদালতেরও দ্বারস্থ হবো।
সুভাষ সরকাররাজ্য সহ-সভাপতি, বিজেপি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE