নবান্নে সাংবাদিকদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করতে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করছে রাজ্য সরকার। নবান্নে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (রিজার্ভ ফোর্স) অশেষ বিশ্বাস শনিবার এ কথা জানান। তাঁর কথায়, “সরকার যা চাইছে তা প্রতিটি সাংবাদিককে মেনে চলার অভ্যেস করতে হবে। তাঁর বক্তব্য, পুলিশকে না বলে নবান্নের কোথাও যেতে পারবেন না সাংবাদিকরা।
নবান্নে কার সঙ্গে দেখা করতে যাবেন তা পুলিশকে জানিয়ে যথাযথ অনুমতি নিয়েই যেতে হবে সাংবাদিকদের। তা না করলে সরকারি বিধিনিষেধ ভাঙা হচ্ছে বলে ধরে নেওয়া হবে।”
রাজ্য সরকারের সদর কার্যালয়ে সাংবাদিকদের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করতে নবান্ন থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় গত জানুয়ারি মাসে। তাতে বলা হয়েছে, ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধির ১৮৮ ধারা এবং সরকারি গোপনীয়তা আইন অনুযায়ী সর্বনিম্ন ৬ মাস ও সর্বোচ্চ ১৪ বছরের জেল হতে পারে। এই ধারার উল্লেখ করে এ দিন অশেষবাবু ব্যাখ্যা দেন, “এখন কোনও মানুষকেই হঠাৎ গ্রেফতার করা যায় না। সাংবাদিকদেরও নয়। কোনও অভিযোগ এলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে পুলিশকে তথ্য-প্রমাণ জোগাড় করতে হয়। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দিষ্ট কিছু নির্দেশিকা রয়েছে।” ডেপুটি কমিশনারের সাফ কথা, “নবান্নে কোনও সাংবাদিক নিয়ম ভেঙে উপরে উঠলে পুলিশ তাঁকে নীচে প্রেস কর্নারে পাঠিয়ে দিয়ে ওই ধারা অনুযায়ী তদন্ত শুরু করবে। তদন্তে যদি প্রমাণিত হয় ওই সাংবাদিক আইন ভেঙেছেন, তবে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ প্রসঙ্গে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি এ দিন বলেন, “সাংবাদিকরা নবান্নের যে মন্ত্রী বা আমলার সঙ্গে দেখা করতে চাইবেন, তাঁর সাক্ষাতের অনুমতি নিতে হবে। সেই অনুমতি থাকলে কাউকে কোথাও আটকানো হবে না।” তিনি এ-ও জানান, গ্রেফতারি বা ১৮৮ ধারা মেনে ব্যবস্থা নেওয়ার কথার মধ্যে কোনও গুরুত্ব নেই। স্বরাষ্ট্র সচিবের বক্তব্য, “আমরা যেমন সাংবাদিক বৈঠক করার আগে সংবাদমাধ্যমকে আগাম জানিয়ে দিই, সাংবাদিকদেরও একই ভাবে সরকারি প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করতে গেলে আগাম অনুমতি নিতে হবে।” এরই সঙ্গে বাসুদেববাবুর মন্তব্য, “সাংবাদিকরা তো নিশ্চয়ই নবান্নে উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘুরে বেড়াতে চান না!”
নবান্নে সাংবাদিকদের গতিবিধির উপর নজর রাখতে শুক্রবার থেকেই অতিরিক্ত সক্রিয় হয়ে উঠেছে পুলিশ। এক পুলিশকর্মী সাংবাদিকদের গ্রেফতার করার হুমকিও দেন বলে অভিযোগ। এর প্রেক্ষিতেই ডেপুটি কমিশনার এ দিন সরকারি নিষেধাজ্ঞা কঠোর ভাবে কার্যকর করার কথা জানিয়ে দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy