Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

জয়েন্টের বোর্ড নিয়ে ব্রাত্যর বিলও ঠান্ডাঘরে

প্রথমে স্নাতক স্তরে কেন্দ্রীয় ভাবে অনলাইনে ভর্তি পদ্ধতির নির্বাসন। তার পরে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড নিয়ে বিল গেল সিলেক্ট কমিটিতে। পরপর ধাক্কা খেল পূর্বতন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর দু’টি সিদ্ধান্ত। জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডকে বিধিবদ্ধ (স্ট্যাটিউটরি) সংস্থা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বিধানসভায় আনা বিলটি পুনর্বিবেচনার জন্য সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানো হল মঙ্গলবার। আগামী ৮ জুলাইয়ের মধ্যে বিলটি বিচার-বিবেচনা করে রিপোর্ট দেবে কমিটি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০১৪ ০৩:৩৭
Share: Save:

প্রথমে স্নাতক স্তরে কেন্দ্রীয় ভাবে অনলাইনে ভর্তি পদ্ধতির নির্বাসন। তার পরে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড নিয়ে বিল গেল সিলেক্ট কমিটিতে। পরপর ধাক্কা খেল পূর্বতন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর দু’টি সিদ্ধান্ত।

জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডকে বিধিবদ্ধ (স্ট্যাটিউটরি) সংস্থা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বিধানসভায় আনা বিলটি পুনর্বিবেচনার জন্য সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানো হল মঙ্গলবার। আগামী ৮ জুলাইয়ের মধ্যে বিলটি বিচার-বিবেচনা করে রিপোর্ট দেবে কমিটি।

প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্যবাবুর সিদ্ধান্ত বাতিল করে বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় গত সোমবার জানিয়ে দেন, স্নাতকে কেন্দ্রীয় ভাবে অনলাইনে ছাত্র ভর্তি হবে না। জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডকে বিধিবদ্ধ সংস্থা করার সিদ্ধান্তও আগের শিক্ষামন্ত্রীরই নেওয়া। মঙ্গলবার সেই সংক্রান্ত বিলটিকে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব দিয়ে বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী তাঁর পূর্বসূরির আরও একটি সিদ্ধান্ত আপাতত ঠান্ডাঘরে পাঠালেন বলে মনে করছে শিক্ষামহলের একাংশ।

এ দিন বিধানসভার দ্বিতীয়ার্ধের কার্যসূচিতে ‘জয়েন্ট এন্ট্রান্স এগ্জামিনেশনস বিল, ২০১৪’ ওঠার কথা ছিল। কিন্তু প্রথমার্ধের শেষ দিকে সদস্যদের মধ্যে একটি বুলেটিন বিলি করে জানিয়ে দেওয়া হয়, বিলটি সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। পরে সভা শুরু হলে বিলটি পেশ করে পার্থবাবু জানান, নতুন কোনও বিল এলেই বিরোধীরা তা সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর দাবি তোলেন। তবে সেই দাবি যে সব সময় খুব সঙ্গত হয়, রাজ্য সরকার তা মনে করে না। কিন্তু জয়েন্ট এন্ট্রান্স বিলটি পড়ে তাঁর নিজেরই মনে হয়েছে, কয়েকটি বিষয়ে কিছু অতিরিক্ত ব্যাখ্যা প্রয়োজন। তাই বিলটি সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব দিচ্ছেন তিনি। ধ্বনিভোটে সেই প্রস্তাব পাশও হয়ে যায়।

বিলটির ব্যাপারে ১১টি সংশোধনী তোলার প্রস্তাব স্বীকার করে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিলেন স্পিকার। তার আগেই বিলটি পেশ করে তা পুনর্বিবেচনার জন্য সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব পাশ হয়ে যাওয়ায় সংশোধনীগুলি আনার সুযোগ হয়নি।

বিলটিতে ঠিক কী আছে?

পশ্চিমবঙ্গ জয়েন্ট এন্ট্রান্স এগ্জামিনেশনস বোর্ডকে বিধিবদ্ধ সংস্থার স্বীকৃতি দেওয়াই ওই বিলের মূল কথা। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ১৯৬২ সালের ২ মার্চ প্রশাসনিক বিজ্ঞপ্তি জারি করে ওই বোর্ড গড়া হয়েছিল। প্রথম দিকে রাজ্যের সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলিতে ভর্তির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ করত তারা। ’৭৪ সালের পর থেকে সরকারি মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষার দায়িত্বও দেওয়া হয় ওই বোর্ডকে। কিন্তু প্রায় এক দশক আগে ইঞ্জিনিয়ারিং, টেকনোলজি ও ম্যানেজমেন্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য বেসরকারি সংস্থাগুলিকে উৎসাহ দেওয়া শুরু হয়। নিয়ম করে দেওয়া হয়, বেসরকারি কলেজগুলিতে ভর্তির জন্যও পরীক্ষা নেবে বোর্ড।

গত ১২ বছর ধরে এই কারণেই বোর্ডের দায়িত্ব অনেক বেড়েছে বলে মনে করেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্যবাবু। জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড বর্তমানে উচ্চশিক্ষা দফতরেরই অংশ। স্বশাসনের অভাবে বোর্ড কোনও আইনি জটিলতায় পড়লে তা থেকে বেরোনোর জন্য দফতরের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হয়। তাই বোর্ডকে বিধিবদ্ধ সংস্থা করা জরুরি মনে করে এই বিলটি তৈরি করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE