প্রশ্নের মুখে শুভাপ্রসন্ন।
নতুন করে শুভাপ্রসন্নর কাছ থেকে টাকার হিসেব চেয়ে চিঠি পাঠাল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। অভিযোগ, নিজের চ্যানেল বিক্রির সময়ে এই চিত্রশিল্পী সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে যে চুক্তি করেছিলেন, তার বাইরেও নগদ আরও প্রায় দশ কোটি টাকা নিয়েছিলেন। শুভাপ্রসন্নকে পাঠানো চিঠিতে এই টাকার হিসেব চেয়েছে ইডি।
এত দিন মদন মিত্র-মুকুল রায়কে ঘিরেই আবর্তিত হচ্ছিল সারদা সংক্রান্ত বেশিরভাগ খবর। এ বার নতুন করে ভেসে উঠেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-ঘনিষ্ঠ এই চিত্রশিল্পীর নাম। সম্প্রতি আলিপুর সংশোধনাগারে গিয়ে সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনকে জেরা করে ইডি। সেখান থেকেই উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য। এবং সেই তথ্য শুভাপ্রসন্ন সম্পর্কেই। সেই জেরায় সুদীপ্ত জানান, দুটি স্টুডিও এবং কর্মচারীদের বেতন দেওয়ার জন্য তিনি চুক্তি ছাড়াও শুভাপ্রসন্নকে দশ কোটির বেশি টাকা দিয়েছেন। কিন্তু সেই টাকার কোনও হিসেব শুভাপ্রসন্নের সংস্থার ব্যালান্স শিটে পাওয়া যায়নি। ইডি সূত্রের খবর, শিল্পীর কাছ থেকে সেই টাকার হিসেব সম্পর্কে ব্যাখ্যার প্রয়োজন।
শুভাপ্রসন্ন এর আগে ইডিকে তাঁর সম্পত্তি সংক্রান্ত তথ্য জমা করেছিলেন। সেখানে ওই টাকার উল্লেখ নেই। সেই ধোঁয়াশা দূর করতেই শুভাপ্রসন্নর ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে ইডি। সূত্রের খবর, সোমবারেই এই চিঠি পাঠানো হয়েছে শিল্পীর ঠিকানায়। সাত দিনের মধ্যে তাঁকে সেই চিঠির জবাব দিতে বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে শুভাপ্রসন্নর সঙ্গে এ দিন যোগাযোগ করা হলেও তিনি মোবাইল ধরেননি। এসএমএস-এরও জবাব দেননি।
ইডি সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত রায়চকে, সল্টলেকে, মুম্বইয়ে তাঁর বিভিন্ন সম্পত্তি এবং আর্টস একর সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জমা করেছেন চিত্রশিল্পী। তথ্য দিয়েছেন ‘দেবকৃপা ব্যাপার লিমিটেড’ সম্পর্কেও। কিন্তু সুদীপ্তকে দীর্ঘক্ষণ জেরা করার পরে তদন্তকারীরা এখন মনে করছেন সেই তথ্য পর্যাপ্ত নয়। বেশ কিছু অসঙ্গতি রয়েছে সেই তথ্যে।
কোথায় অসঙ্গতি? ইডি সূত্রের খবর, সুদীপ্ত যে ওই চিত্রশিল্পীর সংস্থা কিনেছিলেন তা খোদ রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে জানিয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছিল, ১৪ কোটি টাকায় নিজের সংস্থা বিক্রি করেছিলেন শুভাপ্রসন্ন। পরে জেরার সময়ে সেই টাকার অঙ্কের কথা স্বীকার করেননি স্বয়ং চিত্রশিল্পী। এখানে রাজ্য সরকারের সঙ্গে তাঁর বয়ান মেলেনি। এর পরে ইডি তাঁর কাছে দেবকৃপার বিক্রি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য চায়। শিল্পীর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, একাধিক ক্ষেত্রে অসঙ্গতি রয়েছে। উদাহরণ দিয়ে এক তদন্তকারী জানান, শুভাপ্রসন্ন তাঁর বৈদ্যুতিন চ্যানেলের জন্য একটি বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকার সরঞ্জাম কিনেছিলেন। তদন্তকারীরা সেই সংস্থা এবং চ্যানেলের (দেবকৃপা-র অধীনস্থ) ব্যালান্স শিট পরীক্ষা করে দেখতে পান, সরঞ্জাম বাবদ কেনা-বেচার অঙ্ক দু’টি সংস্থায় দু’রকম দেখানো হয়েছে। এমন আরও বেশ কয়েকটি জায়গায় ধোঁয়াশা রয়েছে। এমনকী, শুভাপ্রসন্নর দেওয়া আর্টস একর সংক্রান্ত তথ্যও অসম্পূর্ণ বলে ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy