লোকসভা ভোটে নজিরবিহীন ভরাডুবির পরে কংগ্রেসে এখন রাহুল গাঁধীকে নিয়েও প্রশ্ন তোলা যাচ্ছে। কিন্তু সিপিএমে? জটায়ুর ভাষায় বললে কোনও প্রশ্ন নয়!
ভোটের ফলপ্রকাশের পর থেকেই সিপিএম-সহ বাম দলের অন্দরে বিপর্যয়ের দায় নিয়ে নেতৃত্ব বদলের দাবি উঠছে। দলের অন্দরে বসেই নেতৃত্ব বদলের দাবি প্রকাশ্যে আনার ‘অপরাধে’ এ বার সিপিএম থেকে বহিষ্কার করা হল এক তরুণ নেতাকে। পশ্চিমবঙ্গে সিপিএমের দলীয় ও নির্বাচনী ওয়েবসাইটের দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত শাখার সম্পাদক ছিলেন শুভনীল চৌধুরী। লোকসভার ফলপ্রকাশের পরেই কয়েক জন বামপন্থী আন্দোলনকারী ও দলীয় সমর্থকদের নিয়ে তিনি একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছিলেন, যেখানে হারের দায় স্বীকার করে রাজ্য নেতৃত্বের পদত্যাগ দাবি করা হয়েছিল। নতুন নেতৃত্বকে জায়গা করে দেওয়ার কথাও বলা হয়েছিল বাম আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার স্বার্থে। খবর পেয়ে সিপিএম নেতৃত্ব শুভনীলকে বলেছিলেন, ওই বিবৃতি থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিতে। শুভনীল রাজি হননি। পরিণতি বহিষ্কার!
এ বার লোকসভা ভোটে বেনজির বিপর্যয়ের পরে ফেসবুক-টুইটারের মতো সোস্যাল মিডিয়ায় সিপিএম-সহ বাম নেতাদের পদত্যাগের দাবি তুলে সরব হয়েছেন বাম নেতা-কর্মী-সমর্থকদেরই একাংশ। এটাও ঠিক, কখনও কখনও আক্রমণের মাত্রা শালীনতার সীমা অতিক্রম করছে। কিন্তু লাগাতার ভরাডুবির পরে কর্মী-সমর্থকদের আবেগের বিস্ফোরণ তো যে কোনও দলেই ঘটতে পারে? সিপিএম নেতৃত্বের বক্তব্য, কর্মী-সমর্থক বা শুভানুধ্যায়ীদের দাবির যৌক্তিকতা নিয়ে পাল্টা যুক্তি থাকলেও সে কথা কেউ অস্বীকার করছে না। দাবি তোলার জন্য দলের মধ্যেই নানা মঞ্চ রয়েছে। কিন্তু ভোটে হেরে গিয়েছেন বলে দলের কর্মীরাই যদি কমিউনিস্ট পার্টিতে শৃঙ্খলার বালাই না রাখেন, তা হলে ভবিষ্যতে দল চালানোই মুশকিল হয়ে পড়বে! তাই বাধ্য হয়েই কড়া সিদ্ধান্ত।