আইন আছে। তবে তা তো চাপা পড়ে থাকে। ব্যবহার হয় না। সেই আইনকে কার্যকর করতে কেন্দ্রের নির্দেশটার কথা শুনে শাইলকের ঘটনা মনে পড়ে গেল হঠাৎ। বিচারকের সেই বিধান: ‘মাংস কাটতে পারো, রক্ত যেন না পড়ে।’ এ তো খানিকটা সে রকমই। রাস্তায় দোকানে-দোকানে সিগারেট আছে। তা কেনাও যাবে। অথচ রাস্তায় দাঁড়িয়ে সে সিগারেট খাওয়া যাবে না!
বিশ্বজোড়া আন্দোলনের ফলে এখন কমবয়সীরা অনেকেই সচেতন। তরুণ প্রজন্মের প্রায় ৯০ শতাংশই তো দেখি সিগারেট খায় না বা পছন্দ করে না। আমাদের এই বয়সে তো তেমনটা ছিল না। আমাদের মধ্যে ৪০ শতাংশ সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছেটা চাপা দিয়ে রাখতে পারত না কিছুতেই। ৫০ শতাংশ হয়তো বা বাবা-মায়ের শাসনের ভয়ে খেত না। আমি অবশ্য বরাবরই ওই ৪০ শতাংশের দলে। কিছুতেই সিগারেট না খেয়ে থাকতে পারিনি। এখনও পারি না। লিখতে বসলেও সিগারেট লাগে।
অসুস্থ হয়েছি। সবাই নানা রকম ক্ষতি হয়ে যাওয়ার ভয় দেখিয়েছে। তুমুল কাশির চোটে কিছুদিন বন্ধ রেখেছি হয়তো। কিন্তু সুস্থ হতেই আবার যে-কে-সেই। আমার মেয়েরা অবশ্য সিগারেট খাওয়া মোটে পছন্দ করে না, গন্ধটাই সহ্য করতে পারে না। ওরা ঘরে থাকলে তাই খাই না। তার মানে সিগারেট না খেয়ে থাকতে পারি না, এমনটা নয়। সেই আমিই আবার বিদেশ যাওয়ার সময়ে আগে প্লেনে স্মোকিং জোনে সিট চেয়ে নিতাম। এখন স্মোকিং জোনের ব্যবস্থাটাই বদলেছে। ফলে সিগারেট খেতে চাইলে ট্রানজিটে কিংবা প্লেনে ওঠার আগে বিমানবন্দরের কর্মীরা স্মোকিং রুম দেখিয়ে দেন। তা সে ঘর তো প্রায় প্লেন থেকে সিকি মাইল দূরে। ঘরের দরজা খুললেই কী বিকট গন্ধ। আমিই ভিতরে ঢুকতে না পেরে সিগারেট খাওয়া থেকেই বিরত থাকি। গন্তব্যে পৌঁছে হয়তো প্লেন থেকে নেমেই হাতটা সটান চলে যায় পকেটে। কিন্তু তার মানে ২২-২৩ ঘণ্টা তো দিব্যি না খেয়ে থাকতে পারি। মহাকাশে যেতে হলে হয়তো বা ২-৩ মাসও কাটিয়ে ফেলতে পারতাম।