এতেই সন্তুষ্ট না থেকে এ বার রাজ্যে কংগ্রেসের পুনরুত্থানে নামতে চাইছেন প্রদেশ সভাপতি। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে অধীর আজ বলেন, “প্রদেশ সভাপতির দায়িত্ব নিয়েই সংগঠন ভেঙে দিতে পারতাম। কিন্তু সময় ছিল না। তাই পুরনো কমিটিই বহাল রেখেছিলাম। এ বার প্রদেশ ও জেলা কমিটি ভেঙে দেওয়ার ব্যাপারে শীঘ্রই সভানেত্রীর সঙ্গে কথা বলব।”
নতুন কমিটি কেমন হবে? অধীরবাবু বলেন, “এ নিয়ে দলের মধ্যে কথা বলছি। ভাবনা চিন্তা চলছে।” অধীর জানান, যোগ্যতা ও দক্ষতার নিরিখেই সংগঠন গড়তে চান তিনি। কে কার লোক, তা বিচার করা হবে না। তাঁর কথায়, “কংগ্রেসে কর্মীর অভাব নেই। কিন্তু কর্মীদের থেকে নেতারা বিচ্ছিন্ন। আর তাই কংগ্রেসও মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।”
অধীর জানান, নিজেকে দিয়েই তিনি শুরু করেছেন। প্রদেশ কংগ্রেস দফতরের বাইরে তাঁর ফোন নম্বর ও ই-মেল লিখে ঝুলিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। জেলায় জেলায় নেতা-কর্মীদেরও তা জানিয়ে দেওয়া হবে। রাত-বিরেতে যখনই প্রয়োজন হবে, কর্মীরা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন। অধীরের কথায়, কর্মীদের সঙ্গে নেতার এই আস্থার সম্পর্ক তৈরি হলে কর্মীরাই কংগ্রেসকে মানুষের কাছে নিয়ে যাবেন।
প্রদেশ কংগ্রেসের কিছু পুরনো নেতা অবশ্য বলছেন, অধীরের কথা শুনতে ভাল লাগলেও তিনি হয়তো জানেন না, তাঁর চ্যালেঞ্জ কত কঠিন। জেলায় জেলায় তৃণমূলের যা দাপট, তাতে সংগঠন নতুন করে দাঁড় করানো খুব শক্ত। প্রদেশ কংগ্রেসে এত দিন যাঁদের মৌরসিপাট্টা ছিল, তাঁদের ক্ষোভের মোকাবিলাও করতে হবে তাঁকে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে অধীর বলেন, “মুর্শিদাবাদে সংগঠন তৈরি করাটাও এক সময় সহজ কাজ ছিল না। কিন্তু মনে ইচ্ছাটা ছিল। এ বার দায়িত্ব যখন নিয়েছি, লড়াই ছাড়া এক ইঞ্চি জমিও ছাড়ব না।” কিন্তু মুর্শিদাবাদ আর পশ্চিমবঙ্গ এক নয়। তা ছাড়া কংগ্রেসের মধ্যে এমন অভিযোগও রয়েছে, অধীর মুর্শিদাবাদের বাইরে যান না। এ ব্যাপারে প্রদেশ সভাপতির জবাব, “মুর্শিদাবাদ রাজ্যের বাইরে নাকি! জেলার বাইরে এত দিন দায়িত্ব পাইনি। তবু অন্য জেলার নেতারা ডাকলেই গিয়েছি।” অধীরের কথায়, লোকসভা ভোটের পর এই অপবাদ আর কেউ দিতে পারবেন না। কারণ, বহরমপুরে মাত্র ৯ দিন প্রচার করেছেন তিনি। বাকি দিনগুলি রাজ্যের অন্যত্র প্রচার করেছেন।
তৃণমূলের মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন অবশ্য বলছেন, ক্ষয় পেতে পেতে রাজ্যে কংগ্রেসের যে হাল হয়েছে, তাতে পুনরুজ্জীবন অসম্ভব। প্রদেশ কংগ্রেস বরং অন্য কোনও দলে মিশে যাবার কথা ভাবতে পারে।