সারদা-কাণ্ডে তৃণমূল সরকারের দায়ের করা মামলায় সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করছেন কপিল সিব্বল। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল-বিরোধী ক্ষোভের পরোয়া না-করে এমন সিদ্ধান্তের জন্য দলের শীর্ষ নেতৃত্বের উপরে ক্ষুব্ধ প্রদেশ কংগ্রেস। কিন্তু প্রদেশের অন্দরের বেহাল দশাও ক্রমশ প্রকট হচ্ছে! রাজ্যে যে ভাবে কংগ্রেস চলছে, তাতে আখেরে বিজেপির বাড়বাড়ন্তের সুবিধা করে দেওয়া হচ্ছে বলে হাইকম্যান্ডের দ্বারস্থ হচ্ছেন একের পর এক নেতা।
প্রদেশ কংগ্রেস পরিচালনার পদ্ধতি নিয়ে সাম্প্রতিকতম বিদ্রোহটি করেছেন মালদহের সাংসদ এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আবু হাসেম খান চৌধুরী (ডালু)। গত ২৪ জানুয়ারি সরাসরি সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর কাছে গিয়ে চিঠি দিয়ে এসেছেন তিনি। যেখানে ডালুবাবু লিখেছেন, ‘রাজ্যে তৃণমূলের জনপ্রিয়তা প্রতিদিন কমছে। মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে। তার ফায়দা নিতে পারছে না কংগ্রেস। নিজেদের দোষে কংগ্রেস যে সুযোগ নষ্ট করছে, তার ফায়দা তুলছে বিজেপি। বাংলার মাটিতে সাম্প্রদায়িক শক্তির এমন বাড়বাড়ন্ত বিপজ্জনক’। প্রদেশ স্তরের যে সব বর্ষীয়ান নেতার সঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর সম্পর্কে ফাটল ধরেছে, ডালুবাবু তাঁদের এক জন। প্রয়াত বরকত গনি খানের খাস তালুক মালদহে তাঁরই পরিবারের লোকজনকে গুরুত্ব না-দিয়ে অধীর নিজের মতো দল চালানোর চেষ্টা করছেন বলে ডালুবাবুর অভিযোগ। মালদহে সম্প্রতি তাঁর সময়-সুযোগকে আমল না দিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির কর্মিসভা আয়োজনের পরেই ক্ষুব্ধ ডালুবাবু দলের অন্দরে বলেছিলেন, ‘ম্যাডাম’-এর কাছে গিয়ে তিনি এ বার হেস্তনেস্ত করে ছাড়বেন! তাঁর চিঠি সেই ক্ষোভেরই পরিণাম বলে কংগ্রেস সূত্রের ব্যাখ্যা।
কিন্তু শুধু প্রদেশ সভাপতি বদলালেই কি কংগ্রেসের সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে? আনন্দবাজারের কাছে ডালুবাবুর ব্যাখ্যা, “আমি তো তেমন কথা বলিনি! আমি হাইকম্যান্ডকে বলেছি, এখন রাজ্যে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে কংগ্রেসকে চাঙ্গা হতেই হবে। তার জন্য যৌথ ভাবে কাজ করতে হবে। সব বর্ষীয়ান নেতাকে সঙ্গে নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।” ডালুবাবুর দাবি, অমুকের বদলে তমুককে সভাপতি করা হোক, এমন কোনও দাবি নিয়ে তিনি ১০ জনপথে যাননি। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁর মতামত চেয়েছিলেন বলেই তিনি তা দিয়েছেন। বিজেপির উত্থান যে দলের জন্য দীর্ঘমেয়াদি বিপদ ডেকে আনতে পারে, সেই ব্যাপারেও অবহিত করেছেন হাইকম্যান্ডকে।