রাজ্যে বিজেপি-র উত্থানে অশনি সঙ্কেত তারা দেখছিলই। তৃণমূলের পাশাপাশি বিজেপি-র বিপদের মোকাবিলায় এ বার স্রেফ দলীয় লড়াই থেকে বেরিয়ে ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক মঞ্চ গড়ে এগোনোর ডাক দিল সিপিএম। লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের পরে কোণঠাসা সিপিএমের পক্ষে এখন একক শক্তিতে তেমন জোরালো প্রতিরোধ গড়ে তোলা কঠিন বুঝেই এমন মঞ্চ গড়ার কৌশল বলে দলেরই একটি সূত্রের ব্যাখ্যা।
বিরোধী শিবিরে থাকাকালীন রাজ্যে তৃণমূল যখন মাত্র এক সাংসদ ও ৩০ জন বিধায়কের দল, তখন শাসক বামেদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের স্বার্থে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিঙ্গুরে ‘কৃষিজমি, জীবন ও জীবিকা বাঁচাও কমিটি’ এবং নন্দীগ্রামে ‘ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি’তে ছোট-মাঝারি নানা দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন। ওই কমিটিই ছিল আন্দোলনের যৌথ মঞ্চ। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে সেই দলগুলির কেউই অবশ্য এখন আর তাদের সঙ্গে নেই। সিপিএম এমনিতেই বামফ্রন্ট চালিয়ে আসছে বহু দিন। কিন্তু এখন রাজ্যে দুই সাংসদ ও ৩৭ জন বিধায়কদের দল হিসাবে তারা শুধু বাম শরিকে সীমাবদ্ধ না থেকে আন্দোলনের জন্য বৃহত্তর মঞ্চ গড়তে চাইছে। যে উদ্যোগের সঙ্গে মমতার সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম কৌশলের মিল দেখছেন কেউ কেউ।
দলের রাজ্য কমিটির বৈঠকে শনিবার সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু যে রিপোর্ট পেশ করেছেন, সেখানেই বিজেপি-র বিপদকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। যাকে তাঁদের শক্তির ‘স্বীকৃতি’ হিসাবেই দেখছেন এ রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্ব! সন্ত্রাস-কবলিত এলাকায় দ্রুত পৌঁছে গিয়ে বিজেপি যে ভাবে মানুষের মন পাওয়ার চেষ্টা করছে, তাকে বিপদের সঙ্কেত হিসাবে দেখেই নেতা-কর্মীদের স্থানীয় স্তরে সক্রিয় হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বিমানবাবুর রিপোর্টে। এই কাজের জন্য এলাকায় এলাকায় উপযুক্ত নেতা-কর্মীদের চিহ্নিত করতেও বলা হয়েছে।