এ দিন বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ছাড়ার কথা ছিল এয়ার ইন্ডিয়ার ওই উড়ানটির। তাতেই দিল্লি যাওয়ার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। সকালে এয়ার ইন্ডিয়ার তরফে যাত্রীদের বার্তা পাঠানো হয়, উড়ানটি রাত সওয়া আটটায় দিল্লি রওনা দেবে। আর তাতেই বেজায় চটে যান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন উড়ান দেরির পিছনে রাজনৈতিক চক্রান্তই দেখতে পেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
ঘনিষ্ঠদের কাছে মমতার বক্তব্য, সাত দিন আগে টিকিট কাটা হয়েছে। তিনি যে এই উড়ানে দিল্লি যাচ্ছেন তা এয়ার ইন্ডিয়া জানে। আর সেই কারণে, তাঁকে হেনস্থা করার জন্যই উড়ানটির সময় বদলে ফেলা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, তাঁকে অপদস্থ করার জন্য কেন্দ্র সরকারের এ এক রাজনৈতিক চাল! ক্ষিপ্ত মুখ্যমন্ত্রী বিমান মন্ত্রকে নালিশ জানানোর কথাও ভেবেছেন।
এ দিন বিকেলে কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছেও তিনি বলেন, “কী আর বলব? ওরা (এয়ার ইন্ডিয়া) তো জানে! অনেক আগেই টিকিট বুক করেছিলাম। দুপুরে শুনলাম বাতিল করে দিয়েছে। কী করা যাবে?” তবে এয়ার ইন্ডিয়ার দাবি, মুখ্যমন্ত্রী তো বটেই, যদি অন্য কোনও যাত্রীও তাড়া আছে বলে জানাতেন, তা হলে তারাই তাঁকে বিকেলে অন্য সংস্থার উড়ানে দিল্লি পাঠানোর ব্যবস্থা করে দিত।
এ দিন বিকেল সাড়ে পাঁচটায় এআই ৭০১ ড্রিমলাইনার উড়ানে মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর সঙ্গীদের যাওয়ার কথা ছিল। এয়ার ইন্ডিয়া সূত্রের খবর, সকালেই বোঝা যায় যে ড্রিমলাইনারের পাইলটের অভাব রয়েছে।
তখনই ঠিক হয়, এআই ৭০১ উড়ানে কলকাতা থেকে দিল্লি যাওয়ার জন্য যে যাত্রীরা অপেক্ষা করছিলেন তাঁদের দিল্লি উড়িয়ে আনা হবে রাতের এআই ০২০ উড়ানে। সেটি কলকাতা ছাড়বে সওয়া আটটায়। এ দিন সকালেই যাত্রীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়ে উড়ানের সময়সূচির পরিবর্তনের খবর জানিয়ে দেওয়া হয় বিমান সংস্থার তরফ থেকে।
পাইলটের অভাব হল কেন?
সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ) দেখতে পায় যে এয়ার ইন্ডিয়া এবং অন্য একটি বিমানসংস্থার পাইলটদের মধ্যে অনেকেরই লাইসেন্স নবীকরণ করানো নেই। ডিজিসিএ থেকে কড়া নির্দেশ আসায় তড়িঘড়ি লাইসেন্স নবীকরণের জন্য পাইলটদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি বিমানসেবিকাদেরও প্রশিক্ষণ শিবির চলছে। সংস্থার এক কর্তার কথায়, “শীতের শুরুতে কুয়াশা নিয়ে বড় ধরনের সমস্যা তৈরি হওয়ার আগে আমরা পাইলট ও বিমানসেবিকাদের নিয়ে প্রশিক্ষণের কাজটা সেরে রাখতে চাইছি। এর ফলেই ইদানীং মাঝেমধ্যে বিমান ছাড়তে দেরি হয়ে যাচ্ছে।” সংস্থা সূত্রে জানানো হয়েছে, আগামী আরও পাঁচ দিন এমন সমস্যার মুখোমুখি হতে পারেন যাত্রীরা।