একের পর এক ঘটনার ধাক্কায় শাসক দলের হাল বেহাল। নেতৃত্ব দিশাহীন। দলের ভিতরের এই অস্থিরতার ছায়াই যেন এ বার এসে পড়ল রাজ্য মন্ত্রিসভায়। গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী এবং তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠক এড়িয়ে গেলেন। এই নিয়ে পরপর তিন বার! আবার আর এক বর্ষীয়ান মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের দফতরের কাজে জুড়ে দেওয়া হল প্রতিমন্ত্রী বেচারাম মান্নাকে। যা নিয়ে মন্ত্রিসভার বহু সদস্যই বিস্মিত! ঘনিষ্ঠ মহলে এক মন্ত্রীর ক্ষোভ, “এ তো যেমন খুশি চলো প্রতিযোগিতা চলছে! কোথায় গিয়ে এর শেষ হবে, কে জানে!”
নবান্নে মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে সুব্রতবাবুর উপস্থিতিতেই মুখ্যমন্ত্রী বাড়তি দায়িত্ব দিয়েছেন বেচারামকে। মুখের উপরে সুব্রতবাবু কোনও আপত্তি করেননি ঠিকই। কিন্তু সুব্রতবাবুর পঞ্চায়েত দফতরের আধিকারিকদের একাংশ বলছেন, একটি প্রকল্পের কাজের জন্য অফিসার খুঁজছিলেন মন্ত্রী। অথচ চাপিয়ে দেওয়া হল এক প্রতিমন্ত্রীকে! যার রাজনৈতিক তাৎপর্য আলাদা। মুখ্যমন্ত্রীর এ দিনের সিদ্ধান্তের পরে দলের অন্দরে স্বভাবতই জল্পনা শুরু হয়েছে, সারদা-কাণ্ডের পর থেকে বেশ কিছু ঘটনায় সুব্রতবাবুর উপরে বিশেষ প্রসন্ন নন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা হলে কি প্রতিমন্ত্রী বেচারামকে জুড়ে দিয়ে সুব্রতবাবুর ডানা ছাঁটার ইঙ্গিত দিলেন মুখ্যমন্ত্রী? যদিও রাত পর্যন্ত সরকারি স্তরে আনুষ্ঠানিক ভাবে এই বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্তের কথাই জানানো হয়নি!
যে বৈঠকে সুব্রতবাবুকে চাপে ফেলার এমন চেষ্টা হয়েছে, সেখানে আবার গরহাজির ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থবাবু। যাদবপুর-কাণ্ডের পর থেকে এই নিয়ে তিনটি বৈঠক এড়িয়ে গেলেন শাসক দলের মহাসচিব। দলের একাংশের বক্তব্য, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা চলাকালীন মুখ্যমন্ত্রীর কিছু মন্তব্যে ‘মর্মাহত’ শিক্ষমন্ত্রী মন্ত্রিসভার বৈঠক এড়িয়ে চলছেন। প্রকাশ্যে পার্থবাবু অবশ্য এই নিয়ে মুখ খোলেননি। বরং তাঁর বক্তব্য, দলের কাজেই তিনি ব্যস্ত ছিলেন। কারণ যা-ই হোক, পার্থবাবু-সুব্রতবাবুর মতো বর্ষীয়ান মন্ত্রীদের নিয়ে টানাপড়েন দলের সার্বিক ডামাডোলকেই আরও প্রকট করে দিচ্ছে বলে তৃণমূল সূত্রের ব্যাখ্যা।