কর্মসংস্কৃতি শিকেয় তুলে কাজের সময়ে মিটিং-মিছিল করার সুদীর্ঘ বঙ্গীয় ট্র্যাডিশনের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন, তাঁর আমলে সপ্তাহের মাঝখানে সেই কাজের সময়েই মঞ্চ সাজিয়ে রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী পালন করল স্কুলশিক্ষা দফতরের কর্মীদের সাংস্কৃতিক সংস্থা ‘বলাকা’। এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতার পদাঙ্ক অনুসরণ করেই তাঁদের এই মনীষী-স্মরণ বলে জানিয়ে দিয়েছেন সংস্থার সভাপতি ভবেশ পড়ুূয়া!
বুধবার বেলা ৩টে। বিকাশ ভবনের ছ’তলার হলঘরে যখন ওই অনুষ্ঠান শুরু হল, তখন সর্বশিক্ষা মিশন, স্কুলশিক্ষা কমিশনারের বিভাগ, সচিবের বিভিন্ন ঘর, এমনকী উচ্চশিক্ষা দফতরের বিভিন্ন বিভাগ প্রায় খালি। হাতে গোনা কয়েক জন ছিলেন নিজেদের টেবিলে। যদিও ভবেশবাবুর দাবি, অনেকেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেননি। কারণ তাঁরা চান না, কাজের ক্ষতি হোক।
বাম জমানায় কর্মসংস্কৃতির বেহাল দশা নিয়ে বারবার সরব হয়েছিল বিরোধী শিবির-সহ বিভিন্ন মহল। ‘পরিবর্তনের সরকার’-এর কান্ডারি মমতা বারবার সরকারি দফতরে কর্মসংস্কৃতি ফিরিয়ে আনার কথা বলেছেন। কাজের সময়ে মিটিং-মিছিল বন্ধ করতেও উদ্যোগী হয়েছেন তিনি। এমনকী বন্ধের দিনে অফিসে না-এলে রীতিমতো শাস্তির নিদানও দিয়েছে তৃণমূল সরকার। প্রশ্ন উঠেছে, কাজের সময়ে সভা-সমাবেশ করা যদি নিষিদ্ধ হয়, তা হলে কাজ ফেলে গানবাজনাই বা চলে কী ভাবে?