পুলিশের উদ্যোগে শান্তি মিছিল হল। কিন্তু, তাতে ডাকা হল না বামনগাছির নিহত প্রতিবাদী ছাত্র সৌরভ চৌধুরীর পরিবারকেই! সৌরভ খুনের পরে এলাকার বাসিন্দারা গড়ে তুলেছিলেন প্রতিবাদী মঞ্চ। সেই মঞ্চের কাউকেও রবিবার বামনগাছির মিছিলে দেখা যায়নি। পুলিশের তরফে তাঁদের ডাকা হয়নি বলে দাবি সৌরভের দাদা সন্দীপ এবং প্রতিবাদী মঞ্চের সদস্যদের।
গত ৫ জুলাই রাতে বামনগাছির বাসিন্দা, কলেজ ছাত্র সৌরভকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ ওঠে শ্যামল কর্মকার-সহ এলাকার কিছু দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। সৌরভের দেহ ফেলে দেওয়া হয় রেললাইনে। বেশ কয়েকটি ট্রেন চলে যায় দেহের উপর দিয়ে। শ্যামলদের দৌরাত্ম্যের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার মাসুল গুনতে হয়েছে সৌরভকে, তদন্তে উঠে এসেছে এই তথ্য। শ্যামল-সহ ইতিমধ্যেই ধরা পড়েছে ১২ জন। কিন্তু, স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, শাসকদলের যে সব নেতার ছত্রচ্ছায়ায় দুষ্কৃতীদের বাড়বাড়ন্ত, তাঁদের টিকিটিও ছুঁতে পারছে না পুলিশ। সমস্যার গভীরে গিয়ে ব্যবস্থা না নিলে এ ধরনের ঘটনা চলতেই থাকবে।
বাসিন্দাদের আশঙ্কা যে মিথ্যে নয়, তার প্রমাণ মিলেছে সৌরভ খুনের দিন দ’শেকের মধ্যেই। সৌরভেরই বন্ধু শ্রীকান্ত ভদ্রকে মারধর করে দুষ্কৃতীরা। তিনিও এলাকায় মদের আসর বসানোর প্রতিবাদ করাতেই ওই কাণ্ড বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত আমজাদ আলি মণ্ডল-সহ ধরা পড়ে দু’জন। আমজাদ আবার বারাসত ১ পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ তথা তৃণমূল নেতা হানিফ মণ্ডলের ভাগ্নে। এ দিন মিছিলে সৌরভের পরিবারের কেউ না থাকলেও হেঁটেছেন হানিফ। তাঁর বিরুদ্ধে এলাকায় একাধিক অসামাজিক কাজকর্মের অভিযোগ আছে। একটি খুনের মামলাতেও জড়িয়েছিল নাম। এলাকাবাসীর দাবি, হানিফের নাম করেই এলাকায় দাদাগিরি করে বেড়াত আমজাদ। হানিফের অবশ্য দাবি, আমজাদের সঙ্গে তাঁর বা তাঁর দলের কোনও সম্পর্ক নেই। শ্যামলকে মদত দেওয়ার ঘটনায় জড়িয়েছিল বামনগাছির আর এক তৃণমূল নেতা তুষার মজুমদার ওরফে বিশুর নাম। সৌরভ খুনের প্রতিবাদে তৃণমূলের মিছিলে এর আগে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। তবে বিতর্ক দানা বাঁধায় তৃণমূলের প্রতিবাদ সভায় ছিলেন না তিনি। এ দিনের শান্তি মিছিলেও দেখা যায়নি তুষারবাবুকে।